রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশনে বসা পাঁচ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় দুজনকে গতকাল সকালে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব এসে তাদের খোঁজ নেন এবং দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন। এর আগে রবিবার বিকাল ৩টা থেকে অনশন শুরু করেন তারা। এ ছাড়া বিভাগের ৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী এসে প্রশাসন ভবনের ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। অনশনরত শিক্ষার্থীরা হলেন- সুমন আলী, ইকরা ও হুমাইরা, ইমন ও সাদিক।রাইসুল মাহমুদ বলেন, আমাদের এক দফা- বহিরাগত সভাপতির অপসারণ। আমরা চাই, বিভাগের সভাপতি হবেন আমাদেরই বিভাগ থেকে। আমরা রবিবার প্রশাসনের সঙ্গে বসেছিলাম, কিন্তু তারা বহিরাগত সভাপতিকে বহাল রাখতে চায়। তাই আমরা অনশনে বসেছি। যতক্ষণ না পর্যন্ত তাকে অপসারণ করা হবে ততক্ষণ অনশন চলবে।
প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে উপাচার্য বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি। শিগগিরই বিষয়টির সুরাহা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এনামুল হক গত জুলাইয়ে চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০২৩ সালের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে শুধু চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরাই শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাবেন। কিন্তু বর্তমান সভাপতি নিয়োগ পাওয়ার পর নতুন বিজ্ঞপ্তিতে তার নিজ বিভাগ মনোবিজ্ঞানকেও সংযুক্ত করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন। গত মঙ্গলবার বৈষম্যমূলক শিক্ষক নিয়োগ সংশোধনসহ তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি মেনে না নেওয়ায় গত বুধবার অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা দেন তারা। এর অংশ হিসেবে তারা ‘রক্ত ব্যানার’ লেখা, সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
পরে বৃহস্পতিবার তারা তিন দফা থেকে সরে এসে বিভাগের সভাপতির পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন।
যে তিন দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছিলেন সেগুলো হলো- বৈষম্যমূলক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সংশোধন, ইন্টার্নশিপ ভাতা চালু ও বিসিএস পরীক্ষায় চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানকে টেকনিক্যাল ক্যাডার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা।