শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১৮ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শঙ্কায় চট্টগ্রাম

ঝুঁকিপূর্ণ ১৭ পাহাড়, বেহাল ২১ খালে প্রবাহে বাধা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

ঘূর্ণিঝড় মোখার তা ব তেমন ছিল না চট্টগ্রামে। তবে বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগের শঙ্কা ভর করে সব সময়। অতিবর্ষণের কারণে চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা, পাহাড়ধস ও দেয়ালধসের আশঙ্কা থাকে। সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটুপানি হয়ে যায় নগরের অনেক নিম্নাঞ্চলে। তবে মোখার সম্ভাব্য ক্ষতি ঠেকাতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসকারীদের অন্যত্র সরিয়ে ফেলে। কিন্তু জলাবদ্ধতার শঙ্কা থেকেই যায়। পতেঙ্গার আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুরে মুষলধারে বৃষ্টি হয়। আবহাওয়া অফিস বিকাল ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত ১২ মিলিমিটার এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে। আজ ভারী অথবা হালকা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির আশঙ্কা আছে। সামান্য বৃষ্টিতেই নগরের কাপাসগোলা, প্রবর্তক মোড়, মুরাদপুর, হালিশহর, চান্দগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে যায়। কাপাসগোলার বাসিন্দা হামিদ হোছাইন বলেন, ‘বৃষ্টি হলেই পানি জমে। এটি অন্তত গত এক দশকের রুটিন। জানি না কখন এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাব।’ চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে আগেই ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসকারীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আকবর শাহ থানার ফয়’স লেক সংলগ্ন ঝিল এলাকা থেকে দেড় শতাধিক পরিবার এবং মতিঝর্ণা-বাটালি হিল এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে ১০০ পরিবারকে অপসারণ করা হয়েছে। পাহাড়ধসে যেন আর কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে আমরা সচেতন। তা ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ দেওয়া হচ্ছে না। জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরে সরকারি-বেসরকারি অতিঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় আছে ১৭টি। এসব পাহাড়ের পাদদেশই বাস করে ১ হাজার ২৩৫টি পরিবার। ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের মধ্যে আছে বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিঙ্ক রোড সংলগ্ন পাহাড়, ফয়’স লেক আবাসিক এলাকা সংলগ্ন পাহাড়, রেলওয়ের মালিকানাধীন পাহাড়, আকবর শাহ আবাসিক এলাকা সংলগ্ন পাহাড়, লেকসিটি আবাসিক এলাকা সংলগ্ন পাহাড়, পূর্ব ফিরোজ শাহ ১ নম্বর ঝিল সংলগ্ন পাহাড়, মধুশাহ পাহাড়, পলিটেকনিক কলেজ সংলগ্ন পাহাড়, কৈবল্যধামস্থ বিশ্ব কলোনির পাহাড়, এ কে খান অ্যান্ড কোং পাহাড়, হারুন খান পাহাড়, ফরেস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট সংলগ্ন পাহাড়, মতিঝর্ণা ও বাটালিহিল সংলগ্ন পাহাড়, লালখান বাজার মাদরাসা সংলগ্ন পাহাড়, এম আর সিদ্দিকীর পরিবার পাহাড়, মিয়ার পাহাড়, ভেড়া ফকিরের পাহাড় ও আমিন কলোনি সংলগ্ন ট্যাংকির পাহাড়।

অন্যদিকে নগরে আছে ছোটবড় ৫৭টি খাল। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে ৩৬টি খাল সম্প্রসারণ-উন্নয়ন করা হচ্ছে। ৩৬টি খাল খননসহ জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজ ৭৭ শতাংশ শেষ হওয়ায় এবার তা সহনীয় পর্যায়ে থাকার কথা বলছে চউক। কিন্তু বাকি ২১টি খাল তিন বছর ধরে সংস্কার ও পরিষ্কার করা হচ্ছে না। এর মধ্যে অধিকাংশ খাল দিয়েই পানি প্রবাহিত হতে পারছে না। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই জমে যায় পানি, তৈরি হয় জলাবদ্ধতা।

চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ২১টি খালের ভূমিকা আছে। তাই এসব খাল নিয়ে পৃথক একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর