বৃহস্পতিবার, ১৪ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে এক মিনিটের ‘ফ্রি সবজিবাজার’ সেনাবাহিনীর

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে এক মিনিটের ‘ফ্রি সবজিবাজার’ সেনাবাহিনীর

চট্টগ্রামে গরিব-অসহায়, দিনমজুর ও কর্মহীন মানুষের মধ্যে বিনামূল্যে ফ্রি সবজিসহ নিত্যপণ্য দিচ্ছে সেনাবাহিনী

করোনা পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী জনসচেতনতার পাশাপাশি নানাবিধ কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলায় ১৮টি পৃথক পেট্রল টিমও কাজ করছে। জিওসি ২৪ পদাধিক ডিভিশন ও চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান জনগণের নিরাপত্তায় এসব কর্মকান্ড অব্যাহত রাখতে নির্দেশনা দিয়ে সবকিছু মনিটরিং করছেন। সেই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম মহানগরে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তালিকা করে গরিব-অসহায়, দিনমজুর ও কর্মহীন মানুষের মধ্যে দূরত্ব বজায় রেখেই বিনামূল্যে ফ্রি সবজিসহ নিত্যপণ্য দিচ্ছে সেনাবাহিনী। প্রতিদিন ১ হাজার পরিবার মাত্র ১ মিনিট অবস্থান করে এসব পণ্য নিতে পারবে সেনাবাহিনীর ‘১ মিনিটের বাজার’ থেকে। গতকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নগরের ওয়াসা মোড়ের জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ মাঠে প্রথম দিনের ‘১ মিনিটের বাজার’ শুরু হয়েছে।

 তালিকায় থাকা আশপাশের ১ হাজার দরিদ্র পরিবার এ বাজারে এসে বিনামূল্যে তাদের পছন্দের সবজি বাসায় নিয়ে যায়। ১ মিনিটের ফ্রি সবজিবাজারে বিনামূল্যে মাস্ক, সাবান, চালসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী রয়েছে। গরিব-অসহায়রা এসব জিনিসপত্র নিয়ে হাসিমুখেই বাড়ি ফিরছেন এমন দৃশ্যও দেখা গেছে।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজহার সিদ্দিকী বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে কাজ করছে সেনাবাহিনীও। গরিব-অসহায়দের মধ্যে তালিকায় যাদের নাম লেখা হয়, তাদের একটি টোকেন দেওয়া হয়। বাজারে ঢোকার সময় তারা সে টোকেন দেখিয়ে পছন্দের সবজি ফ্রি নিয়ে যাচ্ছে। এই ফ্রি সবজিবাজার চট্টগ্রামের প্রতিটি এলাকায় যাবে। আগামী এক মাস এলাকাভিত্তিক প্রতিদিন ১ হাজার পরিবারকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ফ্রি সবজি দেওয়া হবে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের উদ্যোগে পরিচালিত এ বাজারের জন্য সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, সীতাকুন্ড, রাউজানসহ বিভিন্ন উপজেলার প্রান্তিক কৃষকের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে প্রথমে সবজি কেনা হচ্ছে। এরপর এলাকাভিত্তিক দরিদ্র দিনমজুর পরিবারের তালিকা করে ‘১ মিনিটের বাজার’-এর মাধ্যমে এসব সবজি বিতরণ করা হচ্ছে। যে এলাকায় যাদের তালিকা করা হয়, তাদের পাশের কোনো এক সুবিধামতো জায়গায় এ ফ্রি সবজিবাজার বসানো হচ্ছে। এটা মাসব্যাপী চলবে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় করোনা মোকাবিলায় হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত, জনসচেতনতা তৈরি, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত, বাজারমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করে আসছে তারা। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দুস্থ ও কর্মহীন পরিবারের মাঝে খাদ্য প্যাকেট সরবরাহ করা হচ্ছে। ২৪ পদাতিক ডিভিশনের মেজর আবু সাঈদ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ২৬ মার্চ থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে সকাল-বিকাল পৃথকভাবে জনগণের নিরাপত্তার পাশাপাশি জনবসতি এলাকায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ চট্টগ্রামে সচেতনতামূলক প্রচারে প্রতিনিয়ত মাইকিং করা হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত পর্যন্ত মহানগরে ১১টি টিম কাজ করছে। বিভিন্ন কর্মকান্ডের পাশাপাশি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জীবাণুনাশক ছিটানোর কার্যক্রম ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সচেতনতামূলক কাজ করা হচ্ছে। এর আগে জিওসি ২৪ পদাধিক ডিভিশন ও চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান জনগণের নিরাপত্তায় এসব কর্মকান্ড অব্যাহত রাখতে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। তবে চট্টগ্রাম মহানগরে ১১ ও জেলায় সাত- মোট ১৮টি পৃথক পেট্রল টিম কাজ করছে। একই কথা বললেন চট্টগ্রামের ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের দায়িত্বশীল মেজর তৌহিদ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর