মঙ্গলবার, ২১ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

তামিম সাকিবের পর মুশফিক

আসিফ ইকবাল

তামিম সাকিবের পর মুশফিক

মুশফিকুর রহিম

শেষ পর্যন্ত বৃষ্টিরই জয় হয়েছে। কিন্তু রেকর্ড গড়ায় বাধা হতে পারেনি। দুটি পাতা ও একটি কুঁড়ির সিলেটে গতকালের দিনটি ছিল বাংলাদেশের। দিনটি ছিল রেকর্ড গড়ার। শুরুতে টাইগার ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল রেকর্ড গড়েছেন। এরপর ড্যাসিং ওপেনার লিটন দাস। সর্বশেষ মুশফিকুর রহিম। ব্যক্তিগত তিন রেকর্ডের দিনে দলগত রেকর্ডও হয়েছে। টাইগারদের সাবেক অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক ব্যাটার মুশফিক নতুন ইতিহাস লিখেছেন। ৬০ বলে ১০০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে গড়েছেন বাংলাদেশের দ্রুততম ওয়ানডে সেঞ্চুরির রেকর্ড। পেছনে ফেলেছেন সতীর্থ সাকিব আল হাসানকে। শুধু দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডই গড়েননি, তামিম ও সাকিবের পর তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ৭ হাজারি ক্লাবের নতুন সদস্য হয়েছেন। মুশফিকের দ্রুততম সেঞ্চুরি এবং লিটন ও নাজমুল হোসেনের জোড়া হাফসেঞ্চুরিতে ৫০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৬ উইকেটে ৩৪৯। যা বাংলাদেশের দলগত সর্বোচ্চ স্কোর। আগের রেকর্ড ৮ উইকেটে ৩৩৮ রান, চলতি সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে করেছিল টাইগাররা। খেলাটি শেষ পর্যন্ত বৃষ্টিতে ভেসে গেছে। ২৩ মার্চ সিরিজের শেষ ওয়ানডে।

৬০ : ৬০ বলে সেঞ্চুরি মুশফিকের। বাংলাদেশের দ্রুততম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। আগের দ্রুততম সেঞ্চুরি ছিল সাকিব আল হাসানের, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৬৩ বলে।

৩৪৯ : বাংলাদেশের দলগত সর্বোচ্চ স্কোর, ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৪৯ আগের সর্বোচ্চ দলগত ছিল ৮ উইকেটে ৩৩৮ রান

৭০০০ : ৭ হাজারি ক্লাবে বাংলাদেশের তৃতীয় ক্রিকেটার মুশফিক। আগের দুজন তামিম ইকবাল (৮১৬৯) ও সাকিব (৭০৮৬ )।

স্ট্রাইক রেট কম হওয়ায় আইরিশদের বিপক্ষে বাদ পড়ার তালিকায় ছিলেন মুশফিক। কিন্তু টাইগার অধিনায়ক তামিম আস্থা রাখেন মুশফিকের ওপর। তার প্রতিদানও দিচ্ছেন সাবেক অধিনায়ক। প্রথম ওয়ানডেতে ১৬৯.২৩ স্ট্রাইক রেটে ২৬ বলে ৪৪ রান করে জানান দেন, বলকে পেছনে ফেলে রান তোলার সক্ষমতা। গতকাল ইতিহাস লিখেছেন। বৃষ্টি¯œাত সিলেটের ঘাসের উইকেটে চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছুটিয়ে সেঞ্চুরির গল্প লিখেছেন। ৬০ বলে ১০০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সোনালি অক্ষরে নিজের নাম লিখেছেন মুশফিক। তিনি ব্যাটিংয়ে নামেন ৩৩.২ ওভারে নাজমুল শান্তের আউটের পর। দলের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ১৯০। ব্যাটিংয়ের জন্য তিনি ওভার পেয়েছিলেন ১৬.৪ ওভার বা ১০০ বল। এই সময়ে টাইগারদের স্কোর কার্ডে জমা হয় ১৫৯ রান! যা বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে রেকর্ড। এ সময়েই মুশফিক তুলে নেন ক্যারিয়ারের নবম সেঞ্চুরি। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে প্রথম ৫০ রান করেন ৩৩ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায়। পরের ৫০ রান করেন মাত্র ২৭ বলে ১৪ চার ও ২ ছক্কায়। সেঞ্চুরি করেন ইনিংসটির শেষ বলে। ৪৯.৫ ওভারের সমীকরণ ছিল মুশফিক অপরাজিত ৯৯ এবং বাংলাদেশের স্কোর ৬ উইকেটে ৩৪৮। এক রান নিলে সেঞ্চুরি করবেন। ২ রান নিলে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ৩৫০ স্কোর করবে। গ্রাহাম হিউমের বলটিকে আলতো করে শর্ট মিড উইকেটে ঠেলে সেঞ্চুরির উচ্ছ্বাসে মাতেন। সেঞ্চুরি করে আকাশসমান সকল চাপকে পেছনে ফেলে উইকেটে চুমু খান মুশফিক। এর আগে টাইগারদের দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক ছিলেন সাকিব। ২০০৯ সালে বুলাওয়েতে ৬৩ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন সাকিব। মুশফিকের আগের দ্রুততম সেঞ্চুরি ছিল ৬৯ বলে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০১৫ সালে। ওয়ানডে ক্রিকেটে দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্স। ২০১৫ সালে জোহানেসবার্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩১ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন।    

মুশফিক গতকাল শুধু দ্রুততম সেঞ্চুরি করেননি, তামিম ও সাকিবের পর তৃতীয় টাইগার ক্রিকেটার হিসেবে ৭ হাজারি ক্লাবে নাম লেখেন। গতকাল সেঞ্চুরির ইনিংস খেলার পথে ক্লাবের নতুন সদস্য হয়েছেন। দরকার ছিল ৫৫ রান। ২৪৪ ম্যাচের ২২৯ ইনিংস ৩৬.৮৮ গড়ে মুশফিকের রান ৭০৪৫। সবচেয়ে বেশি রান তামিমের। টাইগার ওয়ানডে অধিনায়কের রান ২৩৬ ম্যাচের ২৩৪ ইনিংসে ৩৬.৬৩ গড়ে ৮১৬৯। সাকিবের রান ২২৯ ম্যাচের ২১৭ ইনিংসে ৭০৮৬।

বাংলাদেশ ৪০৮ ওয়ানডেতে ২৫ বার তিনশোর্ধ্ব স্কোর গড়েছে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৬ উইকেটে ৩৪৯ রান দলগত সর্বোচ্চ। মুশফিকের রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি ছাড়াও রয়েছে লিটনের ৭১ বলে ৭০ এবং নাজমুল শান্তের ৭৭ বলে ৭৩ রানের ইনিংস। লিটন হাফসেঞ্চুরির ইনিংস খেলে নবম টাইগার ক্রিকেটার হিসেবে ২ হাজার রানের ক্লাবের সদস্য হয়েছেন। তিনি মাত্র ৬৫ ইনিংসে মাইলফলকটি গড়েন। যা বাংলাদেশের দ্রুততম ২ হাজার রান। লিটনের রান ২০১৫। ৬৫ ইনিংসে ২ হাজার রান করেছেন শাহরিয়ার নাফিসও।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর