বিশ্বকাপ যেমন তরুণ খেলোয়াড়দের তারকা হওয়ার মঞ্চ তেমনি গ্রেট তারকাদের বিদায়ের মঞ্চও। কুমার সাঙ্গাকারা, মাহেলা জয়বর্ধনে, মাইকেল ক্লার্ক, শহীদ আফ্রিদি ও মিসবাহ্-উল হকের পর বিশ্বকাপ মিশন শেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন নিউজিল্যান্ডের তারকা ক্রিকেটার ড্যানিয়েল ভেট্টরি। কিউই তারকা সতীর্থদের আগেই জানিয়েছিলেন, বিশ্বকাপের পর আর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারকে লম্বা করবেন না তিনি। তাই কিউই ক্রিকেটাররা ভেট্টরির বিদায়ী উপহার হিসেবেই বিশ্বকাপ ট্রফিটা জিততে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা হয়নি। ফাইনালে মেলবোর্নে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৭ উইকেটে হেরে যায় নিউজিল্যান্ড। দেশে ফিরেই কাল আনুষ্ঠানিকভাবে অবসরের ঘোষণা দিলেন ভেট্টরি। ব্ল্যাক ক্যাপস তারকা বলেন, 'নিউজিল্যান্ডের হয়ে ফাইনালটাই ছিল আমার শেষ ম্যাচ। আমি মনে করেছিলাম দারুণ হবে আমার শেষটা। কেননা নিউজিল্যান্ড প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল। অবশ্য জিততে পারলে আরও সুখকর হতো। কিন্তু আমি সত্যিকার অর্থেই সবাইকে নিয়ে দারুণ গর্বিত। গত ছয় সপ্তাহ ধরে আমরা যা দেখিয়েছি তা এক কথায় অসাধারণ।'
বর্তমানে আইসিসির বোলারদের র্যাঙ্কিংয়ে ১২তম অবস্থানে ড্যানিয়েল ভেট্টরি। এবারের বিশ্বকাপে তিনি নিয়েছেন ১৫ উইকেট। যদিও ইনজুরি নিয়ে মাঠে নেমে ফাইনালে খুব ভালো করতে পারেননি। ৫ ওভার বোলিং করলেও কোনো উইকেট পাননি ভেট্টরি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১৮ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। এবারের বিশ্বকাপে এটি ছিল তার সেরা বোলিং ফিগার।
মাত্র ১৮ বছর বয়সে ১৯৯৭ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভেট্টরির টেস্ট অভিষেক হয়েছিল। এরপর আর তাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। কিউইদের হয়ে ১১৩ ম্যাচে ৩৪.৩৬ গড়ে ৩৬২ উইকেট দখল করেছেন। রান করেছেন ৪,৫৩১, যার মধ্যে ছিল ছয়টি সেঞ্চুরি। ভারতের কপিল দেব এবং ইংল্যান্ডের ইয়ান বোথামের পর তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে ৩০০'র উপরে উইকেট এবং ৪ হাজারের ওপরে রান করেছেন ভেট্টরি। ওয়ানডেতে তিনি ২৯৫ ম্যাচে ৩১.৭১ গড়ে ৩০৫ উইকেট নিয়েছেন। ব্যাট হাতে করেছেন ২২৫৩ রান।
ভেট্টরির বিদায়কে নিউজিল্যান্ডের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি বলে উল্লেখ করেছেন অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। তিনি বলেন, 'আমার সৌভাগ্য হয়েছে যে, আমি ভেট্টরির মতো সেরা ক্রিকেটারকে সতীর্থ হিসেবে পেয়েছে। আমি মনে করি, তার বিদায় নিউজিল্যান্ড তাদের সর্বকালের অন্যতম সেরা এক ক্রিকেটারকে হারালো। তার অভাব কখনোই পূরণ হওয়ার নয়।'