প্রায় ৫০ কোটি টাকা স্টোর রেন্ট ফাঁকি দিতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের স্বাক্ষর জাল করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আমদানি করা মূল্যবান যন্ত্রপাতি খালাসের হোতা তৌহিদুল ইসলাম শুভকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল রাজধানীর সোবহানবাগ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, তৌহিদুল ইসলাম নিজেকে সামরিক বাহিনীর মেজর পরিচয় দিতেন। তার কাছ থেকে সামরিক পোশাক ও মেজর পদের ভুয়া পরিচয়পত্র, অনেকগুলো মেজর পদের ভিজিটিং কার্ড, ৮টি মোবাইল ফোন, ১০টি সিম কার্ড, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই এবং ১টি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়। সিআইডি জানায়, বসুন্ধরা মাল্টি স্টিল কোম্পানি লিমিটেড মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে কারখানা স্থাপনের জন্য বিভিন্ন সময় প্রায় ১৩৯টি কনটেইনারে মূল্যবান যন্ত্রপাতি আমদানি করে। কিন্তু যথাসময়ে খালাস না হওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে কোম্পানির প্রায় ৯২ কোটি টাকা স্টোর রেন্ট বকেয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্টোর রেন্ট মওকুফের জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করে কোম্পানি। বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে বিবেচনাধীন থাকাকালীন প্রতারক তৌহিদুল ইসলাম এবং আবু হানিফা ওরফে হানাফি ওরফে আমিনুল ইসলাম ওরফে আমিন স্টোর রেন্ট মওকুফপত্র সরবরাহ করে। এরপর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে যথা নিয়মে ওইসব যন্ত্রপাতি খালাসের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বিষয়টি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে অবহিত করলে স্টোর রেন্ট মওকুফ পত্রটি জাল বলে জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মামলা হলে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষণ করে তৌহিদুল ইসলাম শুভকে গতকাল ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট থানায় প্রতারণার ২টি এবং রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় প্রতারণার আরও ২টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে গোয়ালন্দ থানায় ১টি মামলার সাজাসহ মোট ৪টি ওয়ারেন্ট থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এর আগে বিভিন্ন সময়ে আবু হানিফা ওরফে হানাফি, আমিনুল ইসলাম আমিন এবং রনি রাজ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদ্ঘাটন, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।