শনিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

শান্তিতে তিউনিসিয়ান ন্যাশনাল ডায়ালগ কোয়ার্টেট

শান্তিতে তিউনিসিয়ান ন্যাশনাল ডায়ালগ কোয়ার্টেট

২০১৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছে তিউনিসিয়ান ন্যাশনাল ডায়ালগ কোয়ার্টেট। তিউনিসিয়ায় ২০১১ সালে যে আরব বসন্ত নামের বিপ্লব শুরু হয় এবং পরবর্তীতে সেখানে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়, সেই প্রক্রিয়ায় প্রধান ভ‚মিকা রাখার জন্য ২০১৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন তিউনিসিয়ান ন্যাশনাল ডায়ালগ কোয়ার্টেট। নরওয়ের অসলো থেকে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি এ পুরস্কারের কথা ঘোষণা করে। পৃথক পৃথকভাবে কোনো সংগঠনকে নয়, যৌথভাবে চারটি সংগঠন এ শান্তি পুরস্কার পাবে।

আরব বসন্তের পরে রাজনৈতিক হত্যা এবং সামাজিক অসন্তোষের কারণে গণতন্ত্রায়ন যখন ধ্বংসের পথে তখন ওই চারটি সংগঠন শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠায় যৌথভাবে কাজ করে।

নোবেল কমিটি আরও উল্লেখ করেছে, তিউনিসিয়া যখন প্রায় গৃহযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে তখন এই জোট শান্তিপূর্ণ পথে বিকল্প রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার সূচনা করে। নোবেল জয়ী চারটি সংগঠন হচ্ছেÑ তিউনিসিয়ান জেনারেল লেবার ইউনিয়ন, তিউনিসিয়ান কনফেডারেশন অব ইন্ডাস্ট্রি, ট্রেড অ্যান্ড হ্যান্ডিক্রাফটস, তিউনিসিয়ান হিউম্যান রাইটস লীগ এবং তিউনিসিয়ান অর্ডার অব ল-ইয়ার্স। নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান এ পুরস্কার ঘোষণা করে বলেন, তিউনিসিয়ায় ২০১১ সালের বিপ্লবের পর সেখানে বহুমতের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় এই চারটি সংগঠন গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে।

২০১৩ সালে তিউনিসিয়ায় একের পর এক গুপ্তহত্যা এবং ব্যাপক সামাজিক অসন্তোষের মুখে গণতন্ত্র যখন প্রায় ভেস্তে যাচ্ছিল তখন এই চারটি সংগঠন জোটবদ্ধ হয়। এরাই কয়েক বছরের মধ্যে তিউনিসিয়ায় একটি সাংবিধানিক ব্যবস্থা চালু করে, যেখানে সবার জন্য মানবাধিকারের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। নোবেল কমিটি আশা করছে, এ পুরস্কার তিউনিসিয়ার গণতন্ত্রকে আরও সংহত করতে অবদান রাখবে। এ সংগঠনগুলো তিউনিসিয়ার সমাজের বিভিন্ন সেক্টর ও মূল্যবোধের প্রতিনিধিত্ব করে, যারা জীবন ও কল্যাণ, আইনের নিয়ম-নীতি ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করে। এর ভিত্তিতে কোয়ার্টেট নৈতিক দায়িত্বের সঙ্গে তিউনিসিয়ায় শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় মধ্যস্থতাকারী ও চালকের ভ‚মিকায় কাজ করেছেন। প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের ১৮ ডিসেম্বর তিউনিসিয়ায় মোহাম্মদ বোয়াজিজি পুলিশের দুর্নীতি ও দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে আÍাহুতি দেন। এরপরই দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়।

২৩ বছরের শাসক জয়নাল আবেদিন বেন আলির পতনের এই আন্দোলনকে চিহ্নিত করা হয় জেসমিন রেভ্যুলুশন বা জেসমিন বিপ্লব নামে। ২০১১ সালের ১৪ জানুয়ারি বেন আলির পতন ঘটে এবং তিনি সৌদি আরবে পালিয়ে যান। পরে নির্বাচনে জয়ী হয়ে ইসলামপন্থি দল ক্ষমতায় এলেও বিভিন্ন ইস্যুতে সেক্যুলারিজমদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। নোবেল শান্তি পুরস্কারের মনোনয়নে এ বছর ২০৫ ব্যক্তি ও ৬৮ প্রতিষ্ঠানের নাম আসে। যাদের মধ্যে জার্মানের চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি, পোপ ফ্রান্সিস, কঙ্গোর চিকিৎসক ডেনিস মাকোয়েজ ও রাশিয়ার সংবাদপত্র নভোয়া গেজেটার নাম ছিল। ১৯০১ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১০৩ ব্যক্তি ও ২৫ প্রতিষ্ঠানকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর