ব্রিটেনের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে। ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বরের যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো জয় পান টিউলিপ সিদ্দিক। হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসন থেকে লেবার পার্টি থেকে ২৮ হাজার ৮০ ভোট পেয়ে তিনি জয়ী হন। লন্ডনের এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আসনে টিউলিপের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির জনি লাক পান ১৩ হাজার ৮৯২ ভোট। ২০১৫ সালে ২৩ হাজার ৯৭৭ ভোট পেয়ে হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন থেকে লেবার পার্টির হয়ে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন টিউলিপ। এরপর ৩৪ হাজার ৪৬৪ ভোট পেয়ে ২০১৭ সালের নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হন তিনি। ইভিনিং স্ট্যান্ডার্ডের ২০১৯ সালের প্রভাবশালী রাজনীতিবিদের তালিকায় টিউলিপ সিদ্দিক স্থান পেয়েছেন ওয়েস্টমিনস্টার ক্যাটাগরিতে। তিনি ছাড়াও এ তালিকায় স্থান পান ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, ডাচি অফ ল্যানকাস্টারের চ্যান্সেলর মাইকেল গভ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক ও শিক্ষামন্ত্রী গেভিন উইলিয়ামসনের মতো রাজনীতিক। টিউলিপকে নিয়ে সেখানে লেখা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে’র ব্রেক্সিট চুক্তির বিপক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য সন্তান জন্মদানের অস্ত্রোপচার পিছিয়ে বিশ্বব্যাপী সংবাদ শিরোনাম হয়েছিলেন হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্নের এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। তখন পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে সাধারণত কোনো এমপির সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় আসন্ন হলে বা সদ্যোজাত সন্তানের কারণে বা অসুস্থতার কারণে কোনো ভোটে অংশ নিতে না পারলে বিরোধী পক্ষেরও একজন সদস্য ভোটদান থেকে বিরত থাকতেন, যাকে ‘পেয়ার’ বলা হতো। ব্রেক্সিট ভোট দিতে সন্তানের জন্ম পেছান টিউলিপ। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান ব্রান্ডন লুইস ওই প্রথা লঙ্ঘন করে ভোট দিয়েছিলেন। লুইস পরে এজন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘দুর্ঘটনাবশত’ ভোট দেন তিনি। অতীতের এই ঘটনার কারণে ওই ব্যবস্থায় তার আর আস্থা নেই জানিয়ে সশরীরে পার্লামেন্টে গিয়ে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন টিউলিপ। তার এই সাহসী সিদ্ধান্তের কারণে সন্তানপ্রত্যাশী ও নবজাতকদের বাবা-মার জন্য ঐতিহাসিক ‘প্রক্সি ভোটিং’ পদ্ধতি চালু করতে বাধ্য হয় ব্রিটিশ সরকার। এ ছাড়া ২০১৫ সালের মে মাসে হাউস অব কমন্সে প্রথম ভাষণেই নজর কাড়েন টিউলিপ সিদ্দিক।