বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা স্কোরিং শট কম খেলেন- ১৯৯০ সালে এমন অভিযোগ করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার তৎকালীন অধিনায়ক অ্যালান বোর্ডার। শারজাহতে অস্ট্রেলেশিয়া কাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেবারই প্রথম মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। ম্যাচের ফল ছিল পূর্বানুমিত। অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়কের মনঃপূত হয়নি বুলবুল, সান্টু, লিপুদের ব্যাটিং। বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যবচ্ছেদ করে জানিয়েছিলেন ওয়ানডে ক্রিকেটে যা সবচেয়ে জরুরি, সেই স্কোরিং শটটাই নেই ব্যাটিংয়ে। বাংলাদেশের ব্যাটাররা ডট বল বেশি খেলেন। ৩৩ বছর বছর পরও সেই একই চিত্র দেখা গেল গতকাল। মিরপুরের পরিচিত উইকেটে ইনিংসের ৬১.৬২ শতাংশই ডট দিয়েছেন তামিম ইকবাল, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদরা। ৪৭.২ ওভার ব্যাটিং তামিম বাহিনীর সংগ্রহ ২০৯ রান। ইংলিশ বোলার ক্রিস ওয়ক্স, জোফরা আর্চার, মার্ক উড, মঈন আলি, আদিল রশিদ, উইল জ্যাকসরা ডট বল নিয়েছেন ১৭৫টি। তামিম বাহিনীর স্কোরিং শট ছিল ৩২.৩৮ শতাংশ! ইনিংসে টাইগাররা বাউন্ডারি মেরেছেন ১৭টি এবং ছক্কা ৩টি। ইনিংসে একমাত্র হাফসেঞ্চুরির ইনিংস খেলেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ক্যারিয়ার এটা তার প্রথম হাফসেঞ্চুরি। ৮২ বলে ৫৮ রানের ইনিংসটির স্ট্রাইক রেট ছিল ৭০.৭৩। ডট বলেরই খেসারত গুনলো বাংলাদেশ ৩ উইকেটে হেরে।
ওয়ানডে ক্রিকেটে হরহামেশাই ৩০০ রান করছে দলগুলো। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ২৩ বার ৩০০’র উপর রান করেছে। ৪০০’র উপর স্কোর হয়েছে ২২টি। সর্বোচ্চ দলগত স্কোর ইংল্যান্ডের ৪ উইকেটে ৪৯৮। অবিশ্বাস্য! বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর ৮ উইকেটে ৩৩৩। গতকাল পরিচিত উইকেটে টস জিতে ব্যাটিং করে ২০৯ রান করে ৪৭.২ ওভারে। ১০ ওভারের পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেটে ৫৪ রান করেছিল তামিম বাহিনী। শুরুর এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি টাইগাররা। উইকেটে বাউন্স ছিল বেশি এবং বল ঘুরছিলও। ইংলিশ তিন পেসার ওয়ক্স, আর্চার ও উডের গতি, সুইং ও বাউন্সের বিপক্ষে খুব সাবলীল ছিলেন না তামিমরা। টাইগার অধিনায়ক আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাটিং করেছেন। ৭১.৮৭ স্ট্রাইক রেটে ৩২ বলে ২৩ রান করেন। লিটন ছক্কা হাঁকানোর পরের বলে লেগ বিফোর হন। ৪৭.০৫ স্ট্রাইক রেটে মুশফিক ৩৪ বলে ১৬, সাকিব ১২ বলে ৮, মাহমুদুল্লাহ ৬৪.৫৮ স্ট্রাইক রেটে ৪৮ বলে ৩১, আফিফ ১২ বলে ৯, মিরাজ ১৯ বলে ৭ রান করেন।
ওয়ানডে ক্রিকেটে এখন ওভার প্রতি ৭, ৮ রান করে তুলছে দলগুলো। ১৫০, ১৬০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করছেন ব্যাটাররা।