শুক্রবার, ৫ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

বিদ্যুৎ সরবরাহে অগ্রাধিকার পাবে শিল্প ও কৃষি খাত

টেকসই উন্নয়নের জন্য জ্বালানি নিরাপত্তা শীর্ষক সেমিনার

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলমান বিদ্যুৎ রেশনিংয়ের সময় শিল্প ও কৃষি খাত বিদ্যুৎ সরবরাহে অগ্রাধিকার পাবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বীর বিক্রম। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন সংকটের কারণে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কৃষি ও শিল্প খাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখতেই বিদ্যুৎ রেশনিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ জন্য আবাসিক গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। দেশের স্বার্থে সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে। গতকাল এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত টেকসই উন্নয়নের জন্য জ্বালানি নিরাপত্তা শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস। তিনি বলেন, শিল্প ও সেবা খাতে সরকারের আলাদা নজর আছে। বিদ্যুৎ রেশনিংয়ে শিল্প এলাকা বিবেচনায় লোডশেডিংয়ের পরিকল্পনা করা হলেও গৃহস্থালি এলাকায় কিছু শিল্পকারখানা থেকে যায়; যার জন্য এসব কারখানাকে লোডশেডিং পোহাতে হয়। লোডশেডিংয়ের কারণে কোনো কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানোর অনুরোধ করেন তিনি।

স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, সরকারের উচিত কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দেওয়া। পরিবেশ ঠিক রেখে কয়লাভিক্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে বিশ্বের অনেক দেশে। বাংলাদেশও সেদিকে যেতে পারে। বাংলাদেশেরও উচিত দেশে কয়লা অনুসন্ধান ও উত্তোলনে জোর দেওয়া। একই সঙ্গে গ্যাস সংকট মোকাবিলায় স্থলের পাশাপাশি সাগরে অনুসন্ধান ও কূপ খননের তাগিদ দেন তিনি। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন  বুয়েটের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন।

বলেন, চাহিদা অনুসারে গ্যাস পাচ্ছে না দেশের শিল্পখাত। এতে শিল্পের স্বাভাবিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের গ্যাসের ওপর একক নির্ভরতা দেশের জ্বালানি নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম স্থল ও সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানে জোর দেওয়ার পরামর্শ দেন। ক্রান্তিকালীন সংকট মোকাবিলায় একটি জরুরি তহবিল গঠনের দাবি জানান এফবিসিসিআইর পরিচালক ও বিটিএমএ’র সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন। বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ভোলার গ্যাসক্ষেত্র থেকে ১৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে। ২০২৫ সালের আরো ৬১৮ ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে। এ জন্য দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা ও পার্বত্য চট্টগ্রামে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে ৫টি অনুসন্ধান কূপ খননের পরিকল্পনা রয়েছে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইর পরিচালক ও এমসিসিআইর সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম, এফবিসিসিআই’র বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান হুমায়ূন রশিদ, জ্বালানি বিষয়ক ম্যাগাজিন এনার্জি এন্ড পাওয়ার এর সম্পাদক মোল্লা এম আমজাদ হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর