রবিবার, ২৪ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

পর্বত কাহিনি

তানভীর আহমেদ

পর্বত কাহিনি

তিব্বতিরা বলে গডেস মাদার অব দ্য ওয়ার্ল্ড

মাউন্ট এভারেস্ট রয়েছে নেপাল ও চীনের সীমান্তবর্তী এলাকায়। এর অপর নাম ‘চোমোলুংমা’, তিব্বতি ভাষায় যার অর্থ ‘গডেস মাদার অব দ্য ওয়ার্ল্ড’। ১৯৫৩ সালের ২৯ মে প্রথম নেপালি শেরপা তেনজিং নোরগে এবং নিউজিল্যান্ডের নাগরিক এডমন্ড হিলারি মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেন। সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজন সামিটের সময় মারা যান। ৪ হাজারেরও বেশি মানুষ হিমালয়ে চড়ার চেষ্টা করেছেন। দ্য গার্ডিয়ানের তথ্য অনুযায়ী, ১৯২২ সাল থেকে সংরক্ষিত রেকর্ড থেকে দেখা যায়, এই দুঃসাহসিক অভিযানে ৩০০ এরও বেশি অভিযাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন। এভারেস্টের উচ্চতা নিয়ে দ্বিমত ছিল নেপাল ও চীনের। অবশেষে বিশ্বের উচ্চতম পাহাড়ের উচ্চতা নিয়ে সহমত হয় দেশ দুটি। মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা ৮৮৪৮.৬ মিটার বা ২৯০৩.৬৯ ফুট। প্রথমে নেপালের সমীক্ষকরা পাহাড়ের ওপর ওঠেন ২০১৯ সালের মে মাসে। ঠিক এক বছর বাদে চীনের বিশেষজ্ঞরা পাহাড়ে আসেন উচ্চতা মাপতে। ২০১৫ সালের ভূমিকম্পের পর অনেকে মনে করেছিলেন যে, এভারেস্টের উচ্চতা হয়তো কমে গেছে। সেই সন্দেহ নিরসন করার জন্যই উচ্চতা মাপার সিদ্ধান্ত নেয় নেপাল। এভারেস্ট নিয়ে অদ্ভুত সব তথ্য আছে।

>> নেপালিরা একে ‘সাগরমাথা’ বা ‘গডেস অব দ্য স্কাই’ নামে ডাকে। আবার তিব্বতিরা ডাকে ‘চোমোলুংমা’ বা ‘মাদার গডেস অব দ্য ইউনিভার্স’ নামে।

>> ২০১১ সালে পর্বতারোহী কেন্টন কুল প্রথমবার শৃঙ্গ থেকে ট্যুইট করেছিলেন। 

>> গুগলের মানচিত্রে মাউন্ট এভারেস্টের ছবি দেওয়ার জন্য ১২ দিন ধরে ছবি তুলেছিলেন গুগলের একটা দল।

>> এভারেস্টের শৃঙ্গে চড়তে গেলে আপনাকে ‘মাউন্টেন স্পাইডারের’ কবলে পড়তেই হবে। কোনোভাবেই এদের হাত থেকে এড়িয়ে যেতে পারবেন না। ৬,৭০০ মিটার ওপরেও এই মাকড়সাগুলোকে দেখা যায়।

>> ১৮৮৭ সালে ব্রিটিশ সার্ভেয়ার অব ইন্ডিয়া অ্যান্ড্রু ওয়া মাউন্ট এভারেস্টের নামকরণ করেছিলেন।

>> এভারেস্টের ৮,০০০ মিটার ওপর থেকে তাকে ‘ডেথ জোন’ বলা হয়। ওই জায়গায় বেশির ভাগ মানুষ ফ্রস্টবাইট, সঠিক গাইডেন্স না থাকা, পাহাড়ে অসুস্থতা, অক্সিজেনের অভাব প্রভৃতি কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এমনকি এর ফলে মৃত্যুও ঘটে।


সবচেয়ে ভয়ংকর পর্বতশৃঙ্গ

নাম তার কে-টু। হিমালয় পর্বতমালার কারাকোরাম পর্বত রেঞ্জভুক্ত এই পর্বতশৃঙ্গটি পাকিস্তানের গিলগিট-বালতিস্তান ও চীনের জিংজিয়ানের তাক্সকোরগান সীমান্তে অবস্থিত। এটির উচ্চতা ৮ হাজার ৬১১ মিটার। মাউন্ট এভারেস্টের তুলনায় কে-টু মাত্র ২৩৭ মিটার বা ৭৭৮ ফুট ছোট। এই পর্বতশৃঙ্গে আরোহণ করা অত্যন্ত দুর্গম হওয়ায় একে অনেকে জংলি পর্বত বলে পরিচয় দেয়। এ পর্বতে উঠতে গিয়ে বারবার ফিরে আসতে হয়েছে পর্বতারোহীদের। মার্কিন পর্বতারোহী জর্জ বেল ১৯৫৩ সালে পর্বত চূড়ায় ওঠার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। তিনি জানান, মনে হবে পর্বতশৃঙ্গ আপনাকে হত্যার চেষ্টা করছে। কারণ সেখানকার পরিবেশ ও আবহাওয়া মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। কে-টু পর্বতশৃঙ্গের সবচেয়ে কুখ্যাত স্থান হলো ‘বাটলনেক’ বা বরফপ্রপাত। ২০০৮ সালে এক তুষারধসে ‘বাটলনেকে’ ১১ জন পর্বতারোহী নিহত হন। ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি এক স্প্যানিশ পর্বতারোহী পর্বত থেকে নামার সময় পড়ে গিয়ে মারা যান। আবহাওয়ার নিষ্ঠুরতার কারণেই বেশির ভাগ মানুষ কে-টু পর্বতশৃঙ্গে ওঠার সাহস করেন না। সেখানে তুষারপাত ও ঝড় ঘন ঘন হয়। যা পর্বতে ওঠার ক্ষেত্রে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। কে-টু তে মৃত্যুর হার প্রায় ৩০ শতাংশ। এই পর্বতশৃঙ্গে প্রথম ১৯০২ সালে আরোহণের চেষ্টা করেন একটি অ্যাংলো-সুইস অভিযাত্রী দল এবং তাঁরা শৃঙ্গের উত্তর-পূর্ব ধার বরাবর ১৮ হাজার ৬০০ ফুট বা ৫ হাজার ৬৭০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত আরোহণে সমর্থ হন। অন্য অসফল প্রচেষ্টাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ১৯০৯ সালে লুইগি আমেদিও, ডিউক অব আবুরাজ্জির অভিযান এবং তাঁরা প্রায় ২০ হাজার ফুট বা ৬ হাজার ১০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত আরোহণ করেন। এরপর ১৯৩৮ সালে একটি আমেরিকান অভিযাত্রী দল চার্লস হাউস্টনের নেতৃত্বে প্রায় ২৬ হাজার ফুট বা ৭ হাজার ৯২৫ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত আরোহণ করেন। সম্প্রতি পর্বতারোহী ওয়াসফিয়া নাজরীন প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কে-টুর চূড়ায় পা রেখেছেন।


তুষারের পাঁচ ঐশ্বর্য আছে কাঞ্চনজঙ্ঘার

স্থানীয় শব্দ ‘কাং চেং জেং গা’ থেকে এসেছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। এই শব্দগুচ্ছের অর্থ তেনজিং নোরগে তাঁর বই ম্যান অব এভারেস্টে লিখেছেন, ‘তুষারের পাঁচ ধনদৌলত’। পাঁচটি পর্বত চূড়ার কারণে একে ‘তুষারের পাঁচ ঐশ্বর্য’ বলা হয়। এ ধনদৌলত ঈশ্বরের পাঁচ ভান্ডারের প্রতিনিধিত্ব করে- সোনা, রূপা, রত্ন, শস্য এবং পবিত্র পুস্তক। সিকিম ও দার্জিলিংয়ের স্থানীয়রা এই পর্বতকে পবিত্র বলে মনে করায় এর পূজা করে। সর্বোচ্চ উচ্চতার এই দৈত্যাকার পর্বতের দেখা পেতে প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক ভিড় জমান সেখানে।  এটির পাঁচ চূড়া আছে তাদের চারটির উচ্চতা ৮,৪৫০ মিটারের ওপরে।

কাঞ্চনজঙ্ঘা ভারতের অন্যতম এক সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। ১৮৫২ সালের আগে পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু শৃঙ্গ বলেই ধারণা করা হতো কাঞ্চনজঙ্ঘাকে। এখন এটি বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ পর্বত। এর উচ্চতা ৮,৫৮৬ মিটার বা ২৪,১৬৯ ফুট। কাঞ্চনজঙ্ঘা ভারতের সিকিম ও নেপালজুড়ে অবস্থিত। ১৯৫৫ সালের ২৫ মে ব্রিটিশ পর্বতারোহী দলের সদস্য জোয়ে ব্রাউন এবং জর্জ ব্যান্ড কাঞ্চনজঙ্ঘায় আরোহণ করেন। তাদের সিকিমের ধর্মগুরুর বিশেষ অনুমতি নিতে হয়েছিল। তারা চুক্তি করেছিলেন যে, তারা এ পর্বতের কোনো মর্যাদাহানি করবে না। এই দলের অন্য সদস্য হোন- জন এঞ্জেলো জেকসন এবং টম মেকিনন। ১৯৮৬ সালের ১১ জানুয়ারি, জের্জি কুকুচজকা এবং ক্রিজটোভ উয়িলিকি প্রথম শীতকালে কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়ায় উঠতে সক্ষম হোন। কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্যটকদের কাছে অন্যতম জনপ্রিয় একটি আকর্ষণ। আবহাওয়া ভালো থাকলে এ পর্বতের চূড়া পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও থেকেও দেখা যায়।


অনেকে বলে এভারেস্টের ছোটভাই লোৎসে

হিমালয়ে অবস্থিত আট কিলোমিটারেরও বেশি উচ্চতার পর্বত লোৎসে। চীন ও নেপালের সীমান্তে  থাকা এ পর্বত এভারেস্টের বেশ কাছে। এভারেস্ট থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরের এ পর্বত পর্যটকদের চোখ এড়ায় না। লোৎসেতে তিনটি চূড়া রয়েছে। যার প্রতিটির উচ্চতা আট কিলোমিটারের বেশি।  এই পর্বতটিকে উচ্চতম, সবচেয়ে বিপজ্জনক এবং আরোহণ করা কঠিন চূড়াগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

লোৎসে পর্বতের উচ্চতা ৮ হাজার ৫১৬ মিটার। পৃথিবীর চতুর্থ উঁচু পর্বত এটি। পর্বতের অবস্থান ভালোমতো পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে চীন, নেপাল এবং তিব্বত পর্যন্ত এর বিস্তৃতি। যারা লোৎসে আরোহণ করতে চান তাদের অনেকেই ক্ষেপাটে মনে করেন। এর দুর্গম পথ ও আবহাওয়ার প্রতিকূলতার কারণে জীবন বাজি রেখে এর চূড়ায় অভিযান চালাতে হয় পর্বতারোহীদের। লোৎসে পর্বতে তুলনামূলক কম পর্যটক ও পর্বতারোহী গিয়ে থাকেন। পর্বতটি জয়ের ব্যাপারে অভিযানের সংখ্যা কম নয়। ১৯৫৫ সালে প্রথম এ পর্বত জয়ের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়। সেটি সফল হয়নি। এর পরের বছর ১৮ মে প্রথম একদল সুইস অভিযাত্রী এর শীর্ষে আরোহণ করত সক্ষম হন। মাউন্ট এভারেস্টে যাওয়ার পথ ধরেই লোৎসে পর্বতে আরোহণ করতে হয়। এ পর্বতে ওঠার জন্য পর্বতারোহীদের জন্য দুটি পথ রয়েছে।  একটি উত্তরে অন্যটি দক্ষিণে।


দুর্গম মাকালুর গল্প

পরিসংখ্যান দিয়ে শুরু করা যাক। উইকিপিডিয়ার হিসাব বলছে, এই পর্বতে ২৩৪ জন আরোহণ করেছেন এবং ২৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। বলা হচ্ছে, পৃথিবীর পঞ্চম শীর্ষ পর্বত মাকালুর কথা। বিশ্বের অন্যতম দুর্গত পর্বত এটি। উচ্চতায় হিমালয়ের যে চারটি ৮ হাজার মিটার ছাড়ানো পর্বত রয়েছে তার একটি মাকালু। এ পর্বতটি রয়েছে চীন এবং নেপালের সীমারেখায়। মাউন্ট এভারেস্ট থেকে প্রায় ১৪ মাইল পূর্বদিকে এ পর্বত তিব্বতিদের কাছে বেশ পবিত্র। পর্বতমালার দিকে তাকালে মাকালু অনেকটাই বিচ্ছিন্ন একটি পর্বত বলে মনে হয়। বিশেষ করে এর চূড়ার আকৃতি সবার নজর কাড়ে। চৌকোণা পিরামিডের মতো দেখতে এটি। মাকালুর সর্বোচ্চ উচ্চতা ৮ হাজার ৪৮৫ মিটার। ১৯৫৫ সালে সর্বপ্রথম একদল ফরাসি অভিযাত্রী এ পর্বতের শীর্ষে আরোহণ করেন। ১৫ জুলাই প্রথম দিন দুজন মাকালুর চূড়ার পৌঁছান। পরের দিন আরও চারজন চূড়ায় পা রাখতে সক্ষম হন। জেন ফ্যাঙ্কোর এই অভিযানের পর বিশ্বজুড়ে মাকালুর কথা ছড়িয়ে পড়ে। তখন থেকেই আরোহণের জন্য এটি বিশ্বের অন্যতম কঠিন পর্বত হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। সে সময় পর্বতারোহণ ছিল কঠিন। প্রায় ১০ জনের একটি দল সেই ঐতিহাসিক পর্বতাভিযানে ছিলেন। মাত্র কয়েক বছর আগে মাকালু অভিযানে গিয়ে নিখোঁজ হন এক ভারতীয় বাঙালি পর্বতারোহী। সামিট সেরে ক্যাম্প ফোরে ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে যান হাওড়ার নিশ্চিন্দার বেলানগরের বাসিন্দা দীপঙ্কর ঘোষ। ওই একই জায়গায় মৃত্যু হয় আরেক পর্বতারোহীর।  ক্যাম্পে ফ্রস্টবাইটে মৃত্যু হয়েছে নারায়ণ সিংয়ের।


চো ইউ কাহিনি

বিড়ালের চোখের মণির মতো জ্বলজ্বল করছে এ পর্বতের চূড়া। দূর থেকে দেখলে ভিরমি খেতে হয় পর্যটকদের। রোদ ও আলো-ছায়ার খেলায় অনেকে নীলকান্তমণির বিশেষণ দিয়েছেন এ পর্বতকে। চো ইউ শব্দের মানে ‘বৈদূর্য দেবতা’। চো ইউ পৃথিবীর ষষ্ঠ উচ্চতম পর্বত। এর সর্বোচ্চ উচ্চতা ৮ হাজার ২০১ মিটার। হিমালয় পর্বতমালার চতুর্থ আট হাজারি ক্লাবের পর্বত এটি। আট হাজারি ক্লাবের পর্বতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সহজতম পর্বত বলা হয় একে। তবে এ কথা শুধু পেশাদার পর্বতারোহীদের জন্য। এখানে রয়েছে পিচ্ছিল বরফ। পর্বতারোহীরা এ পর্বতকে ভেজা পর্বত বলেও ডাকেন। তবে অপেক্ষাকৃত সহজ ঢাল পথ থাকায় পর্বতারোহীরা কিছুটা হলেও সুবিধা পান। নাগপা লা পাস থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে এ পাহাড়টি ১৯৫৪ সালের ১৯ অক্টোবর  সর্বপ্রথম একদল  অস্ট্রেলীয় অভিযাত্রী এর শীর্ষে আরোহণ করতে সক্ষম হোন। ২০১১ সালে এক ডাচ পর্বতারোহী এই পর্বতাভিযানে এসে প্রাণ হারান।


শ্বেত পর্বত

বরফের মতো শুভ্র, সাদা পর্বত। স্থানীয়দের ভাষায় চোখ ধাঁধানো শুভ্রতা। এসব কারণে ধবলগিরি পর্বতকে শ্বেত পর্বত বলেন বাঙালিরা। ধবলগিরি বিশ্বের সপ্তম উঁচু পর্বত। নেপালের এ পর্বতের চূড়ার উচ্চতা ৮ হাজার ১৬৭ মিটার। ১৯৬০ সালে একদল ইউরোপীয় অভিযাত্রী প্রথম এর শীর্ষে আরোহণ করে। অন্নপূর্ণা বেল্টে পর্বতারোহীদের খুব পছন্দের একটি পর্বত এটি। ১৯৯৯ সালে এক ব্রিটিশ পর্বতারোহী এখানে প্রাণ হারান। সে বছরই এক স্লোভেনিয়ান পর্বতারোহী একাই এ  পর্বতে রওনা করেছিলেন। তিনিও সফল হননি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর