একদিন সকালে দাদু ঘরের পাশে বাগানে বসে ছিলেন। তার একচোখা চশমা দিয়ে দূরের সব কিছু তিনি দেখতে পারছিলেন। হঠাৎ করে তিনি দেখতে পেলেন, বাগানের পুকুরের ধারে একটি মাছরাঙা পাখি বসে আছে। পাখিটা কেমন সুন্দর, রঙিন ডানার ছটা যেন রংধনুর মতো!
দাদুর মাথায় তখন এক দুষ্ট বুদ্ধি এলো। তিনি ভাবলেন, এই মাছরাঙাকে ধরে যদি বাচ্চাদের ভয় দেখাই, তাহলে বেশ মজা হবে!
দাদু ধীরে ধীরে মাছরাঙার দিকে এগিয়ে গেলেন। কিন্তু মাছরাঙা ছিল খুবই তীক্ষè দৃষ্টিসম্পন্ন। সে দাদুর উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে উড়ে চলে গেল। দাদু রেগে গিয়ে বললেন, আহা! একি মুশকিল!
পরের দিন আবার দাদু চেষ্টা করলেন। এবার তিনি একটি ফাঁদ পেতে মাছরাঙাকে ধরার পরিকল্পনা করলেন। তিনি পুকুরের পাশে কিছু ছোট ছোট মাছ রেখে দিলেন। ভেবেছিলেন, মাছরাঙা মাছ খেতে এলে ফাঁদে ধরা পড়বে।
মাছরাঙা দূর থেকে সবকিছু লক্ষ্য করছিল। সে জানত, দাদুর উদ্দেশ্য কী। তাই সে দাদুকে শিক্ষা দিতে ঠিক করল। মাছরাঙা উড়ে এসে ফাঁদের ঠিক উপরে বসল, কিন্তু মাছের দিকে গেল না। দাদু ভাবলেন, এবার তার পরিকল্পনা সফল হবে।
ঠিক তখনই মাছরাঙা ডানা ঝাপটিয়ে দাদুর মুখের উপর দিয়ে উড়ে গেল, আর তার পাখার ঝাপটায় দাদুর চশমা উড়ে গিয়ে পুকুরে পড়ল! দাদু হতবাক হয়ে গেলেন। তার দুষ্টমির এবার উল্টো ফল দিয়েছে!
শেষে দাদু বুঝলেন, প্রকৃতির প্রাণীরা তাদের নিজেদের মতো থাকতে ভালোবাসে। তাদের ধরে এনে মানুষকে ভয় দেখানো বা বিরক্ত করা উচিত নয়। দাদু হাসি মুখে বললেন, এবার থেকে আমি আর প্রকৃতির কোনো বন্ধুকে বিরক্ত করব না।
সেই থেকে দাদু আর কখনো মাছরাঙার সঙ্গে দুষ্টমি করার কথা ভাবেননি। বরং তিনি বাচ্চাদের প্রকৃতির প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা শেখাতে শুরু করলেন।