রবিবার, ২৮ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

মোটরসাইকেল বিলাসী নয়, অত্যাবশ্যক

নূরুল আবসার রাসেল, চেয়ারম্যান, রাসেল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড

রাশেদ হোসাইন

মোটরসাইকেল বিলাসী নয়, অত্যাবশ্যক

রাসেল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান নূরুল আবসার রাসেল বলেছেন, আমাদের যাত্রা হয়েছে ২০০৩-০৪ সালের দিকে। আমরা প্রথম শুরু করি কিংটন মোটরসাইকেল দিয়ে। এরপর ২০০৭ সালে লিফান, এফওয়াইএম ও লঞ্চিংয়ের সঙ্গে কাজ শুরু করি। তখন থেকে ২০১৪-১৫ সাল পর্যন্ত সিকিডি মোটরসাইকেলের ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে ছিলাম। এরপর আমাদের ডাইভারসিটি শুরু হয়। তখন আমাদের বাজার ছিল ঢাকার বাইরে। ঢাকার বাইরে দৈনিক ব্যবহারের জন্য যে ধরনের মোটরসাইকেল প্রয়োজন ছিল সে ধরনের মোটরসাইকেল আমরা তৈরি করেছি। বর্তমানে আমরা স্পেশালিস্ট ক্যাটাগরির ক্ষেত্রে ফোকাস করছি। ২০১৫ সালে আমাদের বেস্ট সেলিং মোটরসাইকেল কেপিআর লঞ্চ করি যেটা ছিল স্পোর্টস ক্যাটাগরির বাইক। এরপর আমরা চিন্তা করেছি প্রতিটি সেগমেন্টের মোটরসাইকেল নিয়ে কাজ করব।

শুরু থেকে এখন পর্যন্ত পরিবর্তন নিয়মিত উন্নয়নের একটা অংশ। আগে মানুষ ফুয়েল কনজামশন, প্রোডাক্টের কোয়ালিটি ও প্রাইস কত কম দেখত। ২০২৩ সালে এসে দেখা যায় প্রাইসের সঙ্গে মানুষ প্রোডাক্টের কোয়ালিটি, টেকনোলজি আপডেট দেখে বাইক কেনে। ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড জিনিসপত্র মানুষ খোঁজে। গত বছর আমরা সেভাবে ভালো ব্যবসা করতে পারিনি। এর অন্যতম কারণ ফুয়েল প্রাইসটা বেড়ে গিয়েছিল। অন্য কারণ হলো ডলার ক্রাইসিস এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব। এ সময় ডলারের দাম ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়েছে, যার কারণে আমাদের ম্যাটেরিয়াল কস্টের দাম বেড়ে গেছে। এসব কারণে গত বছর আমরা সারভাইব করে গেছি। বলব না যে ব্যবসা ভালো গেছে। বর্তমান বাজারে আমাদের আটটি মোটরসাইকেলের মডেল রয়েছে। চারটি মডেলের মোটরসাইকেল দেশের মানুষ ভালোভাবে গ্রহণ করেছে। স্পোর্টসে করছে কেপিআর। ২০১৫ সালে আসে কেপিআর। এ বাইকে মানুষের আগ্রহ সবচেয়ে বেশি। এ পণ্যটা চায়নিজ মোটরসাইকেলের ধারণা পরিবর্তন করে দিয়েছে। অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিংয়ের ক্ষেত্রে কেপিটি। ক্রুজারের ক্ষেত্রে কে নাইন্টিন। প্রিমিয়াম স্কুটারের ক্ষেত্রে কেপিবি। এ চারটি মোটরসাইকেল এখন ভালো চলছে। আমাদের মেইন টার্গেট ২০ থেকে ৪০ বছরের যুবকদের। তিনটি জিনিসকে থিম নিয়ে আমরা কাজ করেছি। রিলায়াবিলিটি, টেকনোলজিক্যালি আপডেটেড ও ভ্যালু ফর মানি। আমরা একটি ইমপোর্ট বেজড ইন্ডাস্ট্রি। হয় মোটর ইমপোর্ট করা লাগে কিংবা র ম্যাটেরিয়ালস অথবা পার্টস ইমপোর্ট করা লাগে। এখানে ভ্যালু অ্যাডিশন খুব কম। একটা শিল্পকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে লং টার্ম সহযোগিতার প্রয়োজন। অনেক সময় আমাদের প্রোডাক্ট স্যাম্পল আনা লাগে। সে ক্ষেত্রে আমাদের ফুল প্রসিডিউর ফলো করা লাগে। আমাদের যদি নীতিমালা থাকত, একটা স্যাম্পল রোড টেস্টের জন্য পারমিশন নিয়ে আসা যেত তাহলে ভালো হতো। আমরা সুষ্ঠু ইমপোর্ট পলিসি চাই। দেশভেদে পণ্যের প্রাইসিং আলাদা হওয়া উচিত। সিসি অনুযায়ী না করে দেশভেদে আলাদা করা উচিত। আমি মনে করি বাংলাদেশ থেকে সিসি লিমিটেশনটা উঠিয়ে দেওয়া উচিত। আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হলো কাস্টমারদের কম টাকার মধ্যে বেস্ট প্রোডাক্ট দেব।

মোটরসাইকেলকে লাক্সারিয়াস পণ্য হিসেবে না দেখে অত্যাবশ্যক হিসেবে দেখতে পারি। এ ক্ষেত্রে মোটরসাইকেল কম দামে মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। সিসি অনুসারে ট্যাক্স পেমেন্ট করা উচিত। যার সিসি বেশি হবে তার ট্যাক্স বেশি হবে। ট্যাক্স কম হলে মোটরসাইকেল ইউজার বাড়বে। এতে সরকার বেশি ট্যাক্স পাবে। রেজিস্ট্রেশন ফি, ট্যাক্স ফি কমানো উচিত। শুধু মোটরসাইকেল নয়, সব ধরনের যানবাহনকে এক গতিসীমা নিয়ে আসতে হবে। একটা মোটরসাইকেল যদি ৩০ কিলোমিটার গতিতে চলে আর একটা বাসও যদি ৬০ কিলোমিটার বেগে চলে তাহলে সেখানে অ্যাক্সিডেন্ট হবে।

সর্বশেষ খবর