বুধবার, ৯ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

সৈয়দ আশরাফের কুলখানি ও স্মরণসভা

নিজস্ব প্রতিবেদক

সৈয়দ আশরাফের কুলখানি ও স্মরণসভা

সদ্যপ্রয়াত জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কুলখানি সম্পন্ন হয়েছে।গতকাল রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে অনুষ্ঠিত এ কুলখানিতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদসহ নানা শ্রেণি-পেশার বিপুলসংখ্যক মানুষ অংশ নেন। সৈয়দ আশরাফের পরিবার এ কুলখানির আয়োজন করে। আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কুলখানিতে তার আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এতে আরও অংশ নেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগ সভাপতিম লীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, উপদেষ্টাম লীর সদস্য গওহর রিজভী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সাবেক ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া প্রমুখ। নাগরিক শোকসভা : সদ্যপ্রয়াত আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনপ্রশাসনমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ছিলেন বিরল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। দলমতনির্বিশেষে সব মানুষের কাছেই তিনি অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন। সৈয়দ আশরাফ তার সহকর্মী ও সহযোদ্ধাদের যে কথাটি জোর দিয়ে বলতেন, তা হলো- ‘রাজনীতি করতে চাইলে দুর্নীতি ছাড়তে হবে। আর দুর্নীতি করলে রাজনীতি ছাড়তে হবে।’ গতকাল সকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ হানিফ অডিটোরিয়ামে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম স্মরণে আয়োজিত এক নাগরিক শোকসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। তারা বলেন, সততা, নম্রতা, সরলতা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে সর্বজনশ্রদ্ধেয় করে তুলেছিল। এমন চিত্র রাজনীতির অঙ্গনে বিরলই বটে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নাগরিক শোকসভায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, পরিবেশ আন্দোলনের সহসভাপতি স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত আস্থাভাজন, বিশ্বাসী, অনুগত নেতা ছিলেন সৈয়দ আশরাফ। তার মতো নেতা রাজনৈতিক জীবনে হাতে গোনা কয়েকজন পাওয়া যায়। আওয়ামী লীগের মতো এত বড় একটি দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও তার মধ্যে অহংকার ছিল না। রাজনৈতিক কোনো নেতা-কর্মী কখনই বলতে পারবেন না সৈয়দ আশরাফ তাদের সঙ্গে কখনো জোরে বা ধমক দিয়ে কথা বলেছেন। তিনি সব সময়ই ছিলেন বিনয়ী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের প্রতিটি জানাজায় বিপুলসংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। এ থেকে আমরা বুঝতে পারি তিনি সবার কাছে কতটা জনপ্রিয় ছিলেন। রাজনৈতিক, সামাজিক, পারিবারিক জীবন তিনি অতিবাহিত করেছেন সততার মাধ্যমে। একজন রাজনৈতিক নেতার কাছে এমনটাই আশা করে সব মানুষ। তাই সৈয়দ আশরাফ অনুকরণীয় হওয়া উচিত সব নেতার কাছেই।

আলোচকরা বলেন, দেশে ১/১১-এর সময় থেকে শুরু করে একটি কঠিন সময়ে সৈয়দ আশরাফ আওয়ামী লীগের মতো একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। দীর্ঘ সময়ে সৈয়দ আশরাফ পদ-পদবি ব্যবহার করে ব্যক্তিগত সুবিধা নিয়েছেন বা জ্ঞাতসারে কাউকে অন্যায় সুবিধা দিয়েছেন, এ রকম অভিযোগ কেউ করতে পারবেন না।

সৈয়দ আশরাফ তার সহকর্মী ও সহযোদ্ধাদের যে কথাটি জোর দিয়ে বলতেন, তা হলো রাজনীতি করতে চাইলে দুর্নীতি ছাড়তে হবে। আর দুর্নীতি করলে রাজনীতি ছাড়তে হবে। পদের গরিমা সৈয়দ আশরাফকে কখনো আচ্ছন্ন করেনি। তার ব্যক্তিত্ব পদের চেয়ে বড় ছিল।

সর্বশেষ খবর