শনিবার জাঁকজমকভাবে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের অ্যাওয়ার্ড নাইটস। বাফুফের ঘোষণা ছিল প্রতিবছরই এ অনুষ্ঠান হবে। কিন্তু সেই নিয়ম রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। পাঁচ বছর পর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনে বিভিন্ন লিগের চ্যাম্পিয়ন দল ও সেরা খেলোয়াড়দের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। বাফুফে বলছে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে তারা নিয়মিতভাবে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান করতে পারেনি। যাক এ নিয়ে তেমনভাবে কেউ প্রশ্ন তোলেননি। কিন্তু এতদিন পর অনুষ্ঠান হলেও নানা অভিযোগ উঠেছে। ফুটবলের অনুষ্ঠানে ফুটবলাররা উপস্থিত থাকবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার ছাঈদ হাছান কানন বেশ ক্ষোভের সঙ্গে জানালেন, ইচ্ছা ছিল অনুষ্ঠানে যাওয়ার। কিন্তু নিমন্ত্রণ না পাওয়াতে সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি। তিনি বলেন, জাতীয় দলের হয়ে দীর্ঘদিন ফুটবল খেলেছি। ১৯৮৯ সালে প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপে বাংলাদেশ লাল দলের অধিনায়ক ছিলাম। তাছাড়া ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে জাতীয় দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করি। বাফুফের নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলাম। এরপরও আমাকে নিমন্ত্রণ জানানোর প্রয়োজন মনে করেনি। তিনি বলেন, শুধু বাফুফে অ্যাওয়ার্ড নাইট নয়। দীর্ঘদিন পর গত জানুয়ারিতে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ অনুষ্ঠিত হলেও ফাইনালে অনেক সাবেক ফুটবলারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। কানন বলেন, কি কারণে আমাদের তুচ্ছ করে দেখা হচ্ছে তা বুঝতে পারছি না। আমরা যখন কমিটিতে ছিলাম ফেডারেশনের যে কোনো অনুষ্ঠানে বা বড় আসরে সাবেক ফুটবলার ও সংগঠকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি। কাননের মতো জাতীয় দলের সাবেক এক প্রশিক্ষক বললেন, বয়স হয়ে গেছে বলে কি আমাদের অবহেলা করা হচ্ছে! তা না হলে দীর্ঘদিন জাতীয় দলে খেলা ও প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করলেও ফুটবলের অনুষ্ঠানে আমরা কেন বঞ্চিত হবো।
অ্যাওয়ার্ড নাইটে দাওয়াত দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো শিথিলতা ছিল কি? এ ব্যাপারে বাফুফে নির্বাহী কমিটির সদস্য ফজলুর রহমান বাবুল বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। তবে জাতীয় দলের কোনো ফুটবলার নিমন্ত্রণ না পেয়ে থাকলে তা দুঃখজনক। অভিযোগ সম্পর্কে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগকে ফোনে বার বার চেষ্টা করা সত্ত্বেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। অবশ্য আহমেদ সাইদ আল ফাত্তাহ বলেন, তার জানা মতে অ্যাওয়ার্ড নাইটে ৯০০ নিমন্ত্রণ কার্ড বিতরণ করা হয়। শুধু তাই নয়, যথাসময়ে অনুষ্ঠানে আসার জন্য সাবেক ফুটবলার, কোচ ও কর্মকর্তাদের এসএমএসও করা হয়। সুতরাং দাওয়াত না পাওয়ার অভিযোগ কেন উঠছে তা তিনি বুঝতে পারছেন না।
এত গেল এক অভিযোগ। অনুষ্ঠানে যেসব ফুটবলারদের পুরস্কৃত করা হয়েছে তার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুরস্কার পাওয়া একজন আক্ষেপ করে বললেন, বাইরে থেকে পুরস্কারগুলো দেখতে চমৎকার লাগলেও হাতে ধরলেই বুঝতে পারবেন মান কেমন। অ্যাওয়ার্ড নাইট যখন চালু হয় তখন বাফুফে বেশ প্রশংসা পেয়েছিল। অনেকে বলেছিলেন, এতে করে ফুটবলার ভালো খেলার ব্যাপারে উৎসাহ পাবে। কিন্তু পাঁচ বছর পর অনুষ্ঠিত অ্যাওয়ার্ড নাইটকে ঘিরে যে অভিযোগ উঠেছে তা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে অনুষ্ঠানের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে।