সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতীর আরাধনার পুরোদস্তুর প্রস্তুতি চলছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলে। রাত পোহালেই দেবীর আরাধনায় মাতবেন ভক্তরা। আজ রবিবার দেবীর মূর্তি স্থাপন ও পূজার কর্মযজ্ঞ দেখা যায় হলের উপাসনালয় ও মাঠে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুরো মাঠের চারপাশে মণ্ডপ বসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট-ইনস্টিটিউটের। ৭৪টি মণ্ডপ তৈরি করা হচ্ছে জগন্নাথ হলের মাঠে। সব পূজামণ্ডপেই চলছে শেষ মুহূর্তের কাজ। রাতের মধ্যেই মণ্ডপের কাজ শেষ করার তাড়াহুড়ো সবার মধ্যে। রাতের মধ্যেই কাজ শেষ করার নির্দেশ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। তবে কারো কারো কাজ শেষ হতে সকাল পর্যন্ত লাগতে পারে, সেটিও হল প্রকাশনের বিবেচনায় রয়েছে।
হলের মাঠে নিজ বিভাগের মণ্ডপের কাজ তদারকি করছিলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সুস্মিতা রানী মুন্সি । তিনি বলেন, এই আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকতে পেরে সত্যি ভালো লাগছে। আশা করছি রাতের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যাবে। কারো কারো সকাল পর্যন্ত লাগতে পারে। সোমবার ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত পুষ্পাঞ্জলি, এরপর প্রসাদ বিতরণ। তারপর আগত অতিথিদের আপ্যায়ন।
জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ ও পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক দেবাশীষ পাল বলেন, এবছর জগন্নাথ হলের পক্ষ থেকে একটি, বিভাগ ও ইনস্টিটিউশনগুলোর পক্ষ থেকে ৭২ টি এবং জগন্নাথ হলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে যুবাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি মণ্ডপের আয়োজন করা হয়েছে। মোট ৭৪টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। মণ্ডপের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে প্রত্যেক বিভাগ/ইনস্টিটিউটের পূজা কমিটির উপস্থিতিতে লটারির মাধ্যমে। পূজার সার্বিক কার্যক্রম তত্ত্বাবধানে হল প্রশাসনের মোট ১১ টি উপ-কমিটি কাজ করছে।
তিনি বলেন, 'গত জুলাই বিপ্লবের মধ্যদিয়ে আমরা বৈষম্যহীন ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার এক মহান প্রত্যয় গ্রহণ করেছি। এবারের সরস্বতী পূজা তাই এক ভিন্ন আঙ্গিকে আয়োজিত হতে চলেছে। ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ হলের উপাসনালয়ে দুদিনব্যাপী এ আয়োজনের মধ্যে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, প্রসাদ বিতরণ, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা, রক্তদান কর্মসূচি, ইত্যাদি রয়েছে। এছাড়াও হলের অভ্যন্তরে দর্শনার্থী শিশু-কিশোরদের চিত্তবিনোদন উপযোগী বেশ কিছু রাইড, খেলনা ও বিশুদ্ধ খাবার দোকানের ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে। আগত পুণ্যার্থীদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতার জন্য বেশ কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী নিয়োজিত থাকবে।'
তিনি আরও জানান,'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসন সার্বক্ষণিক ও কার্যকর তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে জগন্নাথ হল প্রশাসন হল উপাসনালয়ে তথা পূজামণ্ডপ থেকে শুরু করে সমগ্র হল প্রাঙ্গণের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় লোকবল ও কারিগরি সহায়তা দিয়ে আমাদের পাশে রয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), শাহবাগ থানা, ফায়ার সার্ভিস, বর্ডার গার্ড অফ বাংলাদেশসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা এজেন্সি।'
বিডি প্রতিদিন/মুসা