সোমবার, ২০ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

জুলাই থেকে বেতনের আওতায় পিপি-জিপি

আরাফাত মুন্না

আগামী জুলাই মাস থেকে বেতন কাঠামোর আওতায় আসছেন নিম্ন আদালতের আইন কর্মকর্তারা (পিপি-জিপি)। এ লক্ষ্যে আয়তন ও জনসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে জেলাগুলোকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে এ ক্যাটাগরি বা শ্রেণিতে বড় জেলাগুলোতে দায়িত্ব পালন করা পিপি-জিপি ও সমমর্যাদার আইন কর্মকর্তাদের ৫০ হাজার টাকা, বি ক্যাটাগরিতে মাঝারি জেলাগুলোতে কর্মরত আইন কর্মকর্তাদের ৪৫ হাজার টাকা এবং সি ক্যাটাগরিতে ছোট জেলাগুলোতে কর্মরত পিপি-জিপিদের ৪০ হাজার টাকা বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত             প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির পর অর্থ বরাদ্দ চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। আইন মন্ত্রণালয় সূত্র বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। বেতন বৃদ্ধির এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই স্বাধীন প্রসিকিউশন সার্ভিস গঠনের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, এতদিন একজন পিপি মাত্র তিন হাজার টাকা মাসিক রিটেইনার ফি বা ভাতা পেতেন।

 ফলে স্বাভাবিকভাবেই মামলা পরিচালনায় তাদের আগ্রহ কম থাকত। মামলা নিষ্পত্তিতেও বিলম্ব হতো। পিপি-জিপিদের বেতন কাঠামোর আওতায় আনা হলে জবাবদিহিতা বাড়বে। ফলে মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি হলে জটও কমবে বলে মনে করেন তারা।

আইন মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, জিপি-পিপি ও সমমানের আইন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি নিচের পদগুলোর আইন কর্মকর্তারাও বেতন কাঠামোর আওতায় আসছে। সে ক্ষেত্রে প্রতি ক্যাটাগরির জেলার পিপি-জিপিদের তুলনায় অতিরিক্ত পিপি-জিপি পাঁচ হাজার টাক কম হারে বেতন পাবেন। তাদের থেকেও পাঁচ হাজার টাকা কম বেতন পাবেন সহকারী পিপি ও সহকারী জিপিরা।

সূত্রটি আরও জানায়, বেতন কাঠামোর আওতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে দৈনিক হাজিরা ভাতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে পিপি-জিপিদের। নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হওয়ার পর পিপি ও সমমর্যাদার আইন কর্মকর্তারা পূর্ণ দিবসের ৭৫০ টাকা এবং অর্ধদিবস কাজের জন্য ৫০০ টাকা হাজিরা ভাতা পাবেন। একই সঙ্গে নিচের পদগুলোর আইন কর্মকর্তাদের দৈনিক ভাতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে নতুন বেতন কাঠামোতে।

আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর উইংয়ের উপ-সলিসিটর (জিপি-পিপি) মো. মনিরুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বর্তমানে দেশের ৬৪ জেলায় জিপি-পিপি, অতিরিক্ত পিপি-অতিরিক্ত জিপিসহ প্রায় ২ হাজার ৮০০ জন আইন কর্মকর্তা কাজ করছেন। পিপিরা বর্তমানে মাসে তিন হাজার টাকা রিটেইনার ফির সঙ্গে পূর্ণ দিবস কাজ করলে ৫০০ টাকা এবং অর্ধদিবস কাজ করলে ২৫০ টাকা হারে হাজিরা পান। আর জিপিরা মাসে তিন হাজার টাকা রিটেইনার ফি পেলেও দৈনিক কোনো হাজিরা পান না। বছর শেষে নিষ্পত্তিকৃত মামলার মূল্যমান হিসাব করে তারা একটা ফি পান। যা পাঁচ হাজার টাকার বেশি নয়। তিনি বলেন, বেতন-ভাতা বৃদ্ধির বিষয়টি সরকারি আইনজীবীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। বর্তমান সরকার আইনজীবীদের সেই দাবি পূরণ করতে যাচ্ছে। আইন কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি মামলাজট কমাতেও ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এক কথায় বলতে গেলে নিম্ন আদালতের আইন কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা স্বাধীন প্রসিকিউশন সার্ভিস গঠনের দিকে একধাপ এগিয়ে গেলাম। বর্তমানে আমাদের প্রসিকিউশন সার্ভিসে যারা কাজ করেন তাদের নামমাত্র ভাতা দেওয়া হয়। স্বাধীন প্রসিকিউশন সার্ভিস করতে গেলে এত কম বেতনে কেউ আসবেন না।

সর্বশেষ খবর