২৫ জুন, ২০১৯ ১৮:১৫

বরিশাল বোর্ডে বিএনপি-আওয়ামী লীগপন্থী গ্রুপের হাতাহাতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশাল বোর্ডে বিএনপি-আওয়ামী লীগপন্থী গ্রুপের হাতাহাতি

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে বিএনপিপন্থী ৮ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিতে কমিটি গঠন করাকে কেন্দ্র করে কর্মচারীদের দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। 

মঙ্গলবার দুপুরে পদোন্নতি সংক্রান্ত একটি প্রস্ততি কমিটি ঘোষণার পরপরই বোর্ড চেয়ারম্যানের কক্ষেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী  দুই দল কর্মচারীর মধ্যে হাতাতি হয়। পরে বিএনপিপন্থী  কর্মচারীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পরে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। 

শিক্ষা বোর্ড সচিবের কার্যালয় সূত্র জানায়, বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের স্থায়ী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পদোন্নতি দেওয়া যায় কিনা সে সম্পর্কে একটি সুপারিশমালা প্রণয়নের জন্য মঙ্গলবার তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। 

শিক্ষা বোর্ড সচিব প্রফেসর বিপ্লব কুমার ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত বশিবো/প্রশা/১৮/২০১৯/৬১৩ স্মারকে গঠিত ওই কমিটির আহ্বায়ক করা হয় বিদ্যালয় পরিদর্শক অধ্যাপক আব্বাস উদ্দিন খানকে। সদস্য করা হয় উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুন কুমার গাইন ও হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা মামুন হোসেনকে। 

এ কমিটি ঘোষণার পরপরই এর প্রতিবাদ জানিয়ে বোর্ড শ্রমিক লীগ সভাপতি কাজী আ. জলিলের নেতৃত্বে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে যায় শিক্ষা বোর্ডের আওয়ামী লীগ পন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা যাওয়ার পরপরই বোর্ড চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে প্রবেশ করে কর্মচারী সংঘের সাবেক সভাপতি বোর্ড শমিক দলের সভাপতি শহিদুল ইসলামসহ বিএনপিপন্থীরা। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন বোর্ডের কর্মচারী সংঘের বর্তমান সভাপতি আবু জাফর। এ সময় উভয় গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে বিএনপিপন্থী কর্মচারীরা আওয়ামী লীগ পন্থী কর্মচারীদের ওপর চড়াও হলে চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে বিএনপিপন্থী কর্মচারীরা বোর্ডে বিক্ষোভ করেন। 

বোর্ড শ্রমিকলীগ সভাপতি কাজী আ. জলির জানান, বিএনপিপন্থী কর্মচারীদের পদোন্নতি দেওবার জন্য কমিটি করার বিষয়টি জানতে পেরে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে যান তারা। তখন বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের নিয়ে শ্রমিক দল নেতা শহিদুল ইসলাম সেখানে প্রবেশ করে তাদের উপর চড়াও হয়। এরপর তারা বোর্ডে তাদের সংগঠন বিরোধী স্লোগান দিয়ে মিছিল করে। 

তিনি বলেন, বোর্ডে পদোন্নতির জন্য সিলেকশন কমিটি রয়েছে। এর বাইরে অন্য কোনো কমিটি গঠন করা বিধি বহির্ভূত। এ কারণেই তারা বাধা দেন। 

তবে শমিকদল সভাপতি ও বর্তমান সেকশন অফিসার শহিদুল ইসলাম বলেন, তারা তাদের কাজ করেছেন। তারা কারো ওপর হামলা করেননি। 

শিক্ষা বোর্ড প্রশাসন শাখা সূত্র জানায়, এখন পদোন্নতির তালিকার শীর্ষে যে ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে তার মধ্যে ৮ জন বিএনপির। এদের মধ্যে রয়েছেন সেকশন অফিসার সাবেক বিএনপিপন্থী কর্মচারী সংঘ সভাপতি সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সহকারী সচিব ও সাবেক বিএনপি পন্থী কর্মচারী সংঘ সভাপতি মো. মিজানুর রহমান, উচ্চমান সহকারী ও বিএনপিপন্থী কর্মচারী সংঘ সাংগঠনিক সম্পাদক এবি এম মিজানুর রহমান, সেকশন অফিসার ও বিএনপিপন্থী কর্মচারীসংঘের অর্থ সম্পাদক আহসানুল কবির। 

এছাড়া পদোন্নতি তালিকায় রয়েছেন বিএনপিপন্থী কর্মচারী সংঘ সদস্য ও সেকশন অফিসার সাজিয়া হাসান লুনা, হিসাব সহকারী জাহাঙ্গির আলম, ভারপ্রাপ্ত সেকশন অফিসার কে এম ফরিদ হোসেন ও সহকারী হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা মো. আ. ছালাম। আর এদের পদোন্নতির জন্য বোর্ড প্রশাসনকে চাপ দিচ্ছে বর্তমান কর্মচারী সংঘ সভাপতি আবু জাফর। আর এতে বাধা দেয় শমিকলীগ নেতারা। আর এতেই দুই গ্রুপে হাতাহাতি হয়। 

বোর্ড সচিব অধ্যাপক বিপ্লব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, তিনি চেয়ারম্যানের নির্দেশে একটি কমিটি করেন। চেয়ারম্যানই এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন। 

বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ইউনুস মুঠোফোনে বলেন, বোর্ডে একটি কমিটি করা হয়েছে। তবে সেটা পদোন্নতির জন্য নয়। বোর্ডে স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মকতা-কর্মচারী কতজন আছে, কতজন প্রয়োজন সেটা নিরূপণের জন্য এই কমিটি করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি। 


বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর