মঙ্গলবার, ২৩ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভয়ংকর রাতের খুলনা

দ্বন্দ্ব, মাদক ব্যবসা, চুরি-ছিনতাই বাড়ছে

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

খুলনায় আবারও অপরাধ তৎপরতা বেড়েছে। আধিপত্য দ্বন্দ্ব, মাদক ব্যবসা, চুরি-ছিনতাই ও রাতে অপরাধীদের পদচারণা বেড়েছে। তবে এসব ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন উল্লেখ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তৎপরতার কথা বলছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। জানা যায়, ১৯ মে রাতে নগরীর রায়ের মহল এলাকায় মোটরসাইকেলে এসে শাওন নামে যুবককে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। আহত অবস্থায় শাওনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আধিপত্য বিস্তার দ্বন্দ্বে এ ঘটনা ঘটেছে। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ১২টার দিকে খুলনায় বন্ধ থাকা দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরির মধ্যে স্বপন ব্যাপারী (৩০)কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকান্ডে  জড়িত দুজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। ৩ এপ্রিল লবণচরার ডেসটিনির পরিত্যক্ত মাঠ থেকে রাফি ইসলাম নামে এক ইজিবাইক চালকের লাশ উদ্ধার হয়। হত্যায় জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মেট্রোপলিটন উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) তাজুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতারকৃত পাঁচজন ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। রাত হলেই তারা ইজিবাইক ছিনতাইয়ের জন্য রাস্তায় বের হতো। ফাঁকা স্থান পেয়ে চালককে হত্যা করে ইজিবাইক ছিনিয়ে নিত। এদিকে সর্বশেষ গতকাল রাতে শেখপাড়া ১০৪/১ হাজী ইসমাইল রোডের চারতলা বাড়ির দোতলার জানালা থেকে মোবাইল চুরি হয়। এর আগে একই স্থানে পরপর দুই বাড়িতে বৈদ্যুতিক পোস্ট থেকে মিটারের সংযোগ পর্যন্ত বিদ্যুতের সার্ভিস তার কেটে নিয়ে যায় চক্রটি। রাতের বেলায় বিভিন্ন স্থানে অপরাধীদের আনাগোনায় আতঙ্ক বাড়ছে নগরবাসীর।  মানবাধিকার কর্মী অ্যাড. মোমিনুল ইসলাম বলেন, অনেক ক্ষেত্রে পুলিশের তৎপরতা ও মনিটরিংয়ের অভাবে অপরাধ প্রবণতা বাড়তে থাকে। মাদক বেচাকেনাকে কেন্দ্র করে পাড়া-মহল্লায় বখাটের আড্ডা বেড়েছে। এরাই রাতে চুরি-ছিনতাই ও হত্যার মতো ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া অপরাধ করেও শাস্তি না পাওয়ায় অপরাধীরা আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে। জানা যায়, গত এপ্রিল মাসে খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন থানায় ১২৮টি মামলা ও জেলার থানাগুলোতে ১৮৩টি মামলা রেকর্ড হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মামলাই মাদক সংক্রান্ত। লবণচরা থানার ওসি মো. এনামুল হক বলেন, লবণচরায় চালক রাফি ইসলামকে হত্যার পর তার ইজিবাইকের পার্টস বটিয়াঘাটায় ও ব্যাটারি নগরীর ডালমিলে বিক্রি করা হয়। আসামিদের স্বীকারোক্তিতে সেগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ নগরীর শেখপাড়া লোহাপট্টি থেকে লোহার গ্রিলসহ চোরাই মালামাল উদ্ধার করে।

ভুক্তভোগীরা জানান, চোরাই মালামাল ইচ্ছামতো বিক্রির সুযোগ থাকায় অপরাধীরা বারবার একই ধরনের কাজ করছে। এসব মালামাল যেসব জায়গায় কেনাবেচা হয় তাদেরও আইনের আওতায় আনা হলে অপরাধ প্রবণতা কমবে। 

অপরাধ তৎপরতা নিয়ন্ত্রণে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটি সভায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান জানান, সাধারণ জনগণ ও পুলিশ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে সমাজে অপরাধ সংঘটনের পরিমাণ কমে আসবে। হাট-বাজারে রাতে চুরি প্রতিরোধে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন ও নৈশ প্রহরীর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে পুলিশের তদারকি বৃদ্ধির কথা জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর