এই শরতে, পৃথিবী স্বল্প সময়ের জন্য একটি দ্বিতীয় চাঁদ পেতে চলেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় জানা গেছে, একটি প্রায় বাসের সমান আকারের গ্রহাণু পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে প্রায় দুই মাস ধরে পৃথিবীর চারপাশে ঘুরবে। এটিকে বিজ্ঞানীরা ‘মিনি মুন’ বলে অভিহিত করেছেন।
এই অস্থায়ী চাঁদ ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত পৃথিবীর সঙ্গী হবে। তারপর আবার নিজ বাসস্থানে, সূর্যের চারপাশে ঘুরতে থাকা গ্রহাণুপুঞ্জে ফিরে যাবে। গবেষণার প্রধান লেখক এবং মাদ্রিদ কমপ্লুতেন্সিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কার্লোস দে লা ফুয়েন্তে মার্কোস জানিয়েছেন, এই গ্রহাণুটি ‘আরজুনা গ্রহাণুপুঞ্জ’ থেকে আসছে, যা পৃথিবীর কক্ষপথের মতোই একটি কক্ষপথে ঘুরছে।
আরজুনা গ্রহাণুগুলো প্রায়ই পৃথিবীর কাছাকাছি আসে, প্রায় ২.৮ মিলিয়ন মাইল দূরে। তারা ধীরে ধীরে চললে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে অস্থায়ীভাবে পৃথিবীর উপগ্রহে পরিণত হয়। এই গ্রহাণুটির গতিবেগ প্রায় ২,২০০ মাইল প্রতি ঘণ্টা হওয়ায়, এটি পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে আগামী সপ্তাহ থেকে দুই মাসের জন্য পৃথিবীর একটি সাময়িক চাঁদে পরিণত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই গ্রহাণু সম্পূর্ণ কক্ষপথে পৃথিবীর চারপাশে ঘুরবে না, বরং এটি আংশিকভাবে পৃথিবীর চারপাশে আবর্তিত হবে। এই গ্রহাণুটি ৭ আগস্ট নাসা-সমর্থিত প্রোগ্রাম ‘অ্যাস্টেরয়েড টেরেস্ট্রিয়াল-ইম্প্যাক্ট লাস্ট অ্যালার্ট সিস্টেম (Atlas)’ দ্বারা আবিষ্কৃত হয়। এটি প্রায় ১০ মিটার লম্বা, যা আমাদের বর্তমান চাঁদের তুলনায় খুবই ছোট।
বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন, এই মিনি মুনটি আবার ২০৫৫ সালে পৃথিবীর কক্ষপথে ফিরে আসতে পারে। এর আগে, পৃথিবী ১৯৮১ এবং ২০২২ সালে দু’টি মিনি মুনের সাক্ষী হয়েছিল।
তবে, এই গ্রহাণুটি খুবই ছোট এবং ক্ষীণ হওয়ায় সাধারণ দূরবীন বা বাইনোকুলারের সাহায্যে দেখা সম্ভব হবে না। তবে পেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা তাদের শক্তিশালী টেলিস্কোপ দিয়ে এটি পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল