আমি মেধাবী, আমাকে গুলি করো। গুলির বিনিময়ে হলেও কোটা প্রথা সংস্কার চাই। সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না। গুলির বিনিময়ে কোটা সংস্কার চাই।
কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এসব স্লোগান দিতে থাকে। কোটা সংস্কার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আবারও উত্তাল হয়ে উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।
আজ সকাল ১০টা থেকে ক্লাস বর্জন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেয়। কোন বিভাগে ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়নি।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে আন্দোলনকারীরা ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদেরকে ক্যাম্পাসের ভিতরে কর্মসূচি চালিয়ে যেতে বলে। শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকে। এক পর্যায়ে প্রক্টরিয়াল বডি ও ছাত্রলীগ বাধা প্রদানের চেষ্টা করলে তাদেরকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে আন্দোলনকারীরা প্রধান ফটকের তালা ভেঙ্গে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে।
সকাল ১১ টা থেকে আন্দোলনকারীরা কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে কোটা বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী মহাসড়কে অবস্থান নেয়। ফলে রাস্তার দু'পাশে প্রায় তিন কিলোমিটার তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
এদিকে পুলিশ প্রশাসন অস্ত্রশস্ত্র সাজে আন্দোলনকারীদের বিপক্ষে অবস্থান করে। এর ফলে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক এলাকায় এখন চরম উত্তেজনামুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও ছাত্র-উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক থেকে ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে আন্দোলনকারীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।
আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিবেন বলে আমরা আশা করছি। আমাদের আন্দোলন কোন সহিংস আন্দোলন না। তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহাবুবর রহমান বলেন, ‘আমরাও কোটা সংস্কারের পক্ষে তবে মহাসড়ক আবরোধ না করে ক্যাম্পাসের ভিতরে শান্তিপূর্ণ ভাবে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করুক। এছাড়া মহাসড়কে অবস্থানকালে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার সার্থে আমরা সার্বক্ষণিক সেখানে ছিলাম।’
এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলের মোরশেদা বেগম নামের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রীর পায়ের রগ কেটে দেওয়ার ঘটনায় ছাত্রলীগ নেত্রী ইফফাত জাহান এশার অনতিবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন আন্দোলনকারীরা।
কোটা প্রথা সংস্কার চেয়ে আন্দোলনকারীদের প্রতি একত্ত্বতা জানিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. অলী উল্যাহ স্বাক্ষারিত এক প্রেস বার্তার মাধ্যমে একাত্ত্বতা ঘোষণা করেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরামও একত্ত্বতা জানিয়েছেন। শাপলা ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার