সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে শহরে অনবরত পানি ঢুকছে। শহরের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এই অবস্থায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। সিলেটের বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে যেকোনো সময় পুরো সিলেট শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমাস্থ বরইকান্দি উপকেন্দ্রে পানি উঠে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই ওই পুরো দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো)। উপশহর উপকেন্দ্রেও পানি উঠেছে। ফলে ওই উপকেন্দ্রের আওতাধীন তিনটি ফিডারে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। পানি বৃদ্ধি পেলে পুরো উপকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিউবো কর্মকর্তারা।
এদিকে, বৃহস্পতিবার থেকে পানি উঠতে শুরু করে কুমারগাঁও ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রে। শুক্রবার পানি বেড়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। এই উপকেন্দ্র থেকে পুরো সিলেট বিভাগে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়ে থাকে।
কুমারগাঁও বিদ্যুৎকেন্দ্রে পানি ঢুকার খবর পেয়ে শুক্রবার ছুটে যান সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বিউবো কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীদের সাথে আলোচনা করে বিদ্যুৎকেন্দ্রের চারপাশে বাঁধ দিয়ে সেচের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের উদ্যোগ নেন। এরপর বিদ্যুৎকেন্দ্র রক্ষার কাজে নামে সেনাবাহিনী। বালু ও মাটিভর্তি বস্তা দিয়ে পানি আটকানো ও সেচ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী আবদুল কাদির জানিয়েছেন, কুমারগাঁও থেকে বিভিন্ন সাবস্টেশনের মাধ্যমে পুরো সিলেট বিভাগে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়ে থাকে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ করে দিতে হবে। এতে পুরো সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে। তবে সেনাবাহিনী ও সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু রাখার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
আবদুল কাদির আরও জানান, বর্তমানে বরইকান্দিস্থ উপকেন্দ্রটিতে পানি উঠে পড়ায় পুরো দক্ষিণ সুরমায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া নগরীর উপশহর উপকেন্দ্রে পানি ওঠায় ৩টি ফিডারে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। সবমিলিয়ে সিলেট নগরীর প্রায় ৫৫ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে, বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে গিয়ে ও তার ছিড়ে যাওয়ায় বন্যা আক্রান্ত উপজেলাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ