বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

নিরাপদ পানির সংকট উপকূলে

স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

নিরাপদ পানির সংকট উপকূলে

শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই এবার দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল উপকূলে নিরাপদ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। তুলনামূলক কম বৃষ্টিপাতে পানিরস্তর নিচে নেমে যাওয়ায় গভীর নলকূপ থেকেও পানি উঠছে না। সংরক্ষণের অভাবে শুকিয়ে গেছে খাবার পানির নিরাপদ উৎসগুলো। পানি সংগ্রহে মাইলের পর মাইল পাড়ি দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বিশ্লেষকরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনে লবণাক্ততা বৃদ্ধি, অপরিকল্পিতভাবে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন, চিংড়ি চাষ ও কৃষিজমি-জলাভূমি ভরাট করে অবকাঠামো নির্মাণের ফলে পরিস্থিতি ভয়ংকর হচ্ছে। এ অবস্থার উত্তোরণে নিরাপদ পানির উৎস তৈরি ও সংরক্ষণ, পানি দূষণের ক্ষেত্র বন্ধ ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে জোর দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের তথ্য অনুযায়ী, খুলনার ২২ শতাংশ, বাগেরহাটে ১৫ শতাংশ এবং সাতক্ষীরার ১৩ শতাংশ মানুষ খাবার পানির সংকটে রয়েছে। সরকারিভাবে এ তথ্য দেওয়া হলেও বাস্তব চিত্র আরও ভয়াবহ। সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক ফারুক আহমেদ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানছে। এতে লবণাক্ততা বেড়ে নষ্ট হচ্ছে মিষ্টি পানির আধার। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় গভীর নলকূপেও পর্যাপ্ত পানি উঠছে না। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে পুকুর খনন করা হলেও সংরক্ষণের অভাবে শুকিয়ে গেছে। ফলে উপকূলে দেখা দিয়েছে সুপেয় খাবার পানির তীব্র সংকট। অপরিচ্ছন্ন ও দূষিত পানি ব্যবহারের ফলে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে উপকূলবাসী।      

পানিবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান অ্যাওসেডর নির্বাহী পরিচালক শামীম আরেফিন বলেন, কৃষিভূমি, জলাভূমি ভরাট করে অবকাঠামো নির্মাণে লবণাক্ততা ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে-সেখানে পুকুর-দিঘি ভরাট করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে অপরিকল্পিতভাবে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের ফলে সংকট বাড়ছে। এক্ষেত্রে পানি সুরক্ষা আইন থাকলেও সমন্বয়ের অভাবে পরিস্থিতির দিন দিন অবনতি হচ্ছে।

এদিকে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো যথাযথ দায়িত্ব পালন না করায় পানির জন্য অপরিসীম কষ্টে ভুগছেন নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ। পরিবর্তন খুলনার নির্বাহী পরিচালক নাজমুল হাসান ডেভিড বলেন, শহরের বস্তিবাসীদের ‘হোল্ডিং নম্বর’ বা ‘পানি সংরক্ষণ ট্যাংক’ না থাকলে সেখানে ওয়াসার সংযোগ দেওয়া হয় না। বস্তিবাসীদের তো নিজেদেরই ঠিকানা নেই? তারা পানি সংরক্ষণ ট্যাংক কোথায় পাবে? এ ক্ষেত্রে ওয়াসার নীতিমালা পরিবর্তন করা জরুরি।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর