রংপুরের তারাগঞ্জে রূপলাল দাস ও প্রদীপ লালকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজনের রিমান্ড আবেদন শুনানি হয়নি। এ ঘটনায় নতুন করে কেউ গ্রেপ্তারও হয়নি। রূপলাল ও প্রদীপকে যখন পিটিয়ে হত্যা করা হয় সেসময় চারজন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। কিন্তু মব সৃষ্টির সময় সেখানে ৩ থেকে ৪ হাজার লোক ছিলেন। এ কারণে পুলিশ কাছে ভিড়তে পারেনি। কিছুক্ষণ পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু ততক্ষণে রূপলাল লাশ হয়ে গেছেন। প্রদীপকে হাসপাতালে নেওয়ার পরে তিনিও মারা যান। এই মৃত্যুর দায় কার-এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে। এ ঘটনায় রূপলালের স্ত্রী মালতি অজ্ঞাত ৫-৭ শ জনকে আসামি করে মামলা করলে পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন-উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের বারাপুর গ্রামের এবাদত হোসেন (২৭) ও আক্তারুল ইসলাম (৪৫), বুড়িরহাট চাল্লিয়ারপাড় গ্রামের রফিকুল ইসলাম ওরফে ডিম রবি (৩৩), কুর্শা ইউনিয়নের পশ্চিম রহিমাপুর খানসাহেব পাড়া গ্রামের মিজানুর রহমান ওরফে ডেঙ্গুু (২২)। ওই মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ৭০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
তারাগঞ্জ থানার ওসি এম এ ফারুক জানান, গ্রেপ্তার চারজনের রিমান্ডের আবেদন এখনো শুনানি হয়নি। ঘটনার সময় পুলিশ ওই স্থানে ছিল কি নাথ-এ প্রসঙ্গে ওসি বলেন, ঘটনার সময় চারজন পুলিশ গিয়েছিল।
কিন্তু মব সৃষ্টিকারীদের সংথ্যা ছিল ৩ থেকে ৪ হাজার। পরে সেনাবাহিনীসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে যান। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ হয়ে গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রূপলাল দাস ও প্রদীপ লালকে যেখানে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সেই এলাকায় আগে আট দিনে তিনটি চুরি-ডাকাতি ও এক শিশুকে গলা কেটে হত্যা করে ভ্যান ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ফলে মানুষজন চোর-ডাকাতের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। ৩ আগস্ট থেকে চোর ধরতে এলাকাবাসী রাত জেগে পাহারা দেওয়া শুরু করেন।
নিহত রূপলালের ছেলে জয় দাস বলেন, শনিবার রাত ৯টার দিকে তারাগঞ্জ-কাজীরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় পৌঁছলে কয়েকজন রূপলাল দাস ও প্রদীপ লালকে তাদের আটক করেন। একপর্যায়ে প্রদীপ লালের ভ্যানে থাকা বস্তা থেকে কয়েকটি প্লাস্টিকের ছোট বোতল বের করেন তারা। এ সময় স্থানীয় লোকজন জড়ো হলে রূপলাল ও প্রদীপ লালকে চোর সন্দেহে মারধর শুরু করে। মারতে মারতে তাদের বুড়িরহাট উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে নেওয়া হয়।
বুড়িরহাট বাজারের সবজি বিক্রেতা খোকন মিয়া বলেন, তখন আমার দোকান খোলা। চারদিক থেকে লোকজন দৌড়াচ্ছে। শুনলাম চোর ধরা পড়ছে। এর কিছুক্ষণ পর দুটি পুলিশের গাড়ি আসে। কিন্তু অনেক লোক দেখে তারা ফেরত যান।