জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চুক্তির মেয়াদে শেষ করা যায়নি। এতে নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ায় প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি নতুন করে নির্মাণাধীন শিক্ষক-কর্মকর্তাদের আবাসিক ভবনগুলো অব্যবহৃত থাকার সম্ভাবনাও আছে।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ৪৪৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে চলমান অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) নিবিড় পরিবীক্ষণ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আবাসন সমস্যার সমাধান এবং শিক্ষা ও গবেষণার উন্নত পরিবেশ নিশ্চিতের লক্ষ্যে এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
আইএমইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের অক্টোবরে শুরু হওয়া প্রকল্পটির কাজ গত বছরের মার্চে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্পন্ন করা যায়নি। ফলে ব্যয় না বাড়ানোর শর্তে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত প্রকল্পের ২৪ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৫৬ শতাংশ কাজ চলমান রয়েছে। বাকি ২০ শতাংশ কাজ শুরুই করা হয়নি।
কাজ শুরু না করার তালিকায় রয়েছে, ১০ তলা বিশিষ্ট একটি প্রশাসনিক ভবন, জীববিজ্ঞান অনুষদের অনুভূমিক সম্প্রসারণ (৬তলা), কলা ও মানবিকী অনুষদের অনুভূমিক সম্প্রসারণ (৬তলা), গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদের অনুভূমিক সম্প্রসারণ (৬তলা), জহির রায়হান অডিটোরিয়ামের মডিফিকেশন, সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চের উন্নয়ন, ছাত্রীদের একটি খেলার মাঠ প্রস্তুতকরণ এবং রাস্তা (ব্রিজ ও ড্রেনসহ) নির্মাণের কাজ। বর্তমানে নির্মাণসামগ্রীর মূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে প্রকল্পের ব্যয়বৃদ্ধির আশঙ্কার কথা বলেছে আইএমইডি।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ শতাংশ শিক্ষক ও কর্মকর্তা ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে বসবাস করেন। জরিপে দেখা যায়, নতুন করে আবাসিক ভবন নির্মিত হলেও ৫৮ শতাংশ শিক্ষক ও কর্মকর্তা সেখানে থাকতে চান না। বাকি ৪২ শতাংশের মধ্যে ২৯ শতাংশ নতুন ভবনে উঠতে আগ্রহী। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারে বর্তমানে ৪৭২টি বাসা রয়েছে, যার মধ্যে ৬৭টি খালি রয়েছে। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের যারা কোয়ার্টারে থাকতে আগ্রহী তাদের অধিকাংশই নতুন ভবনে উঠতে চান।
এদিকে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের ধীরগতির কারণে ব্যয়বৃদ্ধি হলে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় হবে বলে মনে করছেন জাবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বর্তমানে প্রকল্পের প্রায় ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কয়েকটি কাজ শিক্ষার্থীদের বাধার কারণে শুরু করা যায়নি। আশা করছি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হবে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বিডি প্রতিদিন/এমআই