রবিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

পানির দাম বাড়লেও সেবা বাড়েনি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

পানির দাম বাড়লেও সেবা বাড়েনি

এ বছরের পয়লা ফেব্রুয়ারি পানির দাম বাড়িয়েছে রাজশাহী পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা)। সেবার মান না বাড়লেও গ্রাহককে গুনতে হচ্ছে বাড়তি দাম। চাহিদার পুরোটা পূরণের সক্ষমতা ১২ বছরেও অর্জন করতে পারেনি রাজশাহী ওয়াসা। উল্টো দাম বাড়িয়ে নাগরিকদের কলিফর্ম যুক্ত পানি সরবরাহ করছে। এ নিয়ে নাগরিক ক্ষোভ বাড়ছে। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্প চলমান। চাহিদার শতভাগ পূরণে নেওয়া হচ্ছে উদ্যোগ। আগে প্রতি ১ হাজার লিটার পানির জন্য আবাসিকে ২ টাকা ৭০ পয়সা ও বাণিজ্যিকে ৪ টাকা ৫৪ পয়সা দিতে হতো। এখন গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণের বেশি। তার পরও সেবার মান বাড়েনি। রাজশাহী ওয়াসার পানিতে পাওয়া গেছে শরীরের জন্য ক্ষতিকর কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া। ওয়াসা নিজ উদ্যোগে সম্প্রতি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর থেকে পরীক্ষা করিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওয়াসার পানিতে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি শূন্য থাকার কথা। সেখানে রাজশাহী মহানগরীর ওয়াসার পানিতে ‘কলোনি ফর্মিং ইউনিট’ ১ হাজার পর্যন্ত পাওয়া গেছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের রসায়নবিদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রাজশাহী শহরজুড়েই নির্মাণকাজ চলছে। রাস্তা খুঁড়তে গিয়ে পাইপ ফেটে যায়। এগুলো হয়তো পলিথিন দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়। কোনোভাবে এ পলিথিন ছিঁড়ে গেলেই সেখান দিয়ে সুয়ারেজ লাইনের পানি ওয়াসার পাইপলাইনে ঢুকে পড়ে। এ পানিতে গবাদি পশু এমনকি মানুষের বর্জ্য মিশে থাকতে পারে। এ বর্জ্য থেকেই কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয়। পরীক্ষায় ওয়াসার পানিতে কলোনি ফর্মিং ইউনিট ৫ থেকে ১ হাজার পর্যন্ত পাওয়া গেছে, যা খাওয়ার পানিতে থাকার কথাই নয়।’ রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, ‘কলিফর্ম ভয়ংকর ব্যাকটেরিয়া। এ ব্যাকটেরিয়া মিশ্রিত পানির কারণেই মানুষের খাদ্যে বিষক্রিয়া হয়। খাওয়ার পানিতে এ ব্যাকটেরিয়ার কোনো সহনীয় মাত্রা নেই। পেটের পীড়ার অন্যতম উপাদান কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া। অথচ বেশি দাম দিয়ে তাদের সেই পানি কিনতে হচ্ছে।’ রাসিকের ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল হক সুমন বলেন, ‘সেবার মান না বাড়িয়ে পানির দাম বাড়ানো ছিল অযৌক্তিক।

এ নিয়ে প্রতিবাদ করলেও লাভ হয়নি। এখন বিশুদ্ধ পানিও মিলছে না।’

দৈনিক ১২৫ মিলিয়ন লিটার চাহিদার বিপরীতে ওয়াসা ১০৪ মিলিয়ন লিটার সরবরাহ করছে। পানিতে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতির কথা স্বীকার করে ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী পারভেজ মামুদ বলেন, ‘নাগরিক সেবা ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে কাজ করছি। গোদাগাড়ীতে চীনের অর্থায়নে একটি পানি শোধনাগার নির্মাণ চলছে। এর কাজ শেষ হলে নাগরিকরা বিশুদ্ধ পানি পাবেন। এখনো পানি শোধন করেই সরবরাহ করা হয়।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর