বৃহস্পতিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

বেপরোয়া সিলেটের মাদক ব্যবসায়ীরা

সীমান্ত দিয়ে ঢুকছে ইয়াবা, ফেনসিডিল, মদ ও গাঁজা

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

বেপরোয়া সিলেটের মাদক ব্যবসায়ীরা

সিলেটে হঠাৎ করে তৎপরতা বেড়ে গেছে মাদক ব্যবসায়ীদের। সীমান্ত এলাকায় দুই দেশের মাদক ব্যবসায়ীরা গড়ে তুলেছেন শক্তিশালী সিন্ডিকেট। ফলে নানা কৌশলে জেলার ৬ উপজেলার সীমান্ত এলাকা দিয়ে সিলেটে ঢুকছে মাদকের বড় বড় চালান। ভারতের মেঘালয় রাজ্যঘেঁষা সিলেটের চার উপজেলার সীমান্ত দিয়ে ঢুকছে ফেনসিডিল, অফিসার্স চয়েজ মদ, বিড়ি ও গাঁজা। আর আসামের সীমান্তবর্তী দুই উপজেলা দিয়ে আসছে ইয়াবার বড় বড় চালান। ফলে সিলেটে এখন হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক। র‌্যাব ও পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানে মাদকের ‘ক্যারিয়ার’রা ধরা পড়লেও মূলহোতারা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ ছাড়া কক্সবাজারের টেকনাফের ওসি প্রদীপ কুমার দাশের ঘটনার পর সিলেটে মাদক ব্যবসার নেপথ্যে থাকা প্রভাবশালীরা নানাভাবে পুলিশকে চাপে রাখার চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে। তবে পুলিশ মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ভূমিকায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. ফরিদ উদ্দিন। জানা যায়, সিলেট জেলার তিন দিকই ভারতবেষ্টিত। দক্ষিণে ভারতের আসাম ও উত্তরে মেঘালয় রাজ্য। ভারতের আসাম রাজ্যের বিপরীতে সিলেটের জকিগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলা। টেকনাফে মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার হওয়ার পর থেকে এ দুই উপজেলার সীমান্ত দিয়ে ভারত হয়ে ইয়াবার চালান আসা শুরু হয়। গত প্রায় চার বছর ধরে জকিগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারত থেকে ইয়াবার চালান আসছে। ইতিমধ্যে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির অভিযানে কয়েকটি বড় চালান ধরাও পড়েছে। মাদকবিরোধী অভিযানে ক্রসফায়ারে কয়েকজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী নিহতও হয়েছে।

এদিকে, ভারতের মেঘালয় রাজ্যঘেঁষা জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলা সীমান্ত দিয়ে ঢুকছে ফেনসিডিল, অফিসার্স চয়েজ মদ, বিড়ি ও গাঁজা। সীমান্ত এলাকা দিয়ে আসা এসব মাদক সিলেট শহর হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সিলেট থেকে ইয়াবার চালান ঢাকা ও নারায়াণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় পৌঁছে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে এসব বড় চালান ধরা পড়ছে র‌্যাব-পুলিশের হাতে। সূত্র জানায়, মেজর (অব.) সিনহা রাশেদ খান হত্যাকাে র ঘটনায় টেকনাফের ওসি প্রদীপ কুমার দাশ গ্রেফতার ও তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ীদের মদদ দেওয়ার অভিযোগ ওঠার পর থেকে সিলেটে পুলিশের মাদকবিরোধী কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। মাদক ব্যবসার নেপথ্যে থাকা শক্তিশালী সিন্ডিকেট নানা কৌশলে পুলিশকে চাপে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে। এতে সিলেটে মাদকের বিরুদ্ধে সাহসী ভূমিকা রাখা পুলিশ কর্মকর্তারা কিছু হলেও বিব্রত। সিলেট পুলিশ সুপার মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে সিলেটের পুলিশ ‘জিরো টলারেন্স’ ভূমিকায় আছে। যখনই মাদকের খবর পাওয়া যাচ্ছে তখনই অভিযান হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর