শুক্রবার, ২০ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

প্রত্যাশিত আম নেই রাজশাহীর বাজারে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

প্রত্যাশিত আম নেই রাজশাহীর বাজারে

এবার প্রত্যাশিত আম নেই রাজশাহীর বাজারে। বৈরী আবহাওয়ায় মৌসুমের প্রথমেই ঝরেছে অধিকাংশ মুকুল ও গুটি আম। এতে অনেকটাই হতাশ রাজশাহীর আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা। রাজশাহীর চারঘাট, বানেশ্বর, পুঠিয়াসহ বেশকিছু এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। পুঠিয়া উপজেলার নামাজগ্রাম এলাকার একটি বাগানে আম নামাচ্ছিলেন হাজি মোহাম্মদ আতাউর রহমান। চারঘাট উপজেলার সলুয়া এলাকার এই আম চাষির রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ২ হাজার আম গাছ। গতবার আম পেয়েছিলেন প্রায় ১২ হাজার মণ। করোনায় সে সময় তেমন বিক্রি করতে না পারলেও চলতি মৌসুমে আশা করেছিলেন দ্বিগুণ লাভের। তবে তার আশার গুড়ে বালি পড়েছে। এবার পেয়েছেন মাত্র ৬ হাজার মণ আম। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘খারাপ আবহাওয়ার কারণে চলতি মৌসুমে একেবারেই আম নেই। তার পরও গতবার গুটি আম বিক্রি করেছিলাম আড়াই শ থেকে তিন শ টাকায়। তবে এবার করোনা না থাকায় এ আম বিক্রি করেছি ১ হাজার টাকায়।’ তিনি বলেন, ‘এসব আম ঢাকার কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন কোম্পানিতে বিক্রি করি। ১৩ মে জেলা প্রশাসকের দেওয়া নির্দেশনা পেয়ে আম নামানো শুরু করেছি।’ একই এলাকার আম চাষি মোজাম্মেল হক বলেন, ‘এবার গাছে আম নেই বললেই চলে। গাছ একেবারে ন্যাড়া হয়ে আছে। এবার শুধু বাড়িতে খাওয়ার মতো আম হয়েছে। গতবারে করোনায় এক ক্যারেট আম বিক্রি করেছিলাম আড়াই শ থেকে চার শ টাকায়। এবার তা-ও পারব না। আমার ২০০ গাছের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটিতে বাড়িতে খাওয়ার মতো আম এসেছে।’

সব মিলিয়ে এবার খুব খারাপ অবস্থা বলে জানান তিনি।

এদিকে হাজি মোহাম্মদ আতাউর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর আমাদের কোনো উপকারই করেনি। তারা যদি আমাদের প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সামান্য সহযোগিতা করত তাহলে কিছুটা হলেও আম রক্ষা করা সম্ভব হতো। আবার তারা যে আমের লক্ষ্যমাত্রার কথা বলছেন তা কোনো দিক দিয়েই সঠিক নয়।’

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবার রাজশাহীতে চলতি মৌসুমে ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমের চাষ হচ্ছে। প্রতি হেক্টরে ১২ টন আমের ফলন হয়। এ ক্ষেত্রে ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে ২ লাখ ১৬ হাজার টন আম উৎপাদন হয়। তবে এবার মৌসুমের শুরুতেই বৈরী আবহাওয়ার কারণে গাছ থেকে অনেক গুটি আম ঝরে পড়ায় ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, ‘প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে আমের ফলন ভালো নয়। মৌসুমের শুরুর দিকেই গাছ থেকে আমের মুকুল ও গুটি ঝরতে শুরু করে। তাই আমের ফলনও কম।’

আম চাষের লক্ষ্যমাত্রার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চাষিরা একটি এলাকায় থেকে বলছেন আম নেই বা লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। কিন্তু আমরা নয়টি উপজেলার তথ্য একসঙ্গে সমন্বয় করে এ তথ্য বের করেছি। এবার চারঘাট, বাঘা, পুঠিয়াসহ কয়েকটি উপজেলায় আম কম হয়েছে। কিন্তু সহযোগিতা না করার বিষয়টি সত্যি নয়। কেউ সহযোগিতা না চাইলে আমরা বুঝব কীভাবে তার সাহায্য লাগবে!’

সর্বশেষ খবর