রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় কয়েক লাখ সেচ যন্ত্র দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে ভূ-গর্ভস্থ থেকে পানি উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে পানির স্তর নিচে নেমে গিয়ে কৃষি উৎপাদন হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। আবাদি জমি সেচ সংকটে পড়ছে। কৃষকদের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। ভূ-প্রকৃতি হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত। এ বিষয়ে আইন থাকলেও তা বাস্তবায়নের কোনো পদক্ষেপ নেই।
রংপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দেড় দশক থেকে এ অঞ্চলে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর আগাম নেমে যেতে শুরু করে। ১০/ ১৫ বছর আগেও ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাসে পানির স্তর ১৫ থেকে ২০ ফুট গভীরে থাকলে এখন অনেক স্থানে পানির স্তর ৩০ থেকে ৩৫ ফুট নিচেও পাওয়া যায় না। পানির প্রবাহ যখন স্বাভাবিক থাকে, তখন এ অঞ্চলে পানির স্তর ১২/১৫ ফুট নিচে পাওয়া যায়।
কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে যত্রতত্র গভীর ও অগভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করার ফলে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সূত্রমতে এই অঞ্চলে সেচ মৌসুমে সাড়ে ৩ থেকে ৪ লাখ গভীর ও অগভীর নলকূপ দিয়ে পানি উত্তোলন করে জমিতে সেচ দেয়া হয়। এর অধিকাংশই অপরিকল্পিতভাবে বসানো হয়েছে। কয়েক বছর আগে ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবস্থাপনা আইন পাস হলেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হযনি।এছাড়া তিস্তা, ধরলা, ঘাঘট, পদ্মা, যমুনাসহ বিভিন্ন নদ-নদীর স্বাভাবিক পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় এবং পর্যাপ্ত বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকা ও জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে এ অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতিতে দেখা দিয়েছে ব্যাপক পরিবর্তন।
সূত্র মতে, উত্তরাঞ্চলের রংপুরের বদরগঞ্জ, পীরগঞ্জ ও নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরে পানির স্তর সবচেয়ে বেশি নিচে নেমে যায়। শুকনো মৌসুমে এসব এলাকায় ৩০ থেকে ৪০ ফুটের নিচে পানি পাওয়া যায় না। এসবে মূল কারণ বলে মনে করা হচ্ছে অপরিকল্পিতভাবে ভূ-গর্ভস্থ থেকে পানি উত্তোলন।
এ প্রসঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি (ঢাকা) অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু সায়েম জানান, অপরিকল্পিতভাবে সেচযন্ত্র স্থাপনে কৃষকদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, নতুন করে গভীর নলকূপ স্থাপনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই