ধূমপান নিয়ন্ত্রণে নতুন করে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে আইনের খসড়া প্রস্তুত করে জনগণ ও অংশীজনের মতামত নিতে সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। তবে সংশোধিত আইনের খসড়ায় নতুন করে যুক্ত কিছু বিধানের কারণে পরোক্ষ ধূমপানের ঝুঁকি উল্টো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিভিন্ন মহল। ধূমপান ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধিত খসড়ায় দেয়ালঘেরা বা উন্মুক্ত যে কোনো ধরনের খাবার দোকান, কফি হাউস, চায়ের দোকান ও পাবলিক প্লেসে ধূমপান নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে ধূমপানবিরোধী আন্দোলকারীরা বলছেন, স্মোকিং জোন না থাকলে কিংবা উন্মুক্ত স্থানের চায়ের দোকানে বা কফি হাউসে ধূমপান করার সুযোগ না থাকলে অনেকে বাসায় ধূমপান বাড়িয়ে দিতে পারেন। এতে বাসার নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বে। ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস বাংলাদেশের লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যিনি ধূমপান করেন না তার অধিকার আছে পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতির হাত থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য। অথচ পরোক্ষ ধূমপানে ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যাই বেশি।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্বব্যাংকের হিসাবে ২০১০ সালে বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার মোট ৪৪ শতাংশ ধূমপায়ী ছিল। ২০১৩ সালের আইনের দূরদর্শী সংশোধনীর পর ২০২০ সালে এই হার ৩৪ শতাংশে নেমেছে। বিদ্যমান আইনটি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হলে এই সংখ্যা আরও কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। তামাকবিরোধী আন্দোলনকারীরা বলছেন, সরকার আইন করে জনসমাগমস্থলে ধূমপান নিষিদ্ধ করেছে, ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান রাখার নির্দেশনা দিয়েছে। বিদ্যমান আইনে বলা হয়েছে, কোনো পাবলিক প্লেসের মালিক, তত্ত্বাবধায়ক বা নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি বা ব্যবস্থাপক এবং কোনো পাবলিক পরিবহনের মালিক, তত্ত্বাবধায়ক, নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি বা ব্যবস্থাপক তার এলাকায় ধূমপানের জন্য স্থান চিহ্নিত বা নির্দিষ্ট করে দিতে পারেন। কিন্তু আইনে থাকলেও দেশের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান বা পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জন্য কোনো স্থান নির্দিষ্ট না করায় যত্রতত্র ধূমপান অধূমপায়ীদের বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন অফিসের সিঁড়িঘর, বারান্দা, ওয়াশরুমে যত্রতত্র দাঁড়িয়ে কর্মীরা ধূমপান করছেন। নির্দিষ্ট স্থানে ধূমপানের সুযোগ বা স্মোকিং জোন থাকলে যত্রতত্র ধূমপান কমত। এতে পরোক্ষ ধূমপানের ঝুঁকিও কমত।