রেকর্ডের ‘বরপুত্র’ সাকিব আল হাসান। একটি করে ম্যাচ খেলেন, আর নতুন নতুন রেকর্ড গড়েন। রেকর্ড গড়াই তার কাজ। গতকাল চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে নতুন এক মাইলফলক গড়েছেন সাকিব। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে ক্রিকেটে ৩০০ উইকেট নেওয়ার বিরল রেকর্ড গড়েছেন বাঁ হাতি স্পিন অলরাউন্ডার। সব মিলিয়ে ক্রিকেট বিশ্বের ১৪তম এবং তৃতীয় বাঁ হাতি স্পিনার হিসেবে তিনশ ক্লাবের সদস্য হয়েছেন। টেস্ট ক্রিকেটের মতো ওয়ানডেতেও সবচেয়ে বেশি উইকেট শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তির স্পিনার মুত্তিয়া মুরলিধরনের। ৩৫০ ওয়ানডেতে মুরলীর উইকেট ৫৩৪টি। মুরলিধরনদের ক্লাবে সাকিব নাম লিখেন আদিল রশিদকে শর্ট মিড উইকেটে মেহেদী হাসান মিরাজের দুর্দান্ত এক ক্যাচে। ২২৭ ম্যাচে সাকিবের উইকেট ২৮.৯৫ গড়ে ৩০০।
বাংলাদেশ দলে রয়েছেন তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মুস্তাফিজুর রহমানদের মতো তারকা ক্রিকেটার। তারপরও সাকিব এ দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ব্র্যান্ড আম্বাসেডর। সবচেয়ে বড় তারকা। বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার। সাকিব কি স্পিন অলরাউন্ডার? না, ব্যাটিং অলরাউন্ডার? পরিসংখ্যান বলে দুটোই। শুধু বোলার হিসেবে তিনি টাইগারদের প্রতিনিধিত্ব করতে পারতেন। আবার ব্যাটার হিসেবেও খেলতে পারতেন। কিন্তু তাকে বলা হয় ক্রিকেটের ‘কমপ্লিট প্যাকেজ’। বাঁ হাতি অলরাউন্ডার শুধু ওয়ানডে নয়, টেস্ট ও টি-২০ ক্রিকেটেও সমান তালে দাবড়ে বেড়াচ্ছেন। ১৭ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ৬৫ টেস্টে রান করেছেন ৪৩৬৭ ও ২৩১ উইকেট, ২২৭ ওয়ানডেতে ৬৯০১ রান ও ৩০০ উইকেট এবং ১০৯ টি-২০ ম্যাচে ২২৪৩ রান ও ১২৮ উইকেট নিয়েছেন। পরিসংখ্যানই বলছে, শুধু বাংলাদেশ নয়, ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব। স্যার গ্যারি সোবার্স, স্যার ইয়ান বোথাম, ইমরান খান, স্যার রিচার্ড হ্যাডলি, কপিল দেব, জ্যাক ক্যালিসদের সঙ্গে সমোচ্চারিত নাম সাকিব।

সাকিব গতকাল খেলতে নামেন ২৯৬ উইকেট নিয়ে। ম্যাচটি ছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচ। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি জস বাটলারের ইংল্যান্ড জেতে ৩ উইকেটে এবং দ্বিতীয়টি জয় পায় ১৩২ রানে। গতকালের ম্যাচটি ছিল হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর। আকাশসমান চাপের ম্যাচে সাকিব শুধু বোলিংয়েই মাইলফলক গড়েননি, ব্যাটিংয়েও ছিলেন উজ্জ্বল। প্রথমে ব্যাট করে ৭১ বলে ৭০ রানের ইনিংস খেলেন ৭ চারে। পরে বোলিংয়ে একে আউট করেন জেসন রয়, ফিল সল্ট, জেমস ভিন্স ও রেহান আহমেদকে। ম্যাচসেরা সাকিবের স্পেল ১০-০-৩৫-৪। তার অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ জয় পায় ৫০ রানে।