রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা দপ্তর ছাড়াও সরকারি মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংকট চলছে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার আটটি পদের চারটিই শূন্য। বিদ্যালয় পরিদর্শকের চারটি পদের একটিতেও কর্মকর্তা নেই।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের ৬৭ পদের ৩০টিই ফাঁকা। সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার ৬৭ পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র আটজন। বাকি ৫৯টি পদ শূন্য। আর জেলা-উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ স্কুলগুলোর ২৪০ প্রধান ও সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষা কর্মকর্তার ২৪০ পদের মধ্যে ১৫৮টি শূন্য রয়েছে। জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসগুলোর ১৫৮ কর্মকর্তা পদের মধ্যে ১০০টিই শূন্য। এদিকে রাজশাহী অঞ্চলের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর ৪৮টি পদের মধ্যে ৩৮টিতেই প্রধান শিক্ষক নেই কয়েক বছর। এ ছাড়া গত সরকারের আমলে জাতীয়করণকৃত মাধ্যমিক স্কুলগুলোর অধিকাংশতেই প্রধান শিক্ষক নেই। সরকারি শিক্ষকদের ভারপ্রাপ্ত করে জোড়াতালি দিয়ে চলছে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষা অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিপুল জনবল সংকটের কারণে রাজশাহী অঞ্চলে সরকারি মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে।
শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহী অঞ্চল (রাজশাহী বিভাগ) মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোর অধিকাংশ শূন্যপদ পূরণ হয়নি তিন যুগের বেশি সময় ধরে। সর্বশেষ ২০০৫ সালে সরকারি কর্ম কমিশনের মাধ্যমে সহকারী জেলা মাধ্যমিক অফিসার ও সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে ৮৬ জন নিয়োগ পেয়েছিলেন।
এর আগে ১৯৯৮ সালে সরকারি কর্ম কমিশনের মাধ্যমে সরাসরি ৫২ জনকে সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এরপর আর কোনো পদে সরাসরি নিয়োগ হয়নি। যারা আগে নিয়োগ পেয়েছিলেন তাদের অধিকাংশই চাকরিজীবন শেষ করে অবসরে গেছেন। দু-একজন যারা এখনো সার্ভিসে আছেন তারাও অবসরের পথে।
রাজশাহী আঞ্চলিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলার পুরাতন সরকারি মাধ্যমিক ৪৮টি স্কুলের মধ্যে ৩৮টিতেই প্রধান শিক্ষক নেই। এসব স্কুলের মধ্যে ৯টি চলছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে। বাকিগুলোতে সহকারী শিক্ষকদের দিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাজ করানো হচ্ছে।
রাজশাহী অঞ্চলের শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবদুর রশিদ বলেন, অনেক বছরই সরাসরি কর্মকর্তা ও সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে কোনো নিয়োগ হয় না। আবার পদোন্নতির মাধ্যমেও শূন্য পদগুলো পূরণ করা হয়নি।