সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) কেন্দ্রিয় সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন গণতন্ত্রের পূর্ব শর্ত। এজন্য নির্বাচন কমিশন অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পূর্ব শর্ত, তবে এটা (কমিশন) যথেষ্ট নয়। এটা নেসেসারি কন্ডিশন, সাফিশিয়েন্ট নয়। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী ও মেরুদন্ড সম্পন্ন নিরপেক্ষ হতে হবে। সাথে সাথে নির্বাচনকালীন সরকারকেও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।
‘সচেতন, সংগঠিত ও সোচ্চার জনগোষ্ঠিই গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ’ শ্লোগান নিয়ে সুজনের বরিশাল আঞ্চলিক পরিকল্পনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকালীন সময়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রশাসনের কর্মকর্তারা যদি নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল আচরণ না করেন, তাহলে সবচেয়ে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনও সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারবে না।
শনিবার দুপুরে নগরীর ফকির বাড়ি রোডের শিক্ষা ভবনের বিএনডিএন মিলনায়তনে পরিকল্পনা সভায় ড. বদিউল আলম আরও বলেন, আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আজ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। কেউ কেউ বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা খাদে পড়ে গেছে। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় কয়েকটি বৈশিষ্ট থাকে। গণতান্ত্রিক যাত্রা পথের সূচনা হয় একটা নির্বাচনের মাধ্যমে। এখন তো অনেক ক্ষেত্রে নির্বাচনে আর ভোট দিতে হয়না। নির্বাচনের ফলাফল আগেই নির্ধারিত হয়ে থাকে। নির্বাচনী ব্যবস্থা আজ পর্যদুস্থ। নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম। এটা গণতন্ত্রের যাত্রা পথের জন্য অশনি সংকেত।
তিনি বলেন, একজন পাহাড়াদার নিয়োগ করতে গেলেও আমরা খোঁজ খবর এবং সাক্ষাৎকার নিয়ে থাকি। না জেনে শুনে পাহাড়াদারও নিয়োগ দেইনা। অফিসার এবং বড় পদে নিয়োগ হলে অনেকবার সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। কিন্ত নির্বাচন কমিশনে যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে, তাদের কারোর কোন সাক্ষাৎকার নেয়া হয়নি। সার্চ (অনুসন্ধান) কমিটি অনেককে চেনেনও না। কিন্ত তাদের নামও সুপারিশ করা হয়েছে। সার্চ কমিটি যাদের নাম সুপারিশ করলো, কি কারণে এবং কি যুক্তিতে তাদের নাম সুপারিশ করা হয়েছে- সেটাও প্রকাশ করা হয়নি। একই সঙ্গে বিশিষ্ট নাগরিকদের কাছ থেকে নেয়া পরামর্শ কিভাবে কতটুকু সার্চ কমিটি গ্রহণ করেছে সেটাও জানানো দরকার। মূল কথা হচ্ছে যদি নামগুলো প্রকাশ করে জনগণের আস্থার জায়গায় নেয়া হতো, তাহলে অনেক প্রশ্নের উর্ধ্বে থাকতে পাড়তো। সার্চ কমিটি নাম প্রকাশ না করে কিভাবে জনস্বার্থ সংরক্ষণ করলো, সেটা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে।
জেলা সুজনের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আক্কাস হোসেনের সভাপতিত্বে আঞ্চলিক পরিকল্পনা সভায় বক্তব্য রাখেন সুজনের কেন্দ্রিয় সমন্বয়কারী দিলিপ কুমার সরকার, বরিশাল জেলা সুজনের সম্পাদক কাজল ঘোষ, পিরোজপুর জেলা সভাপতি মনিরুজ্জামান নাসিম আলী এবং জেলা মহিলা পরিষদের সহ-সভাপতি অধ্যাপক শাহ্ সাজেদা প্রমুখ।
আঞ্চলিক কর্মপরিকল্পনা সভায় বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার সুজনের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। সভার শেষ পর্যায়ে নৃত্যানুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/হিমেল