বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বসবাসের অযোগ্য নগরী

সম্প্রতি ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের রিপোর্টে বিশ্বের বসবাসযোগ্যতার দিক থেকে ১৪০টি শহরের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এ তালিকায় থাকা সবচেয়ে নিচে অবস্থান করা শহরগুলো নিয়ে আজকের রকমারি আয়োজন-

তানিয়া তুষ্টি

বসবাসের অযোগ্য নগরী

যুদ্ধবিধ্বস্ত শহর দামেস্ক

দামেস্ক সিরিয়ার আরব প্রজাতন্ত্রের রাজধানী। যুদ্ধের কারণে আলেপ্পোর জনসংখ্যা হ্রাসের পরে এটিও দেশের বৃহত্তম শহর। বিশ্বের বসবাসের অযোগ্য শহরের কথা আসবে কিন্তু সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের নাম উঠে আসবে না এটা কল্পনা করাও দুরূহ ব্যাপার। প্রায় ১০ হাজার বছর ধরে মানুষের বসতির চিহ্ন মেলে এখানে। প্রাচীন নগরী হিসেবেও অনেকে চেনে একে। আলেকজান্ডার দ্য গ্র্রেট, পম্পেই থেকে শুরু করে খালেদ ইবনে ওয়ালিদের মতো অসাধারণ সব বিজেতার পদধূলিতে যুগ যুগ ধরে ধন্য দামেস্কের মাটি। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের ফলে বর্তমানে শহরটির অবস্থা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধের পর বন্ধই হয়ে গিয়েছিল দেশটির পর্যটন শিল্প। ফলে রাজধানী দামেস্কে যুদ্ধের প্রভাব পড়ে।  অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে লাখ লাখ মানুষ শুধু শহরই নয় দেশ ছেড়েও পালিয়ে গিয়েছিল। তবে আট বছরের মাথায় এসে পরিস্থিতি পাল্টেছে। রাজধানী দামেস্ক এখন পুরোপুরি সরকারি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। শহরের বিভিন অংশে আবারও মানুষজন বসবাস করতে শুরু করেছে আগের মতো করে। পুরনো ব্যবসা-বাণিজ্য নতুন করে শুরু করেছে অনেকে। বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে দামেস্ক বসবাসের জন্য সবচেয়ে নিকৃষ্ট শহরগুলোর মধ্যে একটি। তারপরেও অনেকের দাবি এখানের এখন নৈশ জীবন দারুণ আকর্ষণীয়।

 

ডুবছে লাগোস প্রতি বছর

নাইজেরিয়ার বৃহত্তম শহর লাগোস। শহর নাইজেরিয়ার উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত। শহরের অন্তর্গত বিচ্ছিন্ন ছড়ানো-ছিটানো দ্বীপের জন্য একে একটি দ্বীপপুঞ্জও বলা চলে। তবে কেন্দ্রীয় সরকার লাগোসের প্রশাসন ব্যবস্থা ও সরকারি অন্যান্য পরিচালনা কাঠামো সঠিক রাখতে একাধিক স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা রেখেছে। সম্ভবত এ কারণেই লাগোস পৃথিবীতে বিখ্যাত। অথচ এ শহরেরও রয়েছে নিম্নমানের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা, যা সহজেই বন্যার সৃষ্টি করে। এ কারণে শহরের ভূখন্ড প্রতি বছর ২০ সেন্টিমিটার করে পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। অথচ সম্পূর্ণ শহরটি তলিয়ে গেলে প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজারের মতো মানুষ গৃহহীন হবে। এ ছাড়া লাগোসে তীব্র মাত্রায় দৈনন্দিন ব্যবহার্য পানির সমস্যা তৈরি হবে। তবে ইতিমধ্যেই ‘ইকো আটলান্টিক’ নামে শহরের ভবন নির্মাণে নতুন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

 

ঢাকা যে কারণে নেতিবাচক

দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর ঢাকা। প্রশাসনিকভাবে এটি দেশটির প্রধান শহর। ভৌগোলিকভাবে এটি বাংলাদেশের মধ্যভাগে বুড়িগঙ্গা নদীর উত্তর তীরে একটি সমতল এলাকায় অবস্থিত। ঢাকা মহানগরী এলাকার জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ। জনসংখ্যার বিচারে এটি দক্ষিণ এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম শহর। জনঘনত্বের বিচারে ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ মহানগরী। মাত্র ১৩৪ বর্গমাইল আয়তনের এ শহরে প্রতি বর্গমাইল এলাকায় ১ লাখ ১৫ হাজার লোকের বাস। এ শহরের নগরাঞ্চলীয় অবকাঠামোটি বিশ্বে উন্নত হলেও দূষণ, যানজট এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে যথেষ্ট পরিষেবার অভাব রয়েছে। বিগত ৩ বছরে অপরাধ ও সন্ত্রাসীর হার বেড়েছে ৭৪.৮৭ শতাংশ যা খুবই উদ্বেগজনক। মাদকের গ্রাস, অস্ত্রবাজী, হামলা, ভাঙচুর সবই বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এ বছর বাসযোগ্য শহরের তালিকায় ঢাকা অবস্থান নিয়েছে ৩ নম্বরে।

 

ত্রিপোলির দিকে সক্রিয় বিদ্রোহীরা

ত্রিপোলি উত্তর আফ্রিকার রাষ্ট্র লিবিয়ার রাজধানী। শহরটি লিবিয়ার উত্তর-পশ্চিমে ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত। এটি লিবিয়ার বৃহত্তম শহর, প্রধান বন্দর এবং শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্যিক ও উৎপাদন শিল্পকেন্দ্র। বর্তমানে শহরটির জনসংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। ২০১১ সালে মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর ছিটেফোঁটা সংঘর্ষ বাদে লিবিয়া পরিস্থিতি তেমন একটা উত্তপ্ত ছিল না। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে লিবিয়া পরিস্থিতি ফের অশান্তের দিকে মোড় নিচ্ছে। অন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো এমনটাই জানিয়েছে। দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় বিদ্রোহী বাহিনী এলএনএ (লিবারেশন ন্যাশনাল আর্মি) রাজধানী ত্রিপোলির দিকে রওনা হওয়ায় এ সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে। এরই মধ্যে সেখানকার একটি বিমানবন্দরের কাছে সরকারি বাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে কিছু দিন আগেই। এ ঘটনায় শহরেজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ শহরে উৎপাদন শিল্পের মধ্যে আছে খাবার প্রক্রিয়াকরণ, টেক্সটাইল, বস্ত্র, নির্মাণসামগ্রী ও তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদন।

 

বিশ্বের ষষ্ঠ জনবহুল শহর করাচি

করাচি পাকিস্তানের প্রাক্তন এবং সিন্ধু প্রদেশের রাজধানী। আরব সাগরের পাড়ে অবস্থিত করাচি পাকিস্তানের প্রধান পরিবহন কেন্দ্র। পাকিস্তানের তিনটি বৃহত্তম সমুদ্রবন্দরের মধ্যে দুটি করাচি পোর্ট এবং পোর্ট কাসিম করাচিতে অবস্থিত। আবার পাকিস্তানের ব্যস্ততম জিন্নাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও করাচিতে অবস্থিত। করাচি বিশ্বের বসবাস অযোগ্য শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম। অতিরিক্ত জনবহুল শহর হওয়ায় নানাবিধ সমস্যা এখানে লেগেই আছে। এদিকে বিভিন্ন দেশের অভিবাসী থাকার ফলেও ভাষাগত, জাতিগত, এবং ধর্মীয় দিক থেকে পাকিস্তানের সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় শহরও এটি। উপমহাদেশের স্বাধীনতার পর ভারত থেকে লাখ লাখ মুসলিম শরণার্থী আগমনের কারণে করাচির জনসংখ্যা নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পায়। বিশ্বের ৬ষ্ঠ জনবহুল শহর করাচিতে ২০ লাখ বাংলাদেশি অভিবাসী, ১০ লাখ আফগান শরণার্থী, এবং মিয়ানমার থেকে আসা ৪ লাখ রোহিঙ্গা অভিবাসী বসবাস করে। এ ছাড়াও করাচিতে আফ্রিকান, ফিলিপিনো, শ্রীলঙ্কান, উগান্ডান, আরব এবং চীনা মুসলিমরা বসবাস করে।

 

মাদকে ডুবেছে আলজিয়ার্স

ভূমধ্যসাগরে দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকার একটি প্রধান বন্দর শহর আলজিয়ার্স। এটি আলজেরিয়ার বৃহত্তম শহর, সমুদ্রবন্দর ও রাজধানী এবং একাধারে দেশটির রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। আলজিয়ার্স উপসাগরের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ১৬ কিলোমিটার এলায় বিস্তৃত। উপসাগর ও পোতাশ্রয়ের ধারে অবস্থিত ঝলমলে শ্বেতশুভ্র ভবনগুলো নীল সাগরের তীর থেকে সোপানের মতো পাহাড়ের ঢাল বেয়ে উঠে গেছে। এ জন্য ফরাসি ভাষায় শহরটির ডাকনাম ‘আলজে লা ব্লঁশ’ অর্থাৎ ‘শ্বেতশুভ্র আলজিয়ার্স’। মূল শহরে প্রায় ৩৫ লাখ এবং বৃহত্তর আলজিয়ার্স শহরে ৫০ লাখেরও বেশি অধিবাসী বাস করে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার হওয়া সত্ত্বেও এ শহরটি চলতি বছরের হিসাবে অবাসযোগ্যতার তালিকায় নবম হয়েছে। চুরি, ডাকাতি আর মাদক শহরটিকে টেনে নামিয়েছে অবাসযোগ্য শহরের তালিকায়।

 

সব পরিষেবায় পিছিয়ে পোর্ট মোর্সবি

প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র পাপুয়া নিউগিনি। তারই রাজধানী শহর পোর্ট মোর্সবি। পম সিটি হিসেবেও বহির্বিশ্বে বহুল পরিচিত শহরটি। জনসংখ্যার বিচারে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বাইরে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বৃহত্তম শহর পোর্ট মোর্সবি। বিশ্বের বসবাসের অযোগ্য নগরীর তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। পোর্ট মোর্সবি বিশ্বের অন্য শহরের তুলনায় সামাজিক স্থিতিশীলতা, সংস্কৃতি ও পরিবেশ, শিক্ষা ও অবকাঠামো এবং স্বাস্থ্যসেবা; সব দিক থেকেই পিছিয়ে আছে। ২০১১ সালের হিসাব অনুযায়ী শহরটিতে বসবাস করে ৩ লাখ ৬৪ হাজার ১৪৫ জন। প্রতি বছর শহরটির জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায় গড়ে ২.১ ভাগ। গত কয়েক বছরের তথ্য অনুযায়ী পোর্ট মোর্সবিতে অপরাধ বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। বসতবাড়িতে চুরি, দিন-দুপুরে ডাকাতি, হত্যা, ধর্ষণ, মাদক পাচার, অস্ত্র পাচার ইত্যাদি বেড়েছে ব্যাপক হারে। প্রশাসনের পক্ষে জনগণের নিরাপত্তা প্রদান করা সম্ভব হয় মাত্র ২৩.৪৭ শতাশ। রাতে এ নিরাপত্তা প্রদাণের হার নেমে আসে অর্ধেকেরও নিচে। যা এ শহরে বসবাসরত জনগণের নিরাপত্তার জন্য খুবই নগণ্য।

 

কারাকাসে সন্ত্রাসীর জন্য রাজনীতি আর অর্থনীতিই দায়ী

ভেনেজুয়েলার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত রাজধানী ও প্রধান শহর কারাকাস। এটি দেশের অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবেও পরিচিত।  শহরের মূল এলাকায় ২০১৭ অনুযায়ী জনসংখ্যা ১৯ লাখ ৪৫ হাজার। ভেনেজুয়েলার উপকূলীয় পর্বতমালার (কর্ডিলিয়েরা দে লা কোস্তা) মধ্যে সংকীর্ণ কারাকাস উপত্যকায় গুয়ের নদীর তীরে অবস্থিত এ শহর। শহরের মূল বসবাসকারী এলাকা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭৬০ থেকে ৯১০ মিটার উচ্চ। মূল মেট্রোপলিটন অঞ্চলে কিছু শিল্প থাকলেও অর্থনীতির মূল ভিত্তি এখানে বিভিন্ন ধরনের পরিষেবাকেন্দ্রিক। বিভিন্ন ধরনের ব্যাংক, শপিং মল ও বিভিন্ন কোম্পানির সদর দফতর এখানে অবস্থিত। কারাকাস স্টক এক্সচেঞ্জ ও পেট্রোলেওস দে ভেনেজুয়েলার (পিডিভিএসএ) সদর দফতরও এখানেই অবস্থিত। এ ছাড়া বহু রেস্তোরাঁ, শপিং সেন্টার, সংগ্রহশালা আছে এ শহরে। তবে অতিরিক্ত ঘনবসতির কারণে তার সব সৌন্দর্য হারাতে বসেছে। দিনে দিনে বেড়েছে দুর্নীতি আর সন্ত্রাসী কার্যকলাপ। ২০১৯ সালের পরিসংখ্যানে শহরটি বিশ্বের অবাসযোগ্য শহরের তালিকায় রয়েছে ১০ নম্বরে। দিন দিন এখানে খুন, অপহরণসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বেড়েই চলেছে। জাতিসংঘের ভাষ্যমতে এখানকার নিম্নমানের রাজনীতি চর্চা আর অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ সন্ত্রাসীকে বাড়িয়ে দিচ্ছে দিনে দিনে।

 

সন্ত্রাস বাড়ছে হারারেতে

জিম্বাবুয়ের রাজধানী ও অন্যতম প্রধান শহর হারারে। ২০০৯ সালে যার আনুমানিক জনসংখ্যা ধরা হয় ১৬ লাখ ৬ হাজার। ৯৬০.৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ছোট্ট এ শহরে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ২ হাজার ৫৪০ জন। প্রশাসনিকভাবে হারারে প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত এ শহরটি। জিম্বাবুয়ের বাণিজ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে ধরা হয় এটিকে। বিগত ৩ বছরের হিসাব করলে এখানে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়েছে ৫৪.৫১ শতাংশ হারে। এর মধ্যে মানুষের বসতবাড়ি ভেঙে দেওয়া আর ডাকাতি বেড়েছে উচ্চহারে। তবে বর্ণবাদ আর ধর্মীয় কোন্দল কম আছে। প্রশাসন দিনের আলোয় নিরাপত্তা দিতে পারে ৬১.৬৯ শতাংশ, রাতে এ হার থাকে একদম অর্ধেক। অনিরাপদ শহর হিসেব এর অবস্থান সপ্তম।

 

দুয়ালার দিনে নিরাপত্তা ২৯.১৭ শতাংশ, রাতে অর্ধেক

রিপাবলিক অব ক্যামেরুনের অর্থনৈতিক রাজধানী দুয়ালা। ‘ডুয়ালা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’ অবস্থিত এখানে। ক্যামেরুনের এ বাণিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক রাজধানী ব্যবহার হয় গ্যাবোন, কঙ্গো, চাদ, নিরক্ষীয় গিনি, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র এবং ক্যামেরুনের সমন্বিত সিইএমএসি অঞ্চল হিসেবে। ফলে এখানে  উল্লিখিত দেশগুলোর বেশিরভাগ প্রধান রফতানির কাজ হয়ে থাকে। যেমন- তেল, কোকো এবং কফি, কাঠ, ধাতু এবং ফল। ২০১৮ সালের হিসাবে শহর ও তার আশপাশের অঞ্চলটির আনুমানিক জনসংখ্যা ছিল ২৭ লাখ ৬৮ হাজার ৪০০ জন। ২১০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ছোট্ট এ শহরটি ওউরি নদীর মোহনায় অবস্থিত। আয়তনের তুলনায় উপচে পড়া জনসংখ্যা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা শহরটি আজ বেশ নাজুক অবস্থায় পড়েছে। স্বল্প আয়তনের এ শহরে অতিরিক্ত মানুষ, কল কারখানা, গাড়ি ও যন্ত্রপাতির আধিক্য থাকায় জলবায়ু গ্রীষ্মম-লীয়। ২০১৯ সালের পরিসংখ্যানে বিশ্বের অবাসযোগ্য শহরের তালিকায় এটির অবস্থান দাঁড়িয়েছে আট নম্বরে। বিগত ৩ বছরে এখানে সন্ত্রাসীর হার বেড়েছে ৮৭.৫০ শতাংশ। এখানে দাঙ্গা, একে অন্যের ঘর ভেঙে দেওয়া, চুরি-ডাকাতি করা, অসামাজিক কার্যকলাপ, বর্ণভেদ, শারীরিক আঘাত, সম্পত্তি নিয়ে হানাহানি চলতেই থাকে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধারণ জনগণকে দিনের বেলা নিরপত্তা দেওয়া হয় ২৯.১৭ শতাংশ। আর রাতে তা নেমে আসে ১২.৫০ শতাংশে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর