মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা
মানবতাবিরোধী অপরাধ

দুই মামলায় ১৭ জনের বিষয়ে তদন্ত শেষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ একাত্তরের মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অভিযোগে দুটি মামলায় ১৭ জনের বিষয়ে তদন্ত শেষ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এর মধ্যে কুড়িগ্রামের মামলায় আসামি ১৩ জন, যাদের দুজন আবার পলাতক। সাতক্ষীরার মামলায় চার আসামির মধ্যে তিনজনই পলাতক। তদন্ত প্রতিবেদন দুটি ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে শিগগিরই জমা দেওয়া হবে বলে গতকাল জানিয়েছেন তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক সানাউল হক। রাজধানীর ধানমন্ডিতে সংস্থার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এ দুটি মামলা নিয়ে এখন পর্যন্ত ৮০টি মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে।

সাতক্ষীরার মামলাটিতে মোট চারজন আসামি। এর মধ্যে আকবর আলী শেখকে ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর গ্রেফতার করা হয়। বাকি তিন আসামি পলাতক। মুক্তিযুদ্ধের সময় আকবর আলী শেখ জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের কর্মী ছিলেন। মাদরাসায় লেখাপড়া করা আকবর আলী উর্দুতে কথা বলতে পারতেন, যে কারণে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। স্বাধীনতার পর কোনো রাজনৈতিক দলে সক্রিয় না হলেও বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলে ১৯৭৮ সালে জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক রোকন পদ পান। এ মামলার অভিযোগে বলা হয়, আকবর আলী শেখসহ (৭০) আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

কুড়িগ্রামের মামলাটির আসামি ১৩ জন। এর মধ্যে মো. নুরুল ইসলাম ওরফে নুর ইসলাম (৭১), মো. এছাহাক আলী ওরফে এছাহাক কাজী (৭৩), মো. ইসমাইল হোসেন (৭০), মো. ওছমান আলী (৭০), মো. আবদুর রহমান (৬৫), মো. আবদুর রহিম ওরফে রহিম মৌলানা (৬৫), মো. শেখ মফিজুল হক (৮১), মো. মকবুল হোসেন ওরফে দেওয়ানী মকবুল (৭২), মো. ছাইয়্যেদুর রহমান মিয়া ওরফে মো. সাইদুর রহমান ওরফে সৈয়দ মাওলানা (৬৪), মো. শাহজাহান আলী (৬৪) ও মো. আবদুল কাদের (৬৭) গত বছর ৯ মার্চ থেকে কারাগারে রয়েছেন। তাদের গত বছর ৯ মার্চ গ্রেফতার করা হয়। এরা সবাই কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার। পলাতক দুই আসামির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

মুক্তিযুদ্ধের আগে মুসলিম লীগের সমর্থক আসামিরা মুক্তিযুদ্ধের পর কোনো রাজনৈতিক দলে সক্রিয় না হলেও জামায়াতে ইসলামী, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও চরমোনাই পীরের সংগঠন ইসলামী আন্দোলনের সমর্থক হিসেবে পরিচিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামিরা উলিপুর ও রাজাহাট থানা এলাকায় অপরাধ সংঘটন করে। এ সময় তারা মোট ৭৪৫ জনকে হত্যা করে। তাদের হামলা-আক্রমণে ৭০ থেকে ৭৫ জন আহত হয়। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন দুজন। এ ছাড়া ২৬০ থেকে ২৭০টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে এবং ৮০ থেকে ৯০টি বাড়িতে লুটপাট চালায়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর