বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

কচুরিপানা খেতে হবে কেন, দেশে কি দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে?

সংসদে রওশন এরশাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেছেন, ‘কাগজে দেখলাম, আমাদের পরিকল্পনামন্ত্রী কচুরিপানা খেতে বলেছেন। কচুরিপানা খেতে হবে কেন, আমাদের দেশে কি দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে? গরুর খাদ্য মানুষ খেতে পারে, না মানুষের খাবার গরু খেতে পারে? ঘাসের মধ্যে তো অনেক ভিটামিন আছে, তবে আমরা ঘাস খাই না কেন?’

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ সংসদের ষষ্ঠ অধিবেশনে গতকাল রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনা ও সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রওশন বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সম্ভাবনার দেশ হিসেবে সারা দুনিয়া এখন আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের সব যোগ্যতা অর্জন করেছে। কিন্তু এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে সমস্যা, সংকট তথা চ্যালেঞ্জ কম নয় আমাদের সামনে। বিশ্বব্যাংক বলেছে, এক দশক ধরে উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও দেশে বৈষম্য সূচক বেড়েছে। ধনী-গরিবের মধ্যে যে বৈষম্য, এটা দূর করা দরকার। তা  না হলে কাক্সিক্ষত দারিদ্র্য বিমোচন সম্ভব নয়।’ বক্তব্যের এক পর্যায়ে বলেন, নারী ক্ষমতায়ন কোথায়? তার এই প্রশ্নে সংসদে উপস্থিত সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেসে ফেলেন এবং আঙ্গুলের ইশারায় স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতার প্রতি ইঙ্গিত করেন। এ সময় সংসদে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। কিন্তু এরপরও বিরোধীদলীয় নেতা তার বক্তব্যে দৃঢ় থাকেন।

চিনিকলগুলোর লোকসান ১ হাজার ৮ কোটি টাকা : শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন জানিয়েছেন, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের অধীনে সরকারি খাতে ১৫টি চিনিকল রয়েছে। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে মোট লোকসানের পরিমাণ ১ হাজার ৮ কোটি ৩৮ লাখ ১১ হাজার টাকা। তবে চিনিকলগুলোর লোকসান কমানোর জন্য ইতিমধ্যে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

সরকার বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি দিয়েছে ৫২ হাজার ২৬০ কোটি টাকা : বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সংসদে জানিয়েছেন, সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতে বিক্রয় মূল্য ও সরবরাহ ব্যয়ের মধ্যে পার্থক্যের কারণে সরকারকে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। সরকার গত একদশকে এ খাতে প্রায় ৫২ হাজার ২৬০ কোটি টাকা বাজেটারি সাপোর্ট-ভর্তুকি প্রদান করেছে। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় হয়, ফার্নেস অয়েলভিত্তিক গড়ে ১৩-১৪ টাকা, ডিজেলভিত্তিক ২৫-৩০ টাকা, গ্যাসভিত্তিক ২.৫-৩.০ টাকা। এর বিপরীতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বাল্ক পর্যায়ে সরবরাহ ব্যয় প্রতি ইউনিট ৫ দশমিক ৮২ টাকা এবং বাল্ক পর্যায়ে গড় বিক্রয় মূল্য ৪ দশমিক ৮০ টাকা।

‘গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ বিল উত্থাপিত : জাতীয় সংসদে গাজীপুর শহর ও তৎসলগ্ন এলাকায় পরিকল্পিত নগরায়ণের উদ্দেশ্যে একটি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করার জন্য ‘গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন ২০২০’ উত্থাপিত হয়েছে। বিলে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া কোনো ইমারত নির্মাণ, পুনর্নির্মাণ, পুকুর বা কৃত্রিম জলাধার খনন, পুনঃখনন বা উঁচু ভূমি কাটা যাবে না-মর্মে বিধান রাখা হয়েছে।বিলে বলা হয়, ‘গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ একটি সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান হবে। গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রধান কার্যালয় প্রতিষ্ঠিত হবে। কর্তৃপক্ষ পরিচালনার জন্য একজন চেয়ারম্যান, চারজন সার্বক্ষণিক সদস্যসহ ১৫ সদস্যের একটি কমিটি থাকবে। কর্তৃপক্ষের সচিব কমিটির সচিব হবেন। মনোনীত সদস্যরা তিন বছরের জন্য মনোনীত হবেন। কর্তৃপক্ষ আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ভূমির যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করবেন। কর্তৃপক্ষ অপরিকল্পিত উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ ও আধুনিক পর্যটন ও নগর উন্নয়ন কার্যাবলি গ্রহণ করবেন।

 কৃষিভূমি, বনভূমি, নিম্নভূমি, জলাভূমি সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া কোনো ইমারত নির্মাণ, পুনর্নির্মাণ, পুকুর বা কৃত্রিম জলাধার খনন, পুনঃখনন বা উঁচু ভূমি কাটা যাবে না। বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজীপুর শহর ও তৎসলগ্ন এলাকায় পরিকল্পনা, উন্নয়ন, সংস্কার এবং সম্প্রসারণের মাধ্যমে পরিকল্পিত নগরায়ণের উদ্দেশে জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০১৪-এর কার্যবিবরণীতে পরিকল্পিত নগরায়ণ এবং জনসাধারণকে নাগরিক সুবিধা দেওয়ার জন্য গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (জিডিএ) গঠন করা হবে। সে পরিপ্রেক্ষিতে ‘গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন’-এর খসড়া প্রণীত হয়। গত বছরের এপ্রিল মাসের এক তারিখে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভায় বিলটি অনুমোদিত হয়। বিলটিতে সরকারি টাকা ব্যয়ের প্রশ্ন জড়িত থাকায় সংবিধানের ৮২ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রপতির সুপারিশ গ্রহণ করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর