২১ নভেম্বর, ২০১৯ ১৭:০১

স্ত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণের কারণে স্বামীর হাতে ব্যবসায়ী খুন

পঞ্চগড় প্রতিনিধি :

স্ত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণের কারণে স্বামীর হাতে ব্যবসায়ী খুন

পঞ্চগড়ে মস্তকবিহীন একটি লাশ উদ্ধারের একমাস পর হত্যা রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর মামলার প্রধান দুই আসামি গতকাল বুধবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। বউয়ের সঙ্গে অশালীন আচরণের কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে বৃহস্পতিবার পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস বিফ্রিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী।

তিনি জানান, গত ১০ অক্টোবর তেতুলিয়া উপজেলার ব্রক্ষ্মতোল গ্রামের ঝিকদহ ব্রেজির নিচে একটি মস্তকবিহীন লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। বিকেলে লাশটির পরিচয় মিললেও ৫ দিন পর একটি চা বাগান থেকে লাশের মাথা উদ্ধার করা হয়। নিহত ওই ব্যবসায়ী  নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের মৃত আলী করিমের ছেলে আব্দুর রব কাঁচামাল ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। এ ঘটনায় তেতুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয় এবং মামলার তদন্ত ভার দেয়া হয় গোয়েন্দা পুলিশের উপর। মামলার পরপরই সন্দেহভাজন দু’জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা হলেন যুগিগজ গ্রামের মৃত আজিজার রহমানের ছেলে রুবেল এবং  ব্রক্ষ্মতোল গ্রামের নিজামউদ্দিনের ছেলে আব্দুল বারেক। তাদেরকে রিমান্ডে নেয়া হলে নানা তথ্য উঠে আসে। পরে প্রধান আসামি মানিকের স্ত্রী আফরোজাকে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে আরও তথ্য উঠে আসে। মানিকের স্ত্রী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। পলাতক মানিক ও তার ছেলেকে গত ১৯ নভেম্বর পার্শ্ববর্তী জেলা নীলফামারী থেকে আটক করা হয়। ২০ নভেম্বর তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়।

জবানবন্দীতে তারা জানায়, গত ১৫ নভেম্বর নিহত আব্দুর রব শালবাহান এলাকার কাঁচামাল ব্যাবসায়ী মানিকের বাড়িতে প্রায় দশ লক্ষ নগদ টাকাসহ মরিচ কেনার জন্য আসে। মানিকের সাথে তার দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল। সে প্রায়ই মানিকের বাড়িতে রাতযাপন করতো। রাতযাপন করার সময় মানিকের স্ত্রীর সঙ্গে সে অশালীন আচরণ করতো। ঘটনার দিন গত ১৭ অক্টোবর পঞ্চগড় থেকে একই মোটরসাইকেলে আব্দুর রবকে নিয়ে রাতে বাড়িতে ফেরে মানিক ও তার ছেলে আমান । রাতের খাবার শেষে গল্পগুজবের পর মানিক ও নিহত রব একই বিছানায় শুয়ে পড়েন। গভীর রাতে মানিক ঘুমন্ত রবের বুকে ছুরি বসিয়ে দেয়। সে জেগে ওঠার সাথে সাথে ওই ছুরি দিয়ে গলায় আঘাত করে। মানিক রবের মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। পরে গভীর রাতে ছেলে আমানসহ রবের লাশ ও খণ্ডিত মাথাটি ব্যাগে ভরে ঝিকদহ ব্রিজের নিচে লাশটি ফেলে দেয়। মাথাটি ফেলে দেয় আজিজ নগর এলাকার একটি চা বাগানে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি এবং রবের মোবাইল ফোন দুটি ভিন্ন পুকুরে ফেলে দেয়।

পুলিশ সুপার জানায়, পরে মোবাইল ফোন ও ছুুরি উদ্ধার করেছে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর মানিক ও তার ছেলে আমান পালিয়ে যায়। গত ১৯ নভেম্বর এই দুই আসামিকে নীলফামারী জেলা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ওই হত্যার সাথে গ্রেপ্তারকৃত অন্যান্য আসামি এবং আরও কোন যোগসূত্র আছে কিনা তা নিয়ে কাজ করছে পুলিশ। সমস্ত তথ্য একত্র করে চার্জশিট দেয়া হবে। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাঈমুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার( সদর সার্কেল) সুদর্শন কুমার রায়সহ গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থতি ছিলেন  ।

বিডি-প্রতিদিন/শফিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর