ফেডারেশন কাপ শেষ হয়ে গেছে অনেক আগেই। এখন বাফুফে যদি শিডিউল ঠিক রাখতে পারে তাহলে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে পেশাদার লিগ মাঠে গড়ানোর কথা। ফুটবলে দেশের সবচেয়ে মর্যদাকর আসর। এখানে যারা চ্যাম্পিয়ন হয় দেশসেরা খেতাব পেয়ে থাকে। কোনো দলই চাচ্ছে না রেফারির ভুল বাঁশি বাজার কারণে ম্যাচ বিতর্কিত হয়ে উঠুক। ফেডারেশন কাপ ফুটবল সেমিফাইনালে শেখ রাসেল ও শেখ জামালের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রেফারি তৈয়ব হোসেনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠে। প্রথমে গোল করলেও শেষ পর্যন্ত ওই ম্যাচে ১-২ গোলে হেরে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ফাইনালে উঠতে পারেনি। খেলায় হারজিত থাকবেই। কিন্তু রেফারি যদি কারোর পক্ষপাতিত্ব করে তাহলে ম্যাচে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। সেমিফাইনালে শেখ জামালের গোলরক্ষক নিশ্চিত গোল ঠেকিয়েছেন ডি-বঙ্রে বাইরে হাত দিয়ে। এই অবৈধ কাজটির জন্য শেখ রাসেলের পেনাল্টি পাওয়ার পাশাপাশি গোলরক্ষককে লাল কার্ড দেখানো উচিত ছিল। অথচ তৈয়ব না দিয়েছেন পেনাল্টি না কার্ড। শুধু এ ঘটনা নয়। শেখ রাসেল আক্রমণে গেলে অধিকাংশ সময় অফসাইড বা ফাউলের বাঁশি বাজিয়েছেন। যা দেখে দর্শকরাও বিরক্তি প্রকাশ করেছেন।
শেখ রাসেল এবার তারকা খেলোয়াড়দের নিয়ে সেরা দল গড়েছে। তাদের মূল লক্ষ্য প্রতিটি আসরে ট্রফি ঘরে নেওয়া। কিন্তু মৌসুমে প্রথম ট্রফি ফেডারেশন কাপ হাত ছাড়া হয়ে গেছে বিতর্কিত রেফারিংয়ে জন্য। আর এ জন্য দলের ডিরেক্টর ইনচার্জ ইসমত জামিল আকন্দ লাভলু ফেডারেশন কাপ শেষ হওয়ার পরপরই দাবি তুলেছিলেন, পেশাদার লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোতে যেন বিদেশি রেফারি আনা হয়। এখন শুধু শেখ রাসেলই নয়, অন্যান্য ক্লাবও একই সুরে কথা বলছে। লাভলু বলেন, 'কিছুদিন আগে ক্লাবগুলো বসেছিল মাঠে রেফারির মান নিয়ে। সেখানে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলেন শেখ জামালের সভাপতি মনজুর কাদের। তিনিই বলেছেন, লিগে নিম্নমানের রেফারি থাকলে ম্যাচে সমস্যা হবে। এজন্য বাফুফের উচিত হবে সব না হোক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোতে বিদেশি রেফারির ব্যবস্থা করা। লাভলু বলেন, আমরা প্রচুর অর্থ খরচ করে দল গঠন করি। স্বাভাবিকভাবে লক্ষ্য থাকে শিরোপা। নিরপেক্ষ ম্যাচে হারলে কোনো দুঃখ নেই। কিন্তু ভুল রেফারির কারণে পয়েন্ট হারালে এরচেয়ে বড় ট্রাজেডি আর কি হতে পারে।'
ঢাকার মাঠে আশি ও নব্বই দশকে বিদেশি রেফারি আনা হয়েছিল। ওই সময় বড় দলগুলো হারলেই রেফারির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আনত। বিশেষ করে মোহামেডান-আবাহনীর মর্যদার লড়াইয়ে থাইল্যান্ড বা মালয়েশিয়ার রেফারি থাকতেন। লাভলু বলেন, 'এটা ঠিক আগের মতো লিগে দর্শক সমাগম হয় না। কিন্তু আগের চেয়ে বেশি অর্থ খরচ করছে ক্লাবগুলো। এখন বাজে রেফারিংয়ের শিকার হলে কতটা লোকসানের মুখোমুখি হতে হয় তা বাফুফেরও অজানা নয়। শীর্ষ পর্যায়ে ক্লাবগুলো দাবি তুলেছে সেক্ষেত্রে বাফুফের বিদেশি রেফারি আনার ব্যাপারে আপত্তি থাকার কথা নয়।' বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি লিগ কমিটির চেয়ারম্যান সালাম মুর্শেদী বলেন, বড় ক্লাব বিদেশি রেফারি আনার দাবি জানিয়েছে। এ দাবি তারা করতেই পারে, দল গড়তে তারা প্রচুর অর্থ খরচ করছে। কিন্তু বাংলাদেশের রেফারির মানতো ভালোই বলব। কেননা এএফসি'র বিভিন্ন টুর্নামেন্টে তারা সুনাম কুড়াচ্ছে।
দেখেন ফেডারেশন কাপ সেমিফাইনালে তৈয়বের ম্যাচ পরিচালনা নিয়ে অভিযোগ উঠাতে আমরা তাকে সাসপেন্ড করি। কিন্তু এএফসি এক টুর্নামেন্টে ম্যাচ পরিচালনার জন্য তাকে নিতে বাফুফের কাছে চিঠি দেয়। তাহলে আপনিই বলুন আমাদের রেফারির মান খারাপ বলি কীভাবে? তাছাড়া বিদেশি রেফারি আসলেই যে কোন বিতর্ক উঠবে না এই নিশ্চয়তা কি দেওয়া যায়। বিশ্বকাপ বা ইউরোপীয়ান লিগে কি ভুল করছে না। বাংলাদেশে রেফারি কমিটি রয়েছে তারা ম্যাচ পর্যবেক্ষণ করবেন। ১/২টা ভুল সিদ্ধান্ত রেফারি দিতেই পারে। কিন্তু এগুলো ভুল না ইচ্ছাকৃত তা তদন্ত হবে। সুতরাং এরপরতো আর দেশি রেফারি নিয়ে ক্লাবগুলোর আপত্তি থাকার কথা নয়।