নীলফামারীর লোকালয়ে বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে চিতা বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এখন মৃত বাঘের সঙ্গীর খোঁজে অভিযান চলছে। জানা গেছে, গত শুক্রবার সকালে জেলা সদরের চওড়া বড়গাছা ইউনিয়নের দলপাড়া গ্রামে মুরগির খামার থেকে মৃত বাঘটি উদ্ধার করা হয়। এরপর মৃত বাঘের সঙ্গীর খোঁজে শুরু হয় অভিযান। গতকাল এ রিপোর্ট পর্যন্ত অপর বাঘের সন্ধান মেলেনি।
এলাকাবাসীর ধারণা, খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে এসেছিল বাঘটি। মৃত বাঘের সঙ্গী হিসেবে আসা আরেকটি বাঘ এলাকায় লুকিয়ে থাকার আশঙ্কায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ জন্য গত শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে বাঘ খোঁজার অভিযান। বাঘের আক্রমণ থেকে রক্ষায় সতর্ক করা হয়েছে গ্রামবাসীকে।
গ্রামবাসী জানান, ওই বাঘটি ভারতের কোনো জঙ্গল থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে এসেছে। ওই গ্রাম থেকে ভারতীয় সীমান্ত ৫৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে।
গত শুক্রবার বাঘ উদ্ধারের পর রংপুর বন বিভাগের কর্মকর্তা স্মৃতি রানী সিংহসহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে সদর থানায় একটি জিডি করে মৃত বাঘটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়। গতকাল অপর বাঘের সন্ধানে ঢাকা থেকে বন্য প্রাণী ক্রাইম পেট্রল টিম ও রাজশাহী থেকে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ টিম এলাকায় এসে কাজ শুরু করে। তবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অপর বাঘের সন্ধান পাননি কর্মকতারা।
ওই গ্রামের খামারি অলিয়ার রহমান বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে আমার খামারে মুরগি চুরি যাচ্ছিল। অনেক সময় মুরগির মাথা ছিঁড়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। আমি ভেবেছিলাম খামারের পেছনে বাঁশঝাড় ও ভুট্টা খেত থাকায় সেদিক দিয়ে শিয়াল এসে মুরগি নিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে ফাঁদটি সেখানে বৃহস্পতিবার রাতে পেতে রাখি। শুক্রবার সকালে দেখতে পাই ফাঁদে আটকা পড়ে মরে আছে একটি চিতা বাঘ। এ সময় আরেকটি বাঘের গর্জন শোনা যায়।
চওড়াবড়গাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের বলেন, মৃত বাঘটি খামার এলাকা থেকে উদ্ধার করে নীলসাগরে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে বন বিভাগের কর্মীরা মৃত বাঘটি নিয়ে যান। মসজিদে মাইকিং করে এলাকাবাসীকে সতর্ক করা হচ্ছে।
নীলফামারী বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল মোনায়েম বলেন, ‘নীলফামারী সদর থানায় জিডি করে মৃত বাঘটির ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। এলাকায় আরও একটি বাঘ আছে বলে এলাকাবাসী সন্দেহ করছেন। এ কারণে ঢাকা ও রাজশাহী থেকে দুটি টিম এসে এলাকায় অবস্থান করে অনুসন্ধান চালাচ্ছেন।’