বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় সিলেট নগরী ও জেলার কয়েকটি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সিলেট নগরীর অন্তত ৫০টি এলাকা বন্যায় বিপর্যস্ত। এসব এলাকার মধ্যে বন্যায় বিপর্যস্ত উপশহরের বাসিন্দারা।
উপশহরের প্রবেশ কিংবা বের হওয়ার সবকটি পথে জলাবদ্ধতায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। খুব বেশি জরুরি প্রয়োজনে বাসাবাড়ি থেকে বের হতে লোকজন ব্যবহার করছেন নৌকা কিংবা ভোরা। ভ্যান কিংবা রিকশা পাওয়া হয়ে উঠেছে দুষ্কর। সবমিলিয়ে এলাকাটি নগরী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
চারদিকে থৈ থৈ পানি। রাস্তা, দোকানপাট, বাসাবাড়ি, ঘরের মধ্যে পানি। কোথা হাঁটু, কোথাও কোমর অবধি। সিলেট নগরীর অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত উপশহর এখন পুরো বিপর্যস্ত ও বেহাল। বৃহস্পতিবার থেকে এই এলাকার লোকজন বাসাবাড়ি ছেড়ে নিরাপদে আশ্রয় নিচ্ছেন। মাসের ব্যবধানে ফের ভয়াবহ বন্যায় অসহায় এই এলাকার বাসিন্দারা।
জানা গেছে, উপশহরের ৯৫% বাসাবাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। বহুতল ভবনের নিচতলার বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছেন। তাদের অধিকাংশ বাসা ছেড়েছেন বৃহস্পতিবার। যারা নিজেদের বাসাবাড়িতে দুর্ভোগ সয়ে থেকেছেন তাদেরকেও একের পর একে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
যোগাযোগের সর্বশেষ মাধ্যম হিসেবে রিক্সা চলাচল করছিল, সেগুলোও শুক্রবার থেকে প্রায় বন্ধ। বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) রাত থেকে বিদ্যুতহীন অবস্থায় এই এলাকার লোকজন। সেইসাথে রয়েছে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট।
খুব বিশেষ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এই এলাকার কোন লোকজন বাসাবাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। তাদের সাহায্যে বাইরে থেকেও কেউ যেতে হলে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। উপশহর প্রবেশের বিভিন্ন রাস্তা জলাবদ্ধ হয়ে পড়ার কারণে সেখানে ইঞ্জিনচালিত কোন ধরণের যানবাহন প্রবেশে বেগ পোহাতে হচ্ছে। শুক্রবার (১৭ জুন) সন্ধ্যা পর্যন্ত ছোট ছোট নৌকা ও ভ্যান দিয়ে লোকজনের বাসাবাড়ির জরুরি মালামালসহ উপশহর এলাকা ত্যাগ করতে দেখা গেছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী আবদুল কাদির জানিয়েছেন, উপশহর বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রেও পানি উঠেছে। ফলে ওই উপকেন্দ্রের আওতাধীন তিনটি ফিডারে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। তবে একই পরিস্থিতিতে রয়েছে সিলেট নগরীর সুরমা নদী তীরবর্তী বেশ কয়েকটি এলাকা। এসব এলাকার বাসিন্দারা বিভীষিকাময় দিনরাত পার করছেন।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর