সিলেটে বেড়েই চলছে করোনা সংক্রমণ। সিলেটের চারটি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় প্রায় প্রতিদিনই সনাক্ত হচ্ছেন শতাধিক আক্রান্ত। ফলে বাড়ছে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা। হাসপাতালে আসা বেশিরভাগ রোগীরই প্রয়োজন পড়ছে অক্সিজেনের। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত রফতানি বন্ধ করে দেয়ায় সিলেটের কোভিড ডেডিকেটেড ‘শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল’-এ অক্সিজেন সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একই শঙ্কায় রয়েছে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালও। দুটি হাসপাতালেই অক্সিজেন সরবরাহ করে থাকে স্পেকট্রা অক্সিজেন কোম্পানী নামক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। ভারত থেকে আমদানি করে কোম্পানিটি অক্সিজেন সরবরাহ করে থাকে। ফলে ভারত থেকে আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অক্সিজেন নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। অক্সিজেন সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য হাসপাতালে অক্সিজেন উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
করোনা সংক্রমণের আগে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ছিল না সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা। সিলিন্ডার দিয়ে রোগীদের দেয়া হতো অক্সিজেন সেবা। কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে প্রস্তুত করার পর গেল বছরের ডিসেম্বরে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে স্থাপন করা হয় ১০ হাজার লিটারের প্ল্যান্ট। স্পেকট্রা অক্সিজেন লিমিটেডই স্থাপন করে এই প্ল্যান্ট। এরপর থেকে হাসপাতালটিতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু হয়।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন দেড় হাজার লিটার তরল অক্সিজেনের চাহিদা রয়েছে। ভারত থেকে আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর স্পেকট্রার পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে আগামীতে চাহিদা মতো অক্সিজেন সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কার কথা। অক্সিজেন ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ারও পরামর্শ দিয়েছে তারা। একদিকে, হাসপাতালে বাড়ছে রোগী, অন্যদিকে স্পেকট্রার সতর্কবার্তা। দুয়ে মিলে সংকেটর শঙ্কায় পড়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
যদিও হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. সুশান্ত কুমার মহাপাত্র জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত হাসপাতালে অক্সিজেনের কোন সংকট নেই। তবে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
এদিকে, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও চালু হয়েছে কোভিড চিকিৎসা। হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য খোলা হয়েছে আইসিইউ ইউনিট। প্রস্তুতি চলছে ২০০ শয্যার করোনা আইসোলেশন সেন্টারের। সিলেটের সর্ববৃহৎ এই হাসপাতালের দুটি প্ল্যান্টের মধ্যে একটিতে স্পেকট্রা ও অন্যটিতে লিনডা কোম্পানি অক্সিজেন সরবরাহ করে থাকে। লিনডার ১০ হাজার ও স্পেকট্রার ২০ হাজার লিটার রিজার্ভেশন প্ল্যান্ট রয়েছে। বর্তমানে অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও দেশে করোনা পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে গেলে অক্সিজেন সংকটের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ প্রসঙ্গে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় জানান, এখনো অক্সিজেনের কোন সংকট নেই। তবে সারাবিশ্বে যেভাবে করোনার দাপট বাড়ছে সেই অবস্থাকে বিবেচনায় রেখে সরকারি বড় হাসপাতালগুলোতে নিজস্ব অক্সিজেন প্ল্যান্ট করা জরুরি। এটা করা গেলে অক্সিজেনের সংকটে পড়তে হবে না।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন