শনিবার, ১ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

খুলনায় যানজটের নেপথ্যে ইজিবাইক!

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

খুলনায় যানজটের নেপথ্যে ইজিবাইক!

নিয়ন্ত্রণহীন ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের চাপে খুলনা এখন যানজটের নগরী। ঈদ সামনে রেখে ভোগান্তির শেষ নেই নগরবাসীর। যত্রতত্র পার্কিং, ট্রাফিক আইন ভঙ্গ, সড়ুকে অপরিকল্পিত উন্নয়ন কাজ ও বেপরোয়া দখলবাজির কারণে যানজট বাড়ুছে।

জানা যায়, নগরীতে বর্তমানে প্রায় ২০ হাজার ইজিবাইক চলাচল করছে। যার বেশির ভাগ চালকের কোনো প্রশিক্ষণ নেই। চালকরা যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করায়। একই সঙ্গে একাধিক লেন দিয়ে ইজিবাইক চলাচল করায় সব সময় যানজট লেগেই থাকে। পথচারী পারাপারে জেব্রাক্রসিং ও অত্যাধুনিক ট্রাফিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা না থাকাও যানজটের জন্য দায়ী।

সরেজমিন দেখা গেছে, নগরীর খানজাহান আলী রোড, ফুল মার্কেট, শান্তিধাম মোড়ু, সাত রাস্তার মোড়ু, ফেরিঘাট, ময়লাপোতা, ডাকবাংলা মোড়ু, শিববাড়ি, পিকচার প্যালেস মোড়ু, সামছুর রহমান রোডগুলো থাকে ইজিবাইকের দখলে। যানজট ছড়িয়ে পড়েছে মূল সড়ুক থেকে অলিগলিতেও। ঈদে নিউমার্কেট, শপিং কমপ্লেক্স, পিকচার প্যালেস মোড়ু, ক্লে রোডসহ বাজার কেন্দ্রিক সড়ুকগুলোতে যানজট অসহনীয় হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে সড়ুক মেরামত ও মসজিদ উন্নয়ন কাজে পাওয়ার হাউস মোড়ু, ফেরিঘাট লেন ও ময়লাপোতা মোড়ের একাংশ বন্ধ থাকায় আশপাশের সড়ুকে যানচলাচলের চাপ বেড়েছে। পাশাপাশি নগরীর ডাকবাংলা মোড়ু, পিকচার প্যালেস, খুলনা থানার মোড়ুসহ বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক বিভাগ যানবাহন চলাচল সীমিত করলেও দুর্ভোগ কমেনি। ভোগান্তিতে পড়া যাত্রীরা বলেন, শহরের মধ্যে ইজিবাইক চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার কারণেই যানজট বাড়ুছে। যানজট সামলাতে ট্রাফিক পুলিশকেও হিমশিম খেতে হয়। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলা সম্পাদক অ্যাডভোকেট কুন্ডদরত ই খুদা বলেন, সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়হীনতা যানজটের বড়ু কারণ। ভোগান্তি থেকে উত্তরণ ঘটাতে ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে। তবে যানজট নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছে প্রশাসন। এরই মধ্যে সিটি করপোরেশনের বৈঠকে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইকে একই রং ও গাড়ির ডান পাশ বন্ধ রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেসিসির প্যানেল মেয়র আলী আকবার টিপু বলেন, ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণে লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। নগরীতে আর লাইসেন্সবিহীন কোনো ইজিবাইক চলতে দেওয়া হবে না। এছাড়া রিকশা থেকে মোটর ও ব্যাটারি অপসারণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।এর আগে গত ১৫ জানুয়ারি থেকে বাইরের ইজিবাইক নগরীতে প্রবেশ বন্ধ করে দেয় কেসিসি। এ জন্য নগরীর আটটি প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসায় কেসিসি ও ট্রাফিক পুলিশ। তবে ১৫-২০ দিন পর থেকে এ কার্যক্রম অনেকটা অচল হয়ে পড়ে। কেসিসির মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, রাস্তা ও ফুটপাথ থেকে হকার উচ্ছেদ করা হয়েছে। এবার ব্যাটারিচালিত ইজিবাইককে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলে যানজট কমবে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান মিঠু বলেন, ঈদে বিপণি বিতান, শপিংমল, বাজার এলাকায় যানজট নিরসনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ফুটপাথ অবৈধ দখলমুক্ত করা ও সড়ুকে শৃঙ্খলা ফেরাতে ট্রাফিক বিভাগ কাজ করছে।

সর্বশেষ খবর