শুক্রবার, ৭ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

খুলনায় পোলট্রি শিল্পে ফের বিপর্যয়, দিশাহারা খামারিরা

দাম কমেছে মুরগির মাংস, বাচ্চা ও ডিমের, স্বস্তিতে ক্রেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

করোনা সংক্রমণ ও লকডাউনে আবারও বিপাকে পড়েছে খুলনার পোলট্রি খাতের খামারিরা। মুরগির মাংস, এক দিনের বাচ্চা ও ডিমের দাম আরেক দফা কমে যাওয়ায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় পোলট্রি খাতের প্রায় ১০ হাজার প্রান্তিক খামারির অবস্থা হয়েছে শোচনীয়। উৎপাদন প্রক্রিয়া ও সরবরাহ পড়েছে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে। পোলট্রি ফিশ ফিড শিল্প মালিক সমিতির হিসাব অনুযায়ী, খুলনা বিভাগে ছোট বড় মিলিয়ে পোলট্রি খামার রয়েছে ১০ হাজার ৫৫৭টি। যেখানে প্রতিদিন ৫২ লাখ ১০ হাজার ডিম উৎপাদন হচ্ছে।  এ ছাড়া ব্রয়লারসহ অন্যান্য মুরগির মাংস উৎপাদন হচ্ছে ১২৫ মেট্রিক টন। খামারিরা জানান, বিভাগে এক সপ্তাহে প্রায় ৩ কোটি ৫০ লাখ মুরগির বাচ্চা তৈরি হয়। একেকটি বাচ্চা উৎপাদনে গড়ে খরচ ২৫-৩০ টাকা। কিন্তু বর্তমানে কক ও সোনালি মুরগির বাচ্চা বিক্রি হচ্ছে ৮-১০ টাকায়। এ ছাড়া ব্রয়লারের বাচ্চা ২২-২৫ ও লেয়ার ২০-২২ টাকায় বিক্রি হলেও উৎপাদন খরচের তুলনায় কম। বাচ্চা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এগ্রো ফার্মস্ প্রজেক্টের মালিক মামুনুর রহমান জানান, সোনালি মুরগির বাচ্চা বিক্রি হচ্ছে ৮ টাকায়। যেখানে উৎপাদন খরচ ১৮-২০ টাকা। প্রতি বাচ্চায় ১০-১২ টাকা ক্ষতি হচ্ছে। এদিকে করোনার প্রভাবে মুরগির মাংস ও ডিমের দাম কমেছে। এতে ক্রেতার স্বস্তি মিললেও দুশ্চিন্তা বাড়ছে খামারিদের। খামারি শেখ আবুল বাশার জানান, বর্তমানে পাইকারি ডিম ৫ টাকা ও  ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১০৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচ উঠছে না। খুলনা পোলট্রি ফিশ ফিড শিল্প মালিক সমিতির মহাসচিব এস এম সোহরাব হোসেন বলেন, খুলনায় মুরগির মাংস, বাচ্চা ও ডিম বিক্রির পাইকারি বাজার নেই। এ ধরনের বাজার তৈরি হলে খামারি শুমারির মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব হবে। এতে আর্থিক ক্ষতিও কমে আসবে। খামারিদের লোকসান কমাতে ভ্রাম্যমাণ সেলস্ সেন্টারের মাধ্যমে পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রণজীতা চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ভোক্তাদের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ পরিবহনে ‘ডোর টু ডোর’ মুরগির মাংস ও ডিম বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়া পোলট্রি ব্যবসায়ীদের পাইকারি বাজার স্থাপন ও খামারিদের লোকসান কমাতে সরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর