বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

শঙ্কায় আবাসন ব্যবসায়ীরা

তিন হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ, ক্রেতা নেই, কিস্তি দিচ্ছেন না প্লট-ফ্ল্যাট গ্রহীতারা

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

শঙ্কায় আবাসন ব্যবসায়ীরা

সিলেটে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা। মহামারীকালে একদিকে প্লট, অ্যাপার্টমেন্ট কিংবা ফ্ল্যাট কেনার যেমন ক্রেতা নেই। অন্যদিকে আগে যারা কিস্তিতে ফ্ল্যাট বা প্লট কিনেছেন, তারাও কিস্তি দিতে পারছেন না। কিন্তু ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া ব্যবসায়ীদের নিয়মিত সুদ দিতে হচ্ছে। সামগ্রিক অবস্থায় অন্ধকার দেখছেন তারা। সিলেটে আবাসন ব্যবসায় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাভাইরাসের কারণে গত মার্চ থেকে স্থবির আবাসন ব্যবসা। সিলেটে এই ব্যবসা অনেকটাই প্রবাসী ক্রেতাদের ওপর নির্ভরশীল। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী সিলেটিরা দেশে প্লট কিনে বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ করে থাকেন। অনেক প্রবাসী রেডি ফ্ল্যাট বা অ্যাপার্টমেন্ট কিনেন। কিন্তু করোনার ধাক্কায় প্রবাসীরা দেশবিমুখ। ফলে ছয় মাস ধরে সিলেটে আবাসন খাতে প্লট, ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রির সংখ্যা নেমেছে প্রায় শূন্যের কোটায়। আবাসন ব্যবসায়ীরা জানান, মহামারী হানা দেওয়ার আগে যেসব ক্রেতা অ্যাপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাট কিনেছিলেন, তারাও এখন নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করতে পারছেন না। কিস্তি পরিশোধের জন্য তাদের চাপও দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ, করোনাকালে আর্থিক সংকটের ধাক্কায় তারাও বিপর্যস্ত। জানা গেছে, নতুন ক্রেতা না থাকা ও পুরনো ক্রেতাদের কিস্তি পরিশোধ না করার কারণে আবাসন ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যাংক ঋণ ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেসব ব্যবসায়ী ব্যাংক ঋণ নিয়ে আবাসন খাতে বিনিয়োগ করেছিলেন, তারা ব্যবসায় লাভের মুখ না দেখলেও ঋণের বিপরীতে নিয়মিত সুদ দিতে হচ্ছে। সিলেট অ্যাপার্টমেন্ট অ্যান্ড রিয়েল এস্টেট গ্রুপের (সারেগ) তথ্যানুসারে, সিলেটে আবাসন ব্যবসায় প্রায় একশটি কোম্পানি রয়েছে। এ খাতে তাদের বিনিয়োগ প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা। করোনার দুরবস্থার মধ্যে এই বিনিয়োগ পড়েছে হুমকির মুখে। সারেগ সভাপতি শফিউল আলম নাদেল বলেন, ‘আবাসন খাতে ব্যবসায়ীদের প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। ছয় মাস ধরে এই খাত স্থবির। ফলে পুরো বিনিয়োগ পড়েছে হুমকির মুখে।’ তিনি বলেন, ‘আবাসন প্রতিষ্ঠানের মালিকরা ব্যাংক ঋণ নিয়ে সমস্যায় রয়েছেন। তাদের নিয়মিত সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে, ক্রেতা নেই। যারা কিস্তিতে অ্যাপার্টমেন্ট, ফ্ল্যাট বিক্রি করেছিলেন, তারাও কিস্তি পাচ্ছেন না। সবমিলিয়ে আবাসন ব্যবসায়ীরা সংকটে রয়েছেন।’ সিলেটে আবাসন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হলি আরবান প্রপার্টি প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্লট কেনাবেচা পুরোপুরি বন্ধ। যারা অ্যাপার্টমেন্ট ব্যবসা করেন, তাদেরও ক্রেতা নেই। আবার আগে বিক্রি করা অ্যাপার্টমেন্টও ক্রেতাদের বুঝিয়ে দিয়ে পুরো টাকা মিলছে না। তিনি বলেন, ‘যারা আগে প্লট বা ফ্ল্যাট কিনেছিলেন, তাদের মধ্যে সিংহভাগই এখন কিস্তি পরিশোধ করতে পারছেন না। শুধুমাত্র সরকারি চাকরিজীবীরা নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করছেন। কিন্তু মোট ক্রেতার তুলনায় তারা মাত্র ৫ ভাগ।’

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর