শুক্রবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

রামেক হাসপাতালে বেড়েছে সাধারণ রোগীর চাপ

করোনা বিশেষায়িত হাসপাতালগুলো চালুর দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় দফায় টালমাটাল হাসপাতালগুলো। করোনা আক্রান্ত রোগীর পাশাপাশি এ বছর সাধারণ রোগী বেড়েছে কয়েক গুণ। করোনার দিকে নজর দিতে গিয়ে ভোগান্তি বেড়েছে সাধারণ রোগীদের। এ অবস্থায় হাসপাতালে সাধারণ রোগীর চাপ কমানোর পরামর্শ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকদের। সেই সঙ্গে রাজশাহীতে বন্ধ করে দেওয়া দুটি বিশেষায়িত করোনা হাসপাতাল আবারও চালুর দাবি উঠেছে। গেল বছর করোনা সংক্রমণের সময় হাসপাতালে সাধারণ রোগী ভর্তির হার ছিল কম। অথচ এ বছর একই সময়ের চিত্র ঠিক উল্টো। হাসপাতালে যে হারে চাপ বাড়ছে, তাতে চিকিৎসা সেবা নিয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা আর সংশয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকরা। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, ‘রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাধারণ রোগী ও করোনা আক্রান্ত রোগীর একসঙ্গে রেখে দীর্ঘদিন চিকিৎসা করানো একটু ডিফিকাল্ট। এতে করে সাধারণ ওয়ার্ডেও করোনা রোগী ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

এ জন্য করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য আলাদা হাসপাতালের ব্যবস্থা করা অত্যন্ত জরুরি।’

তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে রাজশাহী সদর হাসপাতাল চালু করা খুবই দরকার। এ জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে হাসপাতালটির কার্যক্রম চালুর ব্যাপারে দিকনির্দেশনা চেয়ে চিঠি দিয়েছি। প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা পেলে যত দ্রুত আমরা রাজশাহী সদর হাসপাতালটি আবারও চালুর ব্যবস্থা করব।’

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, গত বছর এ সময়ে হাসপাতালে ৫০০-৬০০ রোগী ভর্তি ছিল। এ বছর তিন হাজারের বেশি রোগী ভর্তি আছে। সাধারণ রোগীর চাপ আগের বছরগুলোর তুলনায় কয়েক গুণ বেড়েছে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. চিন্ময় কান্তি দাস বলেন, ‘সাধারণ রোগীর চাপ কমানো না গেলে চিকিৎসার চেইন ভেঙে পড়বে। এখন যে হারে করোনা রোগী বাড়ছে, তাতে সাধারণ রোগীর চাপ কমাতে হবে। এটি কমানো না গেলে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বর্তমান সক্ষমতায় চিকিৎসা দেওয়া কঠিন।’

করোনা রোগীদের চাপ ও সাধারণ রোগীদের সুরক্ষায় রাজশাহী সদর হাসপাতালটি আবারও চালুর পাশাপাশি আগের দুটি বিশেষায়িত হাসপাতাল চালুর দাবি জানিয়েছেন রাজশাহীবাসী। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) জেলা সভাপতি আহমদ শফিউদ্দিন বলেন, ‘করোনার এই ভয়াবহ সময়ে দেশের প্রায় ২০টি জেলা থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মানুষজন চিকিৎসা নিতে আসছেন। এতে হাসপাতালে তৈরি হচ্ছে চাপ। রাজশাহী সদর হাসপাতালের পাশাপাশি বন্ধ করে দেওয়া দুটি করোনা বিশেষায়িত হাসপাতালও চালুর উদ্যোগ নিতে হবে।’

রাজশাহী সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘রাজশাহী সদর হাসপাতালে পর্যাপ্ত অবকাঠামো আছে। এ ছাড়া অন্যান্য আসবাবপত্রও আছে। তাই রামেক হাসপাতালের বাড়তি চাপ কমাতে রাজশাহী সদর হাসপাতাল চালুর ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা করা সম্ভব। আমি এ নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কথা বলব।’

উল্লেখ্য, করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় রাজশাহী খ্রিস্টিয়ান মিশন হাসপাতাল ও সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালকে করোনা বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সংক্রমণ কমে আসায় গত নভেম্বর-ডিসেম্বরে দুটি হাসপাতাল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর