বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ৫ম ব্যাচের এক ছাত্রীকে শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। নির্যাতনের ৯দিন পর ঐ ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের এক প্রভাষক ও ৫ শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করে গতকাল সোমবার রাত ৯টার দিকে মেট্রোপলিটনের বন্দর থানায় এই অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন বন্দর থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন। অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, গত পহেলা মার্চ বিকেলে একাডেমিক ভবনের একটি কক্ষে গণিত বিভাগের একটি বিষয়ের পরীক্ষা শেষ হওয়ার নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ঐ ছাত্রীর উত্তরপত্র জোর করে টেনে নিয়ে তাকে হল থেকে বের করে দেন প্রভাষক সুজিত কুমার বালা। হল থেকে বেড়িয়ে সিড়ি বেয়ে নামার সময় সুজিত কুমারের যোগসাজশে মাস্ক পরিহিত আলিম সালেহীন, আরিফুল ইসলাম, আবদল্লাহ ফিরোজ, মো. হাফিজ এবং আসাদুজ্জামানসহ অন্যরা ঐ ছাত্রীর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তারা তার মুখে কাপড় গুজে হাতে থাকা জ্যামিতি বক্সের সুচালো কাটা দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে খুঁচিয়ে আহত করে। তারা তার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানেও হাত দেয়। তার তলপেটে, কোমর এবং উরুতেও আঘাত করা হয়। একজন তার ঘাড়ে কামড় দেয়। ঘটনার পর ঐ ছাত্রী গুরুতর আহত অবস্থায় বাসায় ফিরে যায়। কিন্তু নিরাপত্তাহীনতার কারণে ওইদিন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়নি নির্যাতিতা। এরপর তার অবস্থার অবনতি হলে ৪ মার্চ শেরে-ই বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করা হয় তাকে। পরদিন ৫ মার্চ উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া হয় ঐ ছাত্রীকে।
এ অবস্থার প্রতিকার ও বিচার চেয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এই অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতার বাবা। মেট্রোপলিটনের বন্দর থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ৯ মার্চ রাতে ঐ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর বাবা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
অভিযোগকারীর ছেলে জানান, দুই দিন ধরে তার বাবা অভিযোগ নিয়ে বন্দর থানায় ঘুরছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা নারী নির্যাতনের ধারা বাদ দিতে বলা হয়েছিলো। কিন্তু তার বাবা অভিযোগে অটল থাকলে পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করে। তবে সার্ভারে সমস্যার কারণ দেখিয়ে পুলিশ মামলা রুজু করতে সময়ক্ষেপণ করছে।
এদিকে এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মহিউদ্দিন সাব্বির ঐ নির্যাতিতার বাবার কাছে প্রভাষক সুজিত কুমার বালাকে এ মামলায় আসামি না করার অনুরোধ করেছেন বলে জানিয়েছেন তার বড় বোন। তবে মহিউদ্দিন সাব্বির এই অভিযোগ অস্বীকার করে তদন্ত কাজে ঐ ছাত্রীর পরিবারকে সহযোগিতার অনুরোধ করেছেন বলে জানান।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক