সম্পত্তির জন্য বাংলাদেশে অনেক শিশু খুন হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন'র প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট এলিনা খান। তিনি বলেছেন, এখানে মেয়ে শিশুরা সেক্সুয়ালি বা নানাভাবে নিপীড়িত হচ্ছে। অন্যদিকে ছেলে শিশুদের বানানো হচ্ছে সম্পত্তি রক্ষার হাতিয়ার। আর এ কারণে ওই শিশুটি টার্গেটে পরিণত হয়ে অনেক সময় স্বজনদের দ্বারা খুন হচ্ছে।
শনিবার বিকেলে ইডব্লিউএমজিএল- এর কনফারেন্স রুমে বাংলাদেশ প্রতিদিন আয়োজিত 'আমাদের শিশু আমাদের দায়িত্ব' শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। বসুন্ধরা গ্রুপের টিভি চ্যানেল নিউজ টুয়েন্টিফোর'র হেড অব কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স সামিয়া রহমানের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম।
তিনি বলেন, পারিবারিকভাবেও শিশুরা প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হচ্ছে। এখানে শিশুরা দুইভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। প্রথমত শারীরিকভাবে, দ্বিতীয়ত মানসিকভাবে। পারিবারিকভাবে বিভিন্ন বিষয় শিশুর ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। এটা মানসিক নির্যাতন। আবার চাপিয়ে দেওয়া বিষয়ে কৃতকার্য হতে না পারলে মানসিক নির্যাতন শারীরিক নির্যাতনে রূপ নেয়। এছাড়া স্কুলে গেলে আবার জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে- তোমাকে এত নম্বর পেতেই হবে।
বর্তমান সময়ের বাবা-মায়ের কঠোর সমালোচনা করে এলিনা খান বলেন, বাবা-মায়েদের মূল্যবোধ, নৈতিকতা একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। তারা একটা গণ্ডিতে আবদ্ধ হয়ে গেছে। সারাক্ষণ তাদের মনের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলতে থাকে। প্রতিবেশিকে দেখলেই প্রশ্ন করেন- 'আপা, আপনার বাচ্চাকে কোন কোচিংয়ে দিয়েছেন?'' এই মানসিকতার চূড়ান্ত প্রভাব বাচ্চার ওপরে গিয়েই পড়ে।
ইদানিং প্রযুক্তির অনিয়ন্ত্রিত বিকাশে স্কুল পড়ুয়ারাও সহজেই পর্নআসক্তিতে জড়িয়ে পড়ছে বলে মন্তব্য করেন এ আইনজীবী। তিনি বলেন, সম্প্রতি একটি বড় স্কুলে আইসিটির লোকজন দিয়ে শিক্ষার্থীদের মোবাইল পরীক্ষা করা হয়। তাদের জানানো হয় কার মোবাইল কেমন তা দেখা হবে। দেখা যায়, ২০ জনের মধ্যে ১৮ জন বড়লোক বাবা-মায়ের সন্তান ক্লাস শুরুর ১৫ মিনিট আগে পর্নো সাইটে ঢুকেছেন। তারা না বুঝে, বয়সের কারণে ভুল করছে। কিন্তু বিষয়টা দেখার দায়িত্ব কার? এগুলো মাথায় রেখে করণীয় ঠিক করা জরুরি। সকল শিক্ষার্থীকে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে পারলে তাদেরকে ভুল পথ থেকে বের করে আনা সহজ হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি এমপি, পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ এমপি, নূরজাহান বেগম মুক্তা এমপি, আমাদের অর্থনীতি'র সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, উইমেন এন্ট্রারপ্রিনিয়রস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাসরিন আউয়াল মিন্টু, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, রাজনীতিক শামা ওবায়েদ, নিউজ টুয়েন্টিফোর'র প্রধান বার্তা সম্পাদক শাহনাজ মুন্নী, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি'র অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর সুলতানা রহমান, শিক্ষক ফাহিমা খানম চৌধুরী মনি, কবি মোহন রায়হান প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/১২ মার্চ ২০১৬/ এস আহমেদ