বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক মডেল একটি সেকশনের জন্য কাজ করেছে, সাধারণ মানুষের জন্য নয়। তাই একটি নতুন অর্থনৈতিক ভিশন দরকার। ‘অর্থনীতির গণতন্ত্রীকরণ’-এর মাধ্যমে দেশের প্রতিটি নাগরিকের অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ ও সুফল পাওয়ার সুযোগ থাকতে হবে। ক্ষমতায় গেলে বিএনপি অর্থনীতির নতুন মডেল করবে। গতকাল রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে অর্থনৈতিক সংস্কার শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অর্থনৈতিক এ সম্মেলনের যৌথ আয়োজন করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ভয়েস ফর রিফর্ম, ব্রেইন, ইনোভিশন কনসাল্টিং, ফিনটেক সোসাইটি ও নাগরিক কোয়ালিশন। দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনের প্রথম দিনে চারটি সেশন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম সেশনে ‘বিনিয়োগের বাধা দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার’ শিরোনামে চার্টার্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আসিফ খান, দ্বিতীয় সেশনে ‘নগদহীন অর্থনীতি এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তি’ শিরোনামে জাইতুন বিজনেস সলিউশনের চেয়ারপারসন আরফান আলী, তৃতীয় সেশনে ‘রপ্তানি বাজারে বৈচিত্র্য আনা’ শিরোনামে পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। চতুর্থ সেশন ছিল ‘সবুজ বিপ্লবের জন্য কৃষিক্ষেত্রের রূপান্তর’ শিরোনামে।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ক্ষমতায় গেলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বিলুপ্ত করা হবে। এ বিভাগ তৈরি করা হয়েছে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে। এর উদ্দেশ্য ছিল এমডি নিয়োগ ও পর্ষদে পছন্দের লোক বসিয়ে লুটপাট করা। বিএনপি ক্ষমতায় এসে এটি তুলে দিয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা এটি আবার ফিরিয়ে এনেছিলেন। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আবার এটি বিলুপ্ত করবে।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংককে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। ওয়াচ ডগ হিসেবে কাজ করতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। রাজনৈতিক দল সরকার চালায় না সরকার চালায় প্রতিষ্ঠান। মানুষের জন্য সরকার চালাতে চাইলে প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাধীন করতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপি প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করেনি, তাই ব্যাংক শেয়ারবাজারে লুটপাট হয়নি।
প্রথম সেশনের প্যানেল আলোচনায় জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম তামিম বলেন, ‘আমরা বর্তমানে তীব্র জ্বালানিসংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। গত ১৫ বছরে নিজস্ব জ্বালানি উৎস কাজে লাগাতে বিনিয়োগ হয়নি, বরং বিনিয়োগ হয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র স্থাপনে। এখানেই সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির সুযোগ ছিল।’ মাসরুর রিয়াজ বলেন, দেশে জাতীয় বিনিয়োগ নীতি নেই। ফলে বিদেশি ও স্থানীয় বিনিয়োগের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য ও পরিকল্পনা নেই।