লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেছেন, বিংশ শতাব্দীতে দুই দুইটি বিশ্বযুদ্ধ হয়েছে। সেই বিশ্বযুদ্ধে দেখা গেছে, যুদ্ধ দিয়ে পৃথিবীর সমস্যার সমাধান হয় না। এজন্য শান্তির জন্য অহিংস নীতি অপরিহার্য।
বুধবার সকালে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস উপলক্ষে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
সংগঠনটির সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন সুজনের ঢাকা মহানগর সমিতির সহ-সভাপতি মো. নাদিম হোসেন, সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম, অর্থ সম্পাদক মো. শহীদুল্লাহ, ঢাকা জেলা সমিতির অর্থ সম্পাদক মাহবুবুল হক, সহ-সম্পাদক সেলিনা হোসেন, বিকশিত নারী ঐক্যের সভাপতি রাশিদা আক্তার শেলী প্রমুখ।
মানববন্ধনে সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, হিংসা দিয়ে পৃথিবীতে কখনোই কোনো সমস্যার সমাধান হয়নি। আজ সারাবিশ্বে সম্প্রদায়ে-সম্প্রদায়ে, জাতিতে-জাতিতে যে বিদ্বেষ-হিংসা ছড়িয়ে পড়েছে, তা থেকে মানবজাতিকে রক্ষা করার জন্য মহাত্মা গান্ধীর অহিংস বাণী অব্যর্থ ওষধ।
সামরিক অস্ত্রের বিপরীতে অহিংসার অস্ত্র গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে তিনি বলেন, এদেশের মানুষ শান্তি প্রিয়। আমরা সব সময় শান্তির জন্য চেষ্টা করেছি। আমরা সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে মিলনের কথা বলেছি। একটি অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। আমরা সে লক্ষ্যে অবিচল। সংঘাতমুক্ত সমাজ, সংঘাতমুক্ত পৃথিবী, যুদ্ধমুক্ত বিশ্ব গঠনে মহাত্মা গান্ধীর দর্শন অত্যন্ত উপযোগী।
সভাপতির বক্তব্যে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, একটি গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গড়ে তোলার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণপণ যুদ্ধ করেছিলেন। এমন একটি দেশ তারা চেয়েছিলেন, যেখানে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এবং সম্প্রীতি বিরাজ করবে। কিন্তু বর্তমানে চারদিকে রাজনীতি, ধর্মসহ বিভিন্ন কারণে হানাহানি, দ্বন্দ্ব আর সহিংসতা দেখা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সহিংসতা, দ্বন্দ্ব, হানাহানি আমাদের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করছে। তাই আমাদের এগিয়ে যেতে হলে এই দ্বন্দ্ব-হানাহানির অবসান করতে হবে, সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
মানববন্ধন থেকে কয়েক দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে আছে, রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার ও ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, প্রচলিত নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তন করে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন পদ্ধতি চালু, নির্বাচন ব্যবস্থাকে পরিপূর্ণভাবে ত্রুটিমুক্ত ও পরিশুদ্ধ করা এবং গুম, খুন ও অপহরণসহ বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা প্রভৃতি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন