বুধবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্র কবে

খুলনায় কাজে ধীরগতি * ১৭ তলা ভবনের বেজমেন্টের মাটিকাটার কাজ চলছে

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্র কবে

খুলনায় বিভাগীয় পর্যায়ের পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্রের অবকাঠামো নির্মাণকাজের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৩০ জুন। অথচ এখনো মাটির তলদেশের দুই তলা বেসমেন্ট নির্মাণের কাজই শেষ হয়নি। ১৭ তলা ভবন নির্মাণের অগ্রগতি মাত্র ৭ থেকে ৯ শতাংশ।

কর্মকর্তারা বলছেন, মাটির নিচে দুই তলা বেসমেন্ট ও পাইল ফাউন্ডেশন নির্মাণ জটিল, সময় সাপেক্ষ। তলদেশ থেকে সাড়ে ২৬ ফুট পর্যন্ত মাটি কেটে আনা হচ্ছে। এরপর সেখানে বেসমেন্ট ঢালাইয়ের কাজ করতে হচ্ছে। অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ করতে আরও দেড় বছর লাগবে।

জানা যায়, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশে ১০০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্রের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২১ সালের অক্টোবরে। ৮২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পে মাটির ওপরে ১৫ তলা ভবন, মাটির নিচে দুই তলা বেসমেন্ট ও পাইল ফাউন্ডেশন নির্মাণ হবে। এর বাইরে চলন্ত সিঁড়ি, কভিড-১৯-এর লিফট, স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, ৩০০ কেভিএ বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন, জেনারেটর ও ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম চালু করা হবে।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. মুকিতুল হুদা জানান, ২০১৬ সালের অক্টোবরে দেশের প্রতিটি বিভাগে একটি করে ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণ করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পরিপ্রেক্ষিতে খুলনাসহ আট বিভাগে পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়। বিভাগীয় শহরে পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্র তৈরি হলে রাজধানী ঢাকার ওপর চাপ কমে আসবে এবং রোগীকে কম খরচে চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হবে।তিনি বলেন, প্রকল্পের দুই তলা বেসমেন্টসহ ১৭ তলা ভবন, পাইল ফাউন্ডেশন, দোতলা থেকে সাত তলা পর্যন্ত লিনিয়র অ্যাক্সেলেটর মেশিন, ব্রাকিথেরাপি, কেমোথেরাপি, অষ্টম থেকে ১১ তলা পর্যন্ত কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিট, কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট ওটি, আইসিইউ ও ১২ থেকে ১৫ তলা পর্যন্ত কার্ডিয়াক ওটি, কার্ডিয়াক সার্জারি, ক্যাথ ল্যাব থাকবে। এদিকে নাগরিক নেতারা বলছেন, ক্যান্সার চিকিৎসা করতে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের লোকজন দারিদ্র্যের শিকার হচ্ছেন। খুলনায় ক্যান্সারের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসাব্যবস্থা না থাকায় সবার পক্ষে ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা নেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় দ্রুত ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্রের নির্মাণকাজ শেষ করার তাগিদ দিয়েছেন নাগরিক নেতারা। বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ-উজ্জামান বলেন, এক বছরের বেশি সময় ধরে কাজের পরও মাটির তলদেশে দুই তলা বেসমেন্ট নির্মাণ হয়নি। প্রকল্প শেষ হওয়ার পাঁচ-ছয় মাস বাকি আছে। এ সময়ের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়া অসম্ভব। তিনি এ অঞ্চলের মানুষের চিকিৎসা ভোগান্তি কমাতে প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। এদিকে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা গণপূর্ত অধিদফতর, খুলনা-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী অমিত কুমার বিশ্বাস জানান, তলদেশে সাড়ে ২৬ ফুট পর্যন্ত মাটি কেটে সেখানে বেসমেন্ট তৈরি ও পাইল ফাউন্ডেশন ঢালাই দিতে সময় লাগছে। এ ছাড়া নির্মাণকাজে ব্যবহৃত সামগ্রী সময়মতো না পাওয়া ও মূল্যবৃদ্ধির কারণে নির্মাণকাজে বিলম্ব হয়েছে। তিনি বলেন, ভবন নির্মাণে আরও প্রায় দেড় বছর লাগবে। এ কারণে মেয়দ শেষ হওয়ার আগেই সময় বৃদ্ধির আবেদন জানানো হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর